মোঃ সফিকুল ইসলাম:
কুড়িগ্রাম জেলার কচাকাটা থানার ঐতিহ্যবাহী মাদারগঞ্জ বাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে তিনটি দোকান সম্পূর্ণ ভস্মীভূত হয়েছে। শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) রাত ১২টা ৩০ মিনিটের দিকে শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয় বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। এতে প্রায় কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত দোকান মালিকরা।
প্রত্যক্ষদর্শী ও দোকান মালিকদের ভাষ্য, গভীর রাতে প্রথমে কার্তিক চন্দ্রশীলের সেলুনে আগুন লাগে। মুহূর্তেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে আব্দুল আলিমের দর্জির দোকান ও সোলাইমান মহাজনের গালামাল দোকানে। আগুনের তীব্রতায় কেউ দোকান থেকে মালামাল সরাতে পারেননি।
কার্তিক চন্দ্রশীল জানান, তার সেলুনে প্রায় ২ লাখ টাকার সরঞ্জাম ছিল। আব্দুল আলিম জানান, তার দর্জির দোকানে ৫ লাখ টাকার মালামাল ছিল। সবচেয়ে বড় ক্ষতির মুখে পড়েছেন সোলাইমান মহাজন, যার গালামাল দোকানে আনুমানিক ৩০ থেকে ৩৫ লাখ টাকার মালামাল পুড়ে গেছে। তেল জাতীয় পণ্য থাকায় তার দোকানে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং মাত্র ৫ মিনিটের মধ্যেই সব পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
স্থানীয়রা জানান, বাজারে কোনো ফায়ার সেফটি ব্যবস্থা না থাকায় আগুন নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়নি। আগুন লাগার পর পরই স্থানীয়রা নাগেশ্বরী ফায়ার সার্ভিস স্টেশনে ফোন করেন। তবে মাদারগঞ্জ বাজার নাগেশ্বরী থেকে প্রায় ৪৭ কিলোমিটার দূরে হওয়ায় ফায়ার সার্ভিসের ইউনিট পৌঁছাতে প্রায় ৫০ মিনিট সময় লেগে যায়। ফলে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি আসার আগেই দোকান তিনটি পুরোপুরি ভস্মীভূত হয়ে যায়।
কচাকাটা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নাজমুল আলম বলেন, “এ ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে ব্যবসায়ীদের আরও সতর্ক হতে হবে। দোকানে অগ্নিনির্বাপণ সরঞ্জাম থাকা অত্যন্ত জরুরি।”
ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারাও বলেছেন, প্রতিটি দোকানে ফায়ার সেফটি বক্স রাখলে এ ধরনের ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতি রোধ করা সম্ভব।
স্থানীয় বাসিন্দারা দ্রুত কচাকাটায় একটি স্থায়ী ফায়ার সার্ভিস স্টেশন স্থাপনের দাবি জানিয়েছেন। তারা বলেন, “নিজ এলাকায় ফায়ার স্টেশন না থাকায় আমরা প্রতিবারই মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়ছি। এখনই ব্যবস্থা না নিলে সামনে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও ভয়াবহ হতে পারে।”