নিজস্ব প্রতিবেদক
অবৈধ ইজিবাইক নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খাচ্ছে খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) ও ট্রাফিক বিভাগ। প্রতিদিন নগরীতে ৩০ হাজারের বেশি ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক চলাচল করছে। অথচ কেসিসি অনুমোদিত ইজিবাইকের সংখ্যা ১০ হাজার। মূলত লাইসেন্স জাল করে প্রতিনিয়ত নগরীতে অবৈধ ইজিবাইক চলাচল করছে। ফলে বাড়ছে যানজট। পাশাপাশি অদক্ষ চালকের কারণে ঘটছে দুর্ঘটনা। রোববার থেকে নগরীর ৫টি পয়েন্টে অবৈধ যানবাহন নিয়ন্ত্রণে সপ্তাহব্যাপী বিশেষ অভিযান শুরু করেছে ট্রাফিক বিভাগ। অন্যদিকে কেসিসির লাইসেন্স জাল প্রতিরোধে নেওয়া হচ্ছে ডিজিটাল উদ্যোগ।
ট্রাফিক অফিস সূত্র জানায়, নগরীতে পাঁচটি পয়েন্টে বিশেষ অভিযান শুরু হয়েছে। নিয়মিত অভিযানের পাশাপাশি দৌলতপুর, গল্লামারী, শিববাড়ি, সোনাডাঙ্গা ও ময়লাপোতা এলাকায় অবৈধ ইজিবাইকসহ অন্যান্য যানবাহন আটক শুরু হয়েছে। প্রতিদিনই অবৈধ যানবাহন আটক ও জরিমানা করা হচ্ছে। আটক যানবাহনগুলোর লাইসেন্স নেই এবং বেশিরভাগই নগরীর বাইরে থেকে এসে যানজট সৃষ্টি করছে। এদিকে কেসিসির উদ্যোগে অনুমোদিত ইজিবাইকের জন্য কিইউআর কোডসহ ডিজিটাল নম্বর প্লেট এবং লাইসেন্স সঠিক কিনা সেটা যাচাইয়ে আরএফআইডি (রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি আইডেন্টিফিকেশন) কার্ড দেয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বুধবার থেকে ইজিবাইকের লাইসেন্স নবায়ন শুরু হচ্ছে। ডিসেম্বর থেকে ইজিবাইকে ডিজিটাল নম্বর প্লেট দেওয়া হবে। পাশাপাশি ইজিবাইক ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম অ্যাপের মাধ্যমে এর তথ্য যাচাই করতে পারবে ট্রাফিক পুলিশ। পুলিশের পাশাপাশি নগরীর চারটি পয়েন্টে কেসিসির কর্মকর্তারা আরএফআইডির মাধ্যমে ভুয়া লাইসেন্স শনাক্ত করতে পারবে।
জানা যায়, নগরবাসীর সুবিধার কথা বিবেচনা করে ২০১৯ সালের ২১ জানুয়ারি ব্যাটারিচালিত ইজিবাইকের লাইসেন্সের অনুমোদন দেয় কেসিসি। লাইসেন্সের আবেদন ফরমের জন্য ৫শ টাকাসহ ১০ হাজার করে টাকা নেওয়া হয়। যার পরিপ্রেক্ষিতে যাত্রীবাহী ৮ হাজার এবং পণ্যবাহী ২ হাজার ইজিবাইকের লাইসেন্স দেওয়া হয়। প্রত্যেক ইজিবাইকের অনুমোদনস্বরূপ স্টিকার দেওয়া হলেও পরবর্তীতে সেগুলো জাল করে নগরীতে ইজিবাইক চলাচল শুরু করে। কেসিসি ও ট্রাফিক পুলিশ যৌথভাবে অভিযান চালিয়েও ভুয়া লাইসেন্স শনাক্ত করতে পারেনি। যার কারণে নগরীতে অনুমোদনের তুলনায় তিনগুণ ইজিবাইক চলাচল করছে। এতে দুর্ঘটনার পাশাপাশি বেড়েছে যানজট। যা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে।
এদিকে ইজিবাইক চালকদের নির্দিষ্ট কোনো পরিচয়পত্র না থাকায় বাড়ছে অপরাধ প্রবণতা। ইজিবাইক ছিনতাইসহ খুনের ঘটনাও ঘটছে খুলনায়। এ অবস্থায় দক্ষ ইজিবাইক চালকদের পরিচয়পত্র প্রদান নগরবাসীর দাবি।
কেসিসির জ্যেষ্ঠ লাইসেন্স কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান রহিম জানান, ইজিবাইক নিয়ন্ত্রণে ডিসেম্বরের মধ্যেই ডিজিটাল ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। কিইউআর কোড এবং আরএফআইডি বাস্তবায়ন করতে পারলে ভুয়া লাইসেন্সে ইজিবাইক চালানো বন্ধ হবে। এছাড়া চালকদের পরিচয়পত্র প্রদান এবং প্রশিক্ষণের জন্য উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
খুলনা ট্রাফিক পুলিশের ডিসি আবুল বাশার মোঃ আতিকুর রহমান জানান, সপ্তাহব্যাপী ৫টি পয়েন্টে অবৈধ যানবাহন আটকে অভিযান চলছে। কেসিসির কিউআর কোড সিস্টেম চালু হলে ভুয়া লাইসেন্স নিয়ে কেউ ইজিবাইক চালাতে পারবে না। যানজটও নিয়ন্ত্রিত হবে।