সংবাদদাতা : দেলোয়ার হোসাইন মাহদী (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি :
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন,
আমরা যদি শুধু নিজেদের স্বার্থের জন্য তর্কে লিপ্ত থাকি, তাহলে সবচেয়ে বেশি লাভবান হবে পালিয়ে যাওয়া স্বৈরাচার। আমরা মাত্রাতিরিক্ত আলোচনা করলে রাষ্ট্র পুনর্গঠন থেকে আমরা পিছিয়ে পড়ব রাষ্ট্র পুনর্গঠন থেকে যদি আমরা পিছিয়ে যাই, তাহলে দেশ এবং দেশের মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) বিকেল পৌনে ৫টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলাধীন আশুগঞ্জ উপজেলার আব্বাস উদ্দিন খাঁন মডেল কলেজ মাঠে অ্যাডভোকেট মো. আব্দুল মান্নান এর সভাপতিত্বে সিরাজুল ইসলাম ও জহিরুল হক খোকন এর যৌথ সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত জেলা বিএনপির সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
দেশকে রক্ষা করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার তাগাদা দিয়ে তিনি বলেন, বিএনপি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় দল, তাই একমাত্র বিএনপিই পারবে জনগণের প্রত্যাশা অনুস্বারে দেশ গড়তে। সে জন্য আপনাদের (দলের নেতাকর্মীদের) জনগণের কাছে সেভাবেই নিজেকে উপস্থাপন করতে হবে। দেশের জনগণ এখন তাকিয়ে আছে আমাদের দিকে। আমরা কিভাবে কী করব, কিভাবে দেশকে সাজাব, সেটা মানুষ আমাদের কাছে জানতে চায়।
তারেক রহমান বলেন, ‘স্বৈরাচার আজ পলাতক তবে স্বৈরাচারের মাথাটা শুধু পালিয়েছে। অবশিষ্ট এখনো রয়ে গেছে। এরা বিভিন্নভাবে মাথাচাড়া দিতে চাচ্ছে।
এরা অবস্থান গোছানোর চেষ্টা করছে। চেষ্টা করছে দেশকে নিজেদের দখলে নিতে। দাবিদাওয়া নিয়ে তারা হাজির হচ্ছে।’
তারেক রহমান তার বক্তব্যে বলেছেন, ‘আগামী দিনে সংসদ কিভাবে পরিচালিত হবে, সংসদের মেয়াদ কত দিন হবে; একজন মানুষ কতবার প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন এমন বিভিন্ন বিষয় আমরা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করতে সক্ষম।
এগুলো নিয়ে আমরা মাত্রাতিরিক্ত আলোচনা করলে রাষ্ট্র পুনর্গঠন থেকে আমরা পিছিয়ে পড়ব। রাষ্ট্র্র পুনর্গঠন থেকে যদি আমরা পিছিয়ে যাই, তাহলে দেশ ও দেশের মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’
তিনি বলেন, ‘বিগত ১৫ বছর জনগণের ভোট দেওয়ার কোনো উপায় ছিল না। জনগণের ভোট দেওয়ার ক্ষমতা অস্ত্রের বলে কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। অস্ত্র দিয়ে আমরা দেখেছি কখনো ডামি নির্বাচন, কখনো আমরা দেখেছি ভোটারবিহীন নির্বাচন। আমরা দেখেছি উন্নয়নের নাম করে লক্ষ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করে নিয়ে গেছে। কোনোরকম জবাবদিহি ছিল না বলেই দেশের প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচনসহ সব ব্যবস্থাকে আবার পুনর্গঠন করতে হবে। রাষ্ট্রকাঠামোর এই পুনর্গঠন প্রক্রিয়া যত দ্রুত শুরু করা যাবে, দেশ তত দ্রুত উন্নতি লাভ করতে পারবে। বিএনপি-ই একমাত্র দেশকে জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী গড়ে তুলতে সক্ষম হবে। আপনারা জানেন, ইতিমধ্যেই আমরা এসব বিষয়ে একটা রূপরেখা দিয়েছি। সেখানে শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ সব বিষয়ে বলা আছে।’
তারেক রহমান বলেন, ‘রাজনৈতিক দল হিসেবে আদর্শ থাকবে কিভাবে দেশের মানুষের ভালো করা যায়। ৭৫ সালে দেশ ভেঙে পড়ার পর মানুষ দুর্ভিক্ষে মারা গিয়েছিল। তখন দেখেছি, জিয়াউর রহমান কিভাবে দায়িত্ব নিয়ে দেশ গড়েছিলেন। স্বৈরাচার পতনের পর দেশ যখন ধ্বংসের দিকে যাচ্ছিল তখন কিভাবে খালেদা জিয়া গড়েছেন।’ গণতন্ত্রের পক্ষে প্রতিটি দলকে ঐক্যবদ্ধ রাখার চেষ্টা করা হবে বলে তারেক রহমান তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন।
উক্ত সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লা বুলু, সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ মো. সেলিম ভূঁইয়া, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মোস্তাক মিয়া। এ ছাড়াও কেন্দ্রীয় অর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক খালেদ হোসেন মাহবুব শ্যামল, কবীর আহমেদ ভুঁইয়া, নির্বাহী কমিটির সদস্য শেখ শামিম সহ কেন্দ্রীয়, জেলা ও উপজেলা বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতা এতে বক্তব্য দেন।