নিজস্ব প্রতিবেদক ঢাকা, ২৫ মে:
গ্রীষ্মের মৌসুমে দেশজুড়ে হাটে-ঘাটে পাওয়া যায় সবুজের মোড়কে মোড়া কাঁচা কাঁঠাল। একদিকে যেমন এটি জনপ্রিয় সবজি হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে, অন্যদিকে এর পুষ্টিগুণের দিক থেকেও রয়েছে নানা গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য উপকারিতা। বিশেষজ্ঞদের মতে, কাঁচা কাঁঠাল নিয়মিত খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে, হজম শক্তি উন্নত হয় এবং হৃদ্রোগসহ নানা জটিল রোগের ঝুঁকি কমে।
পুষ্টিবিদদের তথ্য মতে, প্রতি ১০০ গ্রাম কাঁচা কাঁঠালে রয়েছে প্রায় ২ গ্রাম আঁশ, ২৪ গ্রাম শর্করা, ৩৪ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ৩৭ মিলিগ্রাম ম্যাগনেসিয়াম এবং ৩০৩ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম। এছাড়াও এতে রয়েছে ভিটামিন এ, বি৬, সি, ফোলেট ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান, যা ত্বকের সৌন্দর্য রক্ষা থেকে শুরু করে রক্ত তৈরি, হাড় ও দাঁতের গঠন এবং স্নায়ুর পুষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
কাঁচা কাঁঠালে থাকা আঁশ কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে এবং কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়। এতে থাকা পটাশিয়াম উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হওয়ায় হৃদ্রোগ প্রতিরোধেও কার্যকর। এছাড়া, ভিটামিন সি শরীরে কোলাজেন তৈরিতে সহায়তা করে, যা ত্বককে রাখে তরুণ ও প্রাণবন্ত।
বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য, কাঁঠালের বিচিতে রয়েছে ভিটামিন বি১২ ও আয়রন—যা স্নায়ু সিস্টেমের পুষ্টির জন্য অপরিহার্য। ফোলেট ও আয়রন সমৃদ্ধ কাঁচা কাঁঠাল গর্ভবতী নারী ও বাড়ন্ত শিশুদের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
তবে চিকিৎসকরা সতর্ক করছেন, ডায়াবেটিস ও কিডনির সমস্যায় ভোগা রোগীদের ক্ষেত্রে কাঁঠাল খাওয়ার বিষয়ে সাবধানতা অবলম্বন করা প্রয়োজন। রক্তে পটাশিয়ামের মাত্রা বেশি থাকলে কাঁঠাল পরিহার করাই শ্রেয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশীয় এই ফল-সবজিটি শুধু স্বাদেই নয়, স্বাস্থ্যগুণেও ‘সুপারফুড’-এর মর্যাদা পাওয়ার যোগ্য। সঠিকভাবে রান্না ও গ্রহণের মাধ্যমে কাঁচা কাঁঠাল হতে পারে স্বাস্থ্য সচেতন প্রতিটি মানুষের নিত্যদিনের খাদ্য তালিকার গুরুত্বপূর্ণ অংশ।