প্রিন্ট এর তারিখঃ অগাস্ট ২৩, ২০২৫, ১:৫৯ পি.এম || প্রকাশের তারিখঃ অগাস্ট ২৩, ২০২৫, ৩:৪৮ এ.এম
কিশোরগঞ্জে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে যুবদলের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে নিহত ১ আহত ৩০ জন

নিজাম উদ্দীন
কিশোরগঞ্জে মাদকের কারবার ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে জাতীয়তাবাদী যুবদলের দুই পক্ষের সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন ইমরানুল হক হিমেল (৩২) নামের এক যুবদল কর্মী। গতকাল শুক্রবার সকাল থেকে বৌলাই পুরান বাজারসহ আশপাশের এলাকায় তিন দফায় সংগঠনের দুই নেতার অনুসারীদের মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ৩০ জন আহত হন। এ সময় দেশীয় অস্ত্রসহ আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।
বিকেলে নিহত ইমরানুল হক হিমেলের স্বজন ও তাঁর পক্ষের নেতাকর্মীরা প্রতিপক্ষের এক নেতার বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। হিমেল সদর উপজেলার বৌলাই ইউনিয়নের ভড়াটি গ্রামের হাবিবুর রহমানের ছেলে। এলাকাবাসীর ভাষ্য, মাদকের কারবার ও এলাকার আধিপত্য নিয়ে জেলা যুবদলের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আলী আব্বাস রাজন ও সদর উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক এমদাদুল হকের লোকজনের মধ্যে বিরোধ চলছিল। এর জের ধরে দুই পক্ষ গত বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে থেকে বৌলাই পুরান বাজারসহ আশপাশের এলাকায় তিন দফা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় দেশীয় অস্ত্রের পাশাপাশি গুলিও ছোঁড়া হয়।
বৌলাই ইউনিয়ন পরিষদের এক নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য আব্দুল মোতালিবের ভাষ্য, হিমেল যুবদল নেতা রাজনের অনুসারী ছিলেন। তাঁকে এমদাদের লোকজন ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। সেখান থেকে উদ্ধার করে হিমেলকে শহরতলীয় যশোদল এলাকার শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। অবস্থা গুরুতর দেখে চিকিৎসকেরা তাঁকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। পথেই হিমেল মারা যান।
বাড়িতে অগ্নিসংযোগসংঘর্ষে আহত হিমেলের মৃত্যুর সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে যুবদল নেতা এমদাদুল হকের বাড়িতে এদিন বিকেলে আগুন ধরিয়ে দেয় উত্তেজিত জনতা। তাদের মধ্যে হিমেলের স্বজনের পাশাপাশি অপর যুবদল নেতা রাজনের লোকজনও ছিলেন।
কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, যুবদলের দুই পক্ষের সংঘর্ষের খবর পেয়ে যৌথ বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। তবে গুলিবর্ষণের কোনো ঘটনা তাঁর জানা নেই। লাশ মর্গে পাঠানো হয়েছে। নিহত যুবকের স্বজনদের পক্ষ থেকে মামলা করা হলে আইনগত ব্যবস্থা নেবেন।
জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মাসুদ সুমন জানিয়েছেন, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলামকে নিয়ে তিনি বৌলাই এলাকায় যান। সেখানে জানতে পারেন, এলাকাবাসী এমদাদের মাদক কারবারের বিরোধিতা করায় তাদের ওপর হামলা ও গুলিবর্ষণ করা হয়। একজন নিহত হয়েছেন। অন্তত তিনজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এ বিষয়ে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম জানিয়েছেন, তিনি বিষয়টি শুনেছেন। দলের পক্ষ থেকে ঘটনাটির তদন্ত করা হবে। যাদের বিরুদ্ধে অপরাধে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যাবে, তাদেরই সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হবে।
Copyright © 2025 cetonaibangladesh.news. All rights reserved.