প্রতিনিধি 10 November 2024 , 1:50:32 প্রিন্ট সংস্করণ
উজ্জ্বল মাহমুদ, কুষ্টিয়া :
কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলায় জমি নিয়ে বিরোধের জেরে দুই বংশের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষে একজন নিহত এবং অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন।
১০ নভেম্বর রবিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার বহালবাড়িয়া ইউনিয়নের নওদা খাদেমপুর গ্রামে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। নিহত ব্যক্তি তৌহিদুল ইসলাম (৪৫), যিনি ওই গ্রামের মৃত মোজাহার আলী সর্দারের ছেলে এবং পেশায় কৃষক ছিলেন।
আহতদের মধ্যে রয়েছেন জাহাঙ্গীর সর্দার, রুবেল সর্দার, আলামিন, জুয়েল, রিজভী, আকিজ, লিটু, ও জহুরুল সর্দার। আহত সবাইকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সংঘর্ষের পর এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে, এবং লুটপাটের আশঙ্কায় অনেকেই তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নওদা খাদেমপুর গ্রামে গাইন ও সর্দার বংশের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে আধিপত্য ও নদীর চর দখল নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। গাইন বংশের নেতৃত্বে রয়েছেন টিপু গাইন ও মান্নান গাইন, অন্যদিকে সর্দার বংশের নেতৃত্বে রয়েছেন আতিয়ার সর্দার ও খালেক সর্দার। বিরোধের অন্যতম কারণ হিসেবে উঠে এসেছে গ্রামের মধ্য দিয়ে যাওয়া সড়কটি, যা গাইন বংশের বসবাসের এলাকায় অবস্থিত। এই সড়ক দিয়ে সর্দার বংশের লোকজনকে প্রায়শই চলাচল করতে হয়, এবং এতে সংঘাতের সূত্রপাত ঘটে।
স্থানীয় এলাকাবাসী পুলিশ জানায়,আজ সকালে উভয় পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। সংঘর্ষের সময় সর্দার বংশের তৌহিদুল ইসলামকে গুলি করা হয়, যা তার মৃত্যুতে গড়ায়। সংঘর্ষে প্রায় ১৫ থেকে ২০ জন আহত হন এবং তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় গাইন বংশের কয়েকজন পালিয়ে গেছেন বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) তাপস কুমার সরকার বলেন, “গুলিবিদ্ধ একজন মারা গেছেন এবং বাকিদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।”
এ বিষয়ে নিহতের ছোট ভাই সুজন আলী সর্দার জানান, গাইন বংশের লোকজন তাদের বাড়িতে হামলা চালানোর সময় তার ভাইকে গুলি করেন। দীর্ঘদিন ধরে চরের জমি নিয়ে বিরোধের কারণে এমন ঘটনা ঘটেছে।
ঘটনার পরপরই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোমিনুল ইসলাম। তিনি বলেন, “চর দখল ও সড়কে চলাচল নিয়ে বিরোধ দীর্ঘদিনের। এই বিরোধের জের ধরে সংঘর্ষে একজন গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন, এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।”