
মাহমুদুল হাসান চট্টগ্রাম বিভাগীয় ব্যুরো প্রধানঃ
আজ (০৬/০৯/২৫) উপমহাদেশের বিখ্যাত সংগীতজ্ঞ সুর সম্রাট আলাউদ্দিন খাঁর ৫৩ তম মৃত্যুবার্ষিকী। উপমহাদেশের দ্রৌপদী সংগীতের আলাউদ্দিন ঘরনার স্রষ্টা, সর্ব বাদ্যযন্ত্র বিশারদ আলাউদ্দিন খাঁ সাবেক ত্রিপুরা জেলার (বর্তমান ব্রাহ্মণবাড়িয়া) নবীনগর উপজেলার শিবপুর গ্রামে ০৮ অক্টোবর ১৮৬২ সালে জন্ম গ্রহণ করেন।
মৃত্যু : ০৬ সেপ্টেম্বর ১৯৭২ খ্রি. (মাইহার, ভারত)। তাঁর পিতার নাম- সাবদর হোসেন খাঁ ওরফে সদু খাঁ। মাতার নাম- সুন্দরী বেগম।
পাঁচ ভাইয়ের মধ্যে তিনি তৃতীয়, দুই বোন
স্ত্রীর নাম- মদনী বিবি, এক পুত্র (আলী আকবর, দুই কন্যা (সরিজা ও রৌশন আরা /অন্নপূর্ণা)।
সংগীতের প্রতি প্রগাঢ় নেশায় পাঠশালার চার দেয়ালের বাঁধন তার নিকট অসহ্য লাগত। তাই মায়ের অসুখের সুযোগে ১২ টাকা নিয়ে ০৮ বছর বয়সে গভীর রাতে কলকাতার উদ্দেশ্যে বাড়ি ছাড়েন।
তিনি মনমোহন দেব নাম ধারণ করে ওস্তাদ নুলো বাবুর নিকট যন্ত্র সঙ্গীত চর্চা শুরু করেন। সংগীত সাধনার নেশায় বাসর রাতে স্ত্রীকে রেখে দ্বিতীয়বারের মত পালিয়ে কলকাতায় আসেন।
হজ্ব করতে গিয়ে বাকী জীবন মক্কায় থাকার উদ্দেশ্যে পালিয়ে থাকার চেষ্টা করেন। সৌদি সরকারের সহায়তায় ভারত সরকার তাঁকে ফিরিয়ে আনেন। উস্তাদ ওয়াজির খাঁ-র নিকট বীণা শিক্ষার মাধ্যমে তাঁর ৩৩ বছরের সংগীত শিক্ষা জীবনের সমাপ্তি ঘটে। তিনি ১৯৫৪ সালের শেষ বারের মত তার জন্মস্থান শিবপুরে আসেন।
কর্মযজ্ঞ
তিনিই প্রথম রাগ সংগীতকে রাজ দরবার থেকে সর্বত্র ছড়িয়ে দিয়ে গণমুখী করে তোলেন। জীবনের প্রথম প্রতিযোগিতা কলকাতায় “সর্ব ভারতীয় সংগীতা-নুষ্ঠানে” স্বর্ণ পদকে ভূষিত হন। ১৯৩৬ সালে বিশ্ব ভ্রমণে বের হলে লন্ডনের অনুষ্ঠানের তার কর্মযজ্ঞে মুগ্ধ হয়ে বৃটেনের রানী “সুর সম্রাট” উপাধী প্রদান করেন।
মায়ের একান্ত ইচ্ছায় শিবপুরে পুকুর খননসহ পাকা মসজিদ নির্মাণ করেন। তিনি ভারতের কেন্দ্রীয় শিক্ষা কমিশনের প্রভাবশালী সদস্য ছিলেন। তার সৃষ্ট উল্লেখযোগ্য রাগ গুলো হল- মদিনা মঞ্জুরী, শোভাবতী, ধবলশ্রী,ভুবেনশ্বর, দুর্গেশ্বরী, হেমন্ত, উমাবতী, প্রভাবতী, হেম বেহাগ, নাগার্জুন ইত্যাদি।
তিনি রাষ্ট্রীয় বিরল সম্মান সূচক পদ্মভূষণ, পদ্মবিভূষণ, দেশীকোত্তম, ডক্টর ডিগ্রি, ফেলোশীপসহ উল্লেখযোগ্য সম্মানে ভূষিত হন।