মোঃইকরামুল হোসেন
ক্রাইম রিপোর্টার
জেলা প্রতিনিধি, মাগুরা
মাগুরা জেলার মহম্মদপুর উপজেলার ৭ নং পলাশবাড়িয়া ইউনিয়নের ০৫ নং ওয়ার্ডের বলরামপুর গ্রামে ঘটে গেলো এক বিস্ময়কর ঘটনা, বলরামপুর গ্রামের মোহাম্মদ সৈয়দ মোল্লার ছোট ছেলে মোঃ আব্দুল কাদের শনিবার দুপুরে গোসলের জন্য বাড়ির পাশেই একটি পুকুরে জান সেই পুকুরে পানি খুব একটা বেশি নয় তবে সেই পানিতেই ডুবে আব্দুল কাদের প্রাণ হারায় মৃত্যকালে আব্দুল কাদেরর বয়স ছিল ২০ বছর তিনি ছিলেন একজন শিক্ষার্থী মমহম্মদ পুর আমিনুর রহমান ডিগ্রী কলেজে'র (এইচ এস সি) দ্বিতীয় বর্ষের একজন মেধাবী ছাত্র পরিবারের অসচ্ছলতার কারণে তাকে প্রায় সময় বিভিন্ন রকম কাজের আঞ্জাম দিতে হতো সবকিছু মিলিয়ে আব্দুল কাদের তার পরিবারের সাথে ভালোই ছিলেন কিন্তু ভাগ্যের কে নির্মম পরিহাস আব্দুল কাদের কে ত্যাগ করতে হলো তার পরিবারের মায়া আব্দুল কাদেরকে হারিয়ে তার পরিবার পরিজন ও এলাকাবাসী সকলে শোকাহত সকলে যেন তার জন্য দিল খুলে দোয়া করছে মৃত আব্দুল কাদেরের বন্ধুদের বক্তব্য তারা কোনভাবে মেনে নিতে পারছে না যে আব্দুল কাদের আর তাদের মাঝে নেই নেটের পরিবার হরিজনের কান্না যেন আকাশ বাতাস কে ভারী করে তুলছে, মৃত আব্দুল কাদেরের পিতা মোহাম্মদ সৈয়দ মোল্লা জানান ছেলের মৃগী রোগ ছিল বিগত সাত আট বছর পূর্বে একবার হয়েছিল তখন আব্দুল কাদেরের বয়স ১০ থেকে ১২ বছর আব্দুল কাদের তখন পঞ্চম শ্রেণীতে পড়তো পঞ্চম শ্রেণী থেকে একবার হবার পর আব্দুল কাদের মোটামুটি সুস্থ্য আর এই রোগ ধরা পড়েনি বা কখনো দেখাও দেয়নি হঠাৎ করেই আব্দুল কাদেরের গোসলের সময় এই সমস্যা দেখা দেয় আব্দুল কাদেরের মা জানান সে যখন গোসল করতে যায় মায়ের সাথে হাসিমুখে সাদ-আল্লাদ করে গোসল করতে যাই আব্দুল কাদের গোসল করতে যাওয়ার পর যখন দীর্ঘ সময় পরেও বাড়িতে ফিরেনি ঠিক তখনই মায়ের মনে একটা ঝটকা লাগে মা তাকে খোঁজ করার জন্য পুকুর পাড়ে যায় পুকুর পাড়ে গিয়ে ছেলের লাশ ভাসমান অবস্থায় দেখে মায়ের মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়ে তিনি চিৎকার চেঁচামেচি করে আশপাশের প্রতিবেশীদেরকে ডেকে আনেন এসময় প্রতিবেশীরা এসে মৃত আব্দুল কাদেরের লাশ পানি থেকে টেনে উঠায় ঘটনাস্থান থেকে জানা যায় আব্দুল কাদের সেখানেই মৃত্যুবরণ করে আবার কেউ কেউ বলেন তখন পানি থেকে উঠানোর পরেও আব্দুল কাদের জীবিত ছিল আব্দুল কাদেরকে চিকিৎসা দেওয়ার জন্য স্থানীয় একজন ডাক্তারের শরণাপন্ন হয় স্থানীয় ডাক্তার আব্দুল কাদেরের এই অবস্থা দেখে তিনি আব্দুল কাদেরের পরিবারকে জানান আপনারা যত দ্রুত সম্ভব একে মহম্মদপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করেন স্থানীয় ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী তাকে মহম্মদপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করা হয় কিন্তু স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত ডাক্তার পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে জানান আব্দুল কাদের অনেক আগেই পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেছে এ কথা শুনে আব্দুল কাদেরের সাথে থাকা একজন বন্ধু সাথে সাথে জ্ঞান হারায় সে যেন মেনেই নিতে পারছে না আব্দুল কাদেরের ছেলে বিদায়ের কথা তাকে হাসপাতালে জরুরী বিভাগে ভর্তি করা হয় সে এখন চিকিৎসা অবস্থায় আছে এ ঘটনা কে কেন্দ্র করে অত্র এলাকাবাসী ভিড় জমান আব্দুল কাদের বাড়িতে উক্ত ঘটনা কে কেন্দ্র করে মহম্মদপুর থানা পুলিশ উপস্থিত হয় মৃত আব্দুল কাদেরের বাড়িতে তারা এসে তদন্ত করে এটা কি আসলেই মৃত্যু নাকি কোন হত্যাকাণ্ড ঘটনাস্থল থেকে পুলিশের বক্তব্য এটার পিছনে কারো কোন হাত নেই এটা যেন বিধাতার লীখন সুতরাং মৃত আব্দুল কাদেরের কে ডিসি অফিস থেকে অনুমোদন এনে অত্র এলাকাবাসীকে দাফন কাফনের কাজ সম্পন্ন করার অনুমতি প্রদান করেন মহম্মদপুর থানা পুলিশ এ সময় উক্ত এলাকাবাসী মৃত আব্দুল কাদেরের জন্য ছুটে আসেন তার বাড়ীতে যানাজার মাঠে উপস্থিত হন মোহাম্মদপুর আমিনুর রহমান ডিগ্রী কলেজের সম্মানিত শিক্ষকবৃন্দ এবং শিক্ষার্থীরা এছাড়াও আরও স্থানীয় ওলামায়ে কেরাম সহ দূর দূরান্ত থেকে ছুটে আসেন হাজারো মানুষ জানাযার মাঠে যেন এক অবিরণ দৃশ্য জানাজার মাঠে যেন কান্নার ঢেউ তুলে যাচ্ছে মৃত আব্দুল কাদেরকে যখন বাড়ি থেকে বের করা হয় জানাজা দেওয়ার উদ্দেশ্যে তখন তার পরিবার পরিজন অনেকেই জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন আব্দুল কাদেরকে হারাবার শোকে এ ঘটনা যেন তারা কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না
মৃত আব্দুল কাদের গ্রামের যুব সমাজের উদ্যোগ একটি সংগঠন রয়েছে যার নামকরণ করা হয়েছে বলরামপুর যুব মানব কল্যাণ সামাজিক সংগঠন এই সংগঠনের দায়িত্বশীল যারা আছেন তাদের বক্তব্য এই সংগঠনটি সদা সর্বদাই মানুষের কল্যাণে নিয়োজিত সুতরাং আমরা এই সংগঠন সামনের পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই আমাদের এই সংগঠনের একজন সদস্য ছিলেন মৃত আব্দুল কাদের আমাদের এই সংগঠনের পক্ষ থেকে মৃত আব্দুল কাদের অনেকবার অনেক অসুস্থ রোগীকে বিনামূল্য রক্তদান করেন তার এই মহৎ কাজের কারণে আমরা তাকে সংগঠনের পক্ষ থেকে একাধিকবার পুরস্কৃত করেছি আজ যেন আমাদের সেই উদার মনের মানুষটা আমরা হারিয়ে ফেললাম সর্বশেষ উত্তর সংগঠনের সম্মানিত ক্যাশিয়ার মোহাম্মদ মাসুম বিল্লাহ জানান আমরা আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে যতটুকু সম্ভব তার এই হত দরিদ্র পরিবারকে সহযোগিতা করব তারা আরো আশ্বাস দেন আমরা আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে আমাদের ভাই মৃত মোহাম্মদ আব্দুল কাদেরের রুহের মাগফেরাতের জন্য একটা দোয়ার অনুষ্ঠান করব মৃত মোহাম্মদ আবদুল কাদেরের পিতা মোহাম্মদ সৈয়দ মোল্লা জানান আমার সন্তান যেন ওপারে আল্লাহর কাছে ভালো থাকে আল্লাহ যেন তাকে জান্নাত নসিব করে দেশবাসীর কাছে আমি দোয়া চাই