গাইবান্ধা প্রতিনিধি
দীর্ঘ দিনের স্বপ্নের গাইবান্ধার হরিপুর-চিলমারী সংযোগ সড়কে তিস্তা নদীর ওপর নির্মিত বহুল প্রতীক্ষিত ‘মওলানা ভাসানী সেতু’ উদ্বোধনের দ্বিতীয় রাতেই পড়েছে চরম নিরাপত্তাহীনতায়। সেতুর ল্যাম্পপোস্টের বিদ্যুৎ সংযোগের তার চুরি হয়ে যাওয়ায় পুরো সেতুটি অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়। এতে যানবাহন ও পথচারীদের চলাচল এখন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে, আর দুর্ঘটনার আশঙ্কা বেড়েছে কয়েকগুণ।
শুক্রবার (২২ আগস্ট) বেলা ১২টার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গাইবান্ধা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী উজ্জল চৌধুরী।
তিনি বলেন, উদ্বোধনের পরদিন রাতেই দুর্বৃত্তরা ল্যাম্পপোস্টের একাধিক বৈদ্যুতিক তার কেটে নিয়ে গেছে। ফলে সেতুর আলোকসজ্জা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে যায়।
এরআগে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতেই সেতুটি অন্ধকারে ডুবে যায়। অনেক যাত্রী ও স্থানীয়রা লাইট বন্ধ থাকা অবস্থার ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করেন। ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে তার কেটে নেওয়া ল্যাম্পপোস্টগুলোর ছবিও।
দর্শনার্থী, যানবাহনচালক, পথচারী ও স্থানীয়রা জানান, আলো না থাকায় সন্ধ্যার পর থেকে রাতভর সেতুতে চলাচল করতে হচ্ছে অন্ধকারে। এতে ছোট-বড় দুর্ঘটনার শঙ্কা সবসময় থেকে যাচ্ছে।
তাদের দাবি, দ্রুততম সময়ের মধ্যে সেতুর ল্যাম্পপোস্টে নতুন বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে আলো ফিরিয়ে আনা হোক। একই সঙ্গে ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের চুরি বা নাশকতার ঘটনা আর না ঘটে, সে জন্য কার্যকর ও কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি।
এ বিষয়ে এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী উজ্জল চৌধুরী বলেন, খবরটি আমরা রাতেই জানতে পারি। উদ্বোধনের পরদিন কোনো এক সময়ে দুর্বৃত্তরা সেতুর ল্যাম্পপোস্টের বৈদ্যুতিক তার চুরি করেছে। আমরা দুষ্কৃতিকারীদের সনাক্ত করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেব। একই সঙ্গে দ্রুত নতুন করে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার কাজ শুরু হবে।
সুন্দরগঞ্জ থানার ওসি আব্দুল হাকিম আজাদ বলেন,
কর্তৃপক্ষের চুরি সংক্রান্ত অভিযোগ পেলে গুরুত্বের সাথে খতিয়ে দেখে দুর্বৃত্তদের সনাক্ত করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উল্লেখ্য, গত ২০ আগস্ট দুপুর পৌঁনে ১টায় উত্তরাঞ্চলের মানুষের দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে ‘মওলানা ভাসানী সেতু’ উদ্বোধন করেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। উদ্বোধনের পর থেকেই প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ সেতুটি দেখতে ভিড় করছেন। দর্শনার্থীদের প্রত্যাশা, সেতু যেন নিরাপদ ও আলোকোজ্জ্বল পরিবেশে উপভোগ করা যায়।