অন্যান্য

একটা কম্বল দেও বাহে, খুব জাড় নাগোছে মোকঃ

  প্রতিনিধি 11 December 2024 , 2:37:18 প্রিন্ট সংস্করণ

 

আব্দুল লতিফ সরকার,লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ

 

যে কন কনে ঠান্ডাশীত আর বুঝি বাঁচন নাই, এই ঠান্ডাতে এবার বুঝি মরি যাইম। মোক একান কম্বল দেও বাহে। তীব্র শীত আর কনকনে ঠান্ডায় জরোসরো হয়ে কাঁপতে কাঁপতে কথাগুলো বললেন আদিতমারী উপজেলার দক্ষিণ বত্রিশ হাজারী গ্রামের ৮০ ঊর্ধ্ব বৃদ্ধা আবলা বেওয়া। উত্তর জনপদের সীমান্তবর্তী জেলা লালমনিরহাট।হিমালয় পাদদেশের পাঁশে জেলা হওয়ায় প্রতিবছর ঘন কুয়াশা আর ঠান্ডার তীব্রতা অন্যান্য জেলাগুলোর চেয়ে অনেক বেশী থাকে।

এর ফলে খেটে খাওয়া দিনমজুর ভ্যান রিকশা চালক ও সাধারণ মানুষ বিপাকে পড়তে হয়। পৌষের অনাবরত শীতে শুরুর আগেই উত্তরের জনপদে শীতের দাপটে নাকাল জনজীবন।গত কয়েকদিন ধরে শীত পুরোপুরি জেঁকে বসেছে এ জেলায়। প্রতিটি উপজেলায় তাপমাত্রা কমছে আস্তে আস্তে । সকাল হলেই শীতের প্রকোপ থেকে বাঁচতে এলাকার খেঁটে খাওয়া মানুষ বয়স্ক, যুবক,বৃদ্ধা সকলেই খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে।

 

গতকাল মঙ্গলবার (১০) ডিসেম্বর লালমনিরহাট আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানিয়েছেন, আগামী কয়েকদিনের মধ্যে শীতের দাপট আরো বাঁড়বে। লালমনিরহাট জেলা হিমালয়ের অনেকটা কাছাকাছি হওয়ায় তাপমাত্রা হ্রাস পাওয়ার পাশাপাশি ঘন কুয়াশা এবং হিমশীতল বাতাসের প্রবাহ বাড়িয়ে দিচ্ছে শীতের তীব্রতা।

 

 

এদিকে শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ছিন্নমূল মানুষ ও খেটে খাওয়া মানুষের দুর্ভোগের সীমা নেই। আজ সকালে সদর উপজেলার বড়বাড়ীতে কথা হয় অটো রিকশা চালক আশরাফুল ইসলামের সঙ্গে তিনি বলেন, দিনের মধ্যে দুপুরের দিকে যখন হালকা শীত কমে তখন যাত্রী পাওয়া যায়। অটোরিকশাও ভালোভাবে চালানো যায়। কিন্তু সন্ধ্যার পর ও সকালে যাত্রী তেমন পাওয়া যায় না । শীতের কারণে অটোরিকশা ঠিকভাবে চালানো যায় না। ফলে আয় উপার্জন আগের চেয়ে অনেক কম।

 

এদিকে রাতে তাপমাত্রা কম থাকায় বেড়েছে শীতজনিত বিভিন্ন রোগব্যাধি। প্রায় ঘরে ঘরে সর্দি,কাশি ও জ্বর হওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। লালমনিরহাটে সদর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সহ-৪ টি হাসপাতালে বাড়তে শুরু করেছে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা।ঠান্ডা জনিত রোগ সর্দি,কাশি, নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগ হাসপাতালে এসে ভর্তি হচ্ছে রোগীরা। লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের সিভিল সার্জন নির্মলেন্দু রায় জানান কয়েকদিন থেকে শীতজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীদের সংখ্যা বেড়েছে।আমরা রোগীদের সেবা দিতে সব ধরণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

 

লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক এইচ এম রকিব হায়দার বলেন, প্রতি বছর এ জেলায় শীতের দাপট খুবি বেশী থাকে।সে ক্ষেত্রে স্টোক থাকলে আগাম জেলার অসহায় দুঃস্থ শীতার্ত ও ছিন্নমূল গরীবদের শীত বস্ত্র কম্বল দিয়ে থাকি। ইতিমধ্যে জেলার ৫ উপজেলায় ১ হাজার কম্বল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। আমরা কম্বলের চাহিদা চেয়ে দপ্তরে চিঠি লিখেছি। বরাদ্দ পেলে দ্রুত এসকল কর্মজীবি,অসহায গরীব দিনমজুর বয়স্ক বৃদ্ধাদের শীত নিবারণের জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হবে।

Author

আরও খবর

                   

জনপ্রিয় সংবাদ