পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় দরিদ্র রেহানার বসবাস। ছয়ত্রিশ বছর আগে ঢাকা সায়দাবাদ এলাকায় ট্রাক এক্সিডেন্ট করে তার স্বামী মারা যাবার পর বর্তমানে এক ছেলে, নাতি ও ছেলে বউ নিয়ে বসবাস করছেন কলোনিতে। ভার বহন করে চলে বিধবা রেহানা বেগমের সংসার। জরাজীর্ণ একটি ভ্যানে ছয়টি কলসে পানি ভরে দোকানে দোকানে কখনো বাসাবাড়িতে খাবার পানি বা কারো প্রয়োজন মতো পুকুরের পানি সরবরাহ করে থাকেন বিধবা রেহানা বেগম। প্রতি কলস টিউবওয়েলের পানি পাঁচ টাকা ও পুকুরের পানি দশ টাকা করে বিক্রি করেন রেহেনা বেগম। এতে দিনে দেড়শত থেকে দুইশত টাকা আয় হয় তার। শারীরিক অসুস্থতার কারনে প্রায়ই দিন পানি দেয়া বন্ধ থাকে তার।
কলাপাড়া টিয়াখালী ইউনিয়নের নাচনাপাড়া বঙ্গবন্ধু কলোনিতে বসবাস করা রেহানা বেগম জানান, কলোনিতে জরাজীর্ণ একটি ঘরে বসবাস করছি। বর্ষায় ঘরে পানি পরে কোন রকমে ঘরে থাকি। শারীরিক অসুস্থতা ও বয়সের কারনে এখন সবসময় পানি দিতে পারিনা। ভ্যানটি পুরনো ও প্রায়ই নষ্ট হয়ে যাবার কারনে পানি দেয়া বন্ধ থাকে। যখন পানি দিতে পারি তখন আয় রোজগার হয়। পেটে টিউমারের অপারেশন করার পর সবসময় চলাফেরা করতে পারিনা। বাম চোখের সমস্যার কারনে রাতে ভালো দেখিনা তাই রাতে পানি দেওয়া প্রায়ই বন্ধ রাখি।
ব্যবসায়ী ইসমাইল হাওলাদার বলেন, আমার দোকানে রেহেনা সবসময় পানি দিয়ে থাকে মাঝে মাঝে যখন পানি দিতে না পারে, তখন পানি আনতে কষ্ট হয়।
রেজাউল ইসলাম বলেন, দশ টাকা করে প্রতিদিন চার কলস পানি কিনি রেহানার কাছ থেকে। তিনি পানি দেয়ার কারনে বাড়তি লোকের প্রয়োজন হয় না।
নাগরিক উদ্যোগ কলাপাড়া এর আহবায়ক নাসির তালুকদার বলেন, যেহেতু সে একজন শ্রমজীবী মানুষ তার পাশে আমাদের দাঁড়ানো দরকার। সমাজের বিত্তবান মানুষ যারা আছেন তারা তার পাশে দাঁড়ালে শ্রমজীবী এ মানুষটি সমাজে টিকে থাকতে পারবে।
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) এর কলাপাড়া উপজেলা সভাপতি শামসুল আলম বলেন, সরকার প্রদত্ত কোন আর্থিক সুযোগ সুবিধা থেকে তিনি বঞ্চিত হলে এটা আমাদের কাছে আসলে আমরা এটি দেখবো।
কলাপাড়া সম্মিলিত নাগরিক অধিকার জোট এর সভাপতি সৈয়দ রেজাউল করিম বলেন, জীবনের সাথে যুদ্ধ করা রেহানার আর্থিক স্বচ্ছলতা ফেরাতে মানবিক ও বৃত্তশালীদের প্রতি আহ্বান জানান।