মৌলভীবাজার প্রতিনিধি
মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার কর্মধা ইউনিয়নের টাট্টিউলি গ্রামে ১০ বছর বয়সী শিশু তামজিদুল ইসলাম গত সাত বছর ধরে শিকলে বন্দি অবস্থায় জীবনযাপন করছে। মাত্র তিন বছর বয়স থেকে মানসিক সমস্যার কারণে তাকে ঘরে বাঁশের খুঁটির সঙ্গে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয়।
তার মা কুলসুমা আক্তার বলেন, "আমি নিজের ছেলেকে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত শিকল দিয়ে ঘরে বাঁশের খুঁটির সাথে বেঁধে রাখি, কি করবো আমি না চাইলেও আমার ছেলেকে বেঁধে রাখতে হয়।" তামজিদের বাবা-মায়ের বিচ্ছেদের পর, কুলসুমা বেগম তার ছেলেকে নিয়ে তার বাবার বাড়িতে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
তিনি বলেন, ছেলেকে বাঁধা অবস্থায় দেখে মাঝে মাঝে আমি কান্না করি কিন্তু কি আর করার এটাই নিয়তি। আমার ছেলের ছোটবেলা থেকেই মানসিক সমস্যা, বাহিরে গেলেই দৌড়ে পালিয়ে যায়, একবার সিকল খুলে বাড়ির পাশের ডুবাতে পড়ে যায়, আমরা তাকে উদ্ধার করি। তাই বাধ্য হয়ে তাকে বেঁধে রাখতে হয়।
তামজিদের নানা বলেন, তার বাবা-মায়ের মধ্যে বিচ্ছেদ হওয়ার পর, কুলসুমা বেগম তার ছেলেকে নিয়ে আমার বাড়িতে কষ্টে মানবেতর জীবনযাপন করছে। তামজিদ যখন ছোট, তখনই তার মানসিক সমস্যার লক্ষণ দেখা দেয়। বিষয়টি বুঝতে পেরে তার বাবা সন্তান ও স্ত্রীকে ছেড়ে আলাদা হয়ে যান।
সেই থেকেই মা কুলসুমা আক্তার একা হাতে ছেলেকে নিয়ে সংগ্রামী জীবন পার করছেন। কোনোভাবে বাবার বাড়িতে ঠাঁই নিয়ে ছেলেকে সিকলবন্দি করে দিন কাটাতে বাধ্য হয়েছেন তিনি ।
তামজিদের জীবন বাঁচাতে সহযোগিতা চান কুলসুমা
চোখের কোণে অশ্রু, কণ্ঠে অসহায় আকুতি—মা কুলসুমা বেগম বলেন , "আমার ছেলেটা যেন একটু স্বাভাবিকভাবে বাঁচতে পারে, চিকিৎসা করাতে পারি, সেই জন্য দেশ-বিদেশের সকল মানুষের কাছে সাহায্য চাই।
তামজিদ ছোট্ট প্রাণ, যাকে প্রতিনিয়ত লড়াই করতে হচ্ছে বাঁচার জন্য। কঠিন রোগে আক্রান্ত এই শিশুটির চিকিৎসার ব্যয় বহন করা কুলসুমার পক্ষে একা সম্ভব নয়। তাই তিনি এখন দেশ-বিদেশের মানুষের ভালোবাসা ও আর্থিক সহায়তায় তামজিদের একটি মুক্ত, সুস্থ জীবনের আশায় প্রহর গুনছেন।
তামজিদের জীবন রক্ষায় সহানুভূতির হাত বাড়িয়ে দিন। একজন মায়ের চোখের জল মুছে দিয়ে একটি শিশুর জীবন আলোকিত করতে এগিয়ে আসুন।