অন্যান্য

ইউপি চেয়ারম্যান-সদস্য দ্বন্দ্ব ঈদের আগে ভিজিএফ থেকে বঞ্চিত দুই ইউনিয়নের ৮ হাজার মানুষ

  প্রতিনিধি 6 June 2025 , 6:13:12 প্রিন্ট সংস্করণ

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধিঃ ইয়াসিন আরাফাত

চেয়ারম্যান ও সদস্যদের সমন্বয়হীনতার কারণে চাঁপাইনবাবগঞ্জে দুই ইউনিয়নের প্রায় ৮ হাজার মানুষ পেলেন না ভিজিএফের চাল। ঈদের ছুটি শুরুর আগে তারা চাল পাওয়ার আশায় থাকলেও, শেষ পর্যন্ত তা হতাশায় পরিণত হয়েছে। দুস্থ এসব মানুষের পরিবারে ঈদের আনন্দ অনেকটাই ম্লান হতে বসেছে।

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানাগেছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার ১৪ ইউনিয়নের মধ্যে ১২ টিতেই এরই মধ্যে ভিজিএফের চাল বিতরণ করা হয়েছে। কিন্তু ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যদের (মেম্বার) অভ্যন্তরীন দ্বন্দ্ব ও সমন্বয়হীনতার কারণে চাল বিতরণ হয়নি গোবরাতলা ও চরবাগডাঙ্গা ইউনিয়নে। এই দুই ইউনিয়নের প্রায় ৮ হাজার সুবিধাভোগি আছেন, যারা ভিজিএফ চালের উপরই অনেকটা নির্ভরশীল।

গোবরাতলা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ইউসুফ আলী অভিযোগ করেন, ৮ সদস্যকে উপেক্ষা করে চেয়ারম্যান তার ক্ষমতার অপব্যবহার করে একক সিদ্ধান্তে ভিজিএফ সংক্রান্ত কমিটি করেন। ওই কমিটি প্রত্যখ্যান করেছি। শুধু তাই-ই নয়, চেয়ারম্যানের বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমরা জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ দিয়েছি।

ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম টিপু অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন- বিভিন্ন সমস্যার কারণে ঈদের আগে ভিজিএফের চাল বিতরণ যায়নি। তবে ঈদের পরেই দেয়া হবে। তিনি বলেন-সদস্যরা আমাকে কোনো সহযোগিতা করছেন না। তারা তালিকাও দিচ্ছে না। এ বিষয়ে ৩ বার সভা ডাকা হলেও সদস্যরা উপস্থিত হন নি। তাই নতুন তালিকা করে ঈদের পরে চাল দেয়া হবে।

অন্যদিকে চরবাগডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা থাকায় তিনি পরিষদে আসেন না। কিন্তু তার নামেই ভিজিএফের চাল উত্তোলন করার চেষ্টা করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম বলেন, চেয়ারম্যান যে মামলার আসামি হয়ে পরিষদে আসেন না এটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালকসহ সংশ্লিষ্টরা জানেন। কিন্তু এরপরও চেয়ারম্যানের নামে ডিও ইস্যু ও সেই ডিও’র মাধ্যমে চাল উত্তোলনের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু এতে আমরা আপত্তি জানিয়েছি। আমরা বলেছি, যে ১২ জন ইউপি সদস্য আছেন তাদের মধ্যে একজনকে প্যানেল চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব দিয়ে তার মাধ্যমে ভিজিএফের চাল বিতরণ করা হোক। কিন্তু প্যানেল চেয়ারম্যান নির্ধারন নিয়ে ঐক্যমতে পৌছাতে না পারার কারণে চাল উত্তোলন ও বিতরণ করা যায় নি। তিনি আরও বলেন, চেয়ারম্যান যদি স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে চাল উত্তোলন বা বিরতরণ করতে চান তাহলে আমাদের আপত্তি নেই। কিন্তু উপস্থিত না হয়ে তার নামে চাল উত্তোলন করা হবে এটা ঠিক হবে না।

সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শাহিনূর আলম বলেন- সদর উপজেলায় প্রায় ৫৪ হাজার ভিজিএফ কার্ডধারী রয়েছে। ১২টি ইউনিয়নে ইতোমধ্যে বিতরণ চলছে। তবে গোবতরালা চেয়ারম্যানের নেগলেজেন্সির কারণে তালিকা করে উপজেলায় পাঠাতে পারেন নি। কাজেই তিনি চাল তুলতে পারেন নি। এছাড়াও চরবাগডাঙ্গা ইউনিয়ন থেকেও তালিকা পাওয়া যায়নি।

তিনি বলেন, ঈদের পরে পাওয়ার সুযোগ নেই, তবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ হস্তক্ষেপ করলে পেতে পারেন। চেয়ারম্যান ও সদস্যদের মধ্যে সমন্বয় না থাকার কারণে সুবিধাভোগীরা বঞ্চিত হলো।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মো. আব্দুস সামাদ বলেন- চেয়ারম্যানদের ঝামেলার মধ্যে রয়েছেন। এ জন্য চাল বিতরণ করা যায়নি। ঈদের পরে বিতরণ করা হবে।

আরও খবর

                   

জনপ্রিয় সংবাদ