মো: খালেকুল ইসলাম
সাম্প্রতিক সময়ে দেশব্যাপী আইনশৃঙ্খলার অবনতি ও অপরাধের বৃদ্ধির কারণে সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ও নিরাপত্তাহীনতা ছড়িয়ে পড়েছে। ছিনতাই, ডাকাতি, গুলি, হামলা এবং ধর্ষণের মতো জঘন্য অপরাধ বেড়ে যাওয়ায় জনগণের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির দাবিতে সৈয়দপুরে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
বিক্ষোভে শিক্ষার্থীদের ক্ষোভপূর্ণ বক্তব্য
সৈয়দপুর পাইলট স্কুল অ্যান্ড কলেজের এক শিক্ষার্থী বলেন, “আমরা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ছেলেমেয়ে একসাথে আন্দোলন করেছি, কিন্তু নারীরা কেন ধর্ষণ ও নির্যাতনের শিকার হবে? ধর্ষকদের জনসমক্ষে ফাঁসির আইন চালু করতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে কেউ ধর্ষণ বা ইভটিজিং করতে সাহস না পায়।”
রংপুর মডেল কলেজের এক শিক্ষার্থী বলেন, “আমাদের সৈয়দপুরেও প্রতিনিয়ত ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে, কিন্তু প্রশাসনের কার্যকরী পদক্ষেপ চোখে পড়ছে না। অনেক সময় ধর্ষকেরা প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিদের মাধ্যমে মামলা মীমাংসা করে ফেলে, যা বিচার প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করছে।”
সৈয়দপুর পাইলট স্কুল অ্যান্ড কলেজের আরও এক শিক্ষার্থী বলেন, “ধর্ষকদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা না থাকার কারণে অপরাধীরা বারবার এসব ঘটনা ঘটাচ্ছে। আমরা পাঁচ মাথা পুলিশ বক্সের সামনে অবস্থান নিয়েছি। যদি কোনো ধর্ষকের সাহস থাকে, তাহলে এখানে এসে নিজেদের শক্তি দেখাক।”
এক শিক্ষার্থী আরও বলেন, “প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানাই, ধর্ষকদের একটি আবদ্ধ কক্ষে আটকে কিছু অস্ত্রসহ কিছু তরুণী ছেড়ে দিন। আমরা দেখিয়ে দেব, এদের শাস্তি কীভাবে দিতে হয়।”
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দাবি
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সৈয়দপুর শাখার সমন্বয়ক শাকিল চৌধুরী বলেন, “১৯৭২ সালের সংবিধান বাতিল করে নতুন সংবিধান প্রণয়ন করতে হবে। শেখ হাসিনার ৫ আগস্ট ভারতে পালানোর মধ্য দিয়ে সেই সংবিধানের কবর রচিত হয়েছে। এখন নতুন সংবিধান প্রণয়ন করে ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিত করতে হবে।”
সংগঠনের আরেক সমন্বয়ক বলেন, “সৈয়দপুরে যদি এমন কোনো ঘটনা ঘটে, তাহলে আমরা এক ঘণ্টার মধ্যে থানা ঘেরাও করব। প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানাই, ইভটিজার ও ধর্ষকদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নিন, যাতে ভবিষ্যতে কেউ এ ধরনের অপরাধ করতে সাহস না পায়।”
বিক্ষোভ শেষে সংগঠনটির পক্ষ থেকে প্রশাসনের কাছে ধর্ষণের কঠোর শাস্তির দাবিতে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। আন্দোলনকারীরা জানান, যদি দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তাহলে আরও বড় আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে।