প্রতিনিধি 9 October 2024 , 3:13:14 প্রিন্ট সংস্করণ
সাতক্ষীরায় মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) সকাল ১১ টায় আশাশুনিতে অবস্থিত এতিম ছেলেমেয়েদের জন্য কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের হলরুমে জেলার নবাগত জেলা প্রশাসকের সাথে আশাশুনি উপজেলার সরকারি কর্মকর্তা/কর্মচারী ও সুধীজনদের নিয়ে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আশাশুনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কৃষ্ণা রায়ের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাতক্ষীরার নবাগত জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ।
অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আশাশুনি উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাশেদ হুসাইন, আশাশুনি থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ নজরুল ইসলাম।
অতিথি হিসেবে অন্যানোর মধ্যে উপজেলা বিএনপির আহবায়ক স ম হেদায়েতুল ইসলাম, উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমীর আবু মুছা তারিকুজ্জামান তুষার, নায়েবে আমীর নুরুল আবছার, পূজা উৎযাপন পরিষদের সভাপতি নীলকন্ঠ সোম, আশাশুনি প্রেসক্লাবের সভাপতি জি এম আল ফারুক, আশাশুনি রিপোর্টার্স ক্লাবের সভাপতি রাবিদ মাহমুদ চঞ্চল সহ উপজেলার সকল সরকারি ও বেসরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী, শিক্ষক সমাজের প্রতিনিধি, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সূধী সমাজের ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রদান কালে জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ বলেন, আজ থেকে সাতক্ষীরার কোন দপ্তরে ঘুষ নেওয়ায় অভিযোগ পেলেই কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ক্লাস বাদ দিয়ে কোচিং, ডিউটি বাদ দিয়ে ক্লিনিকে রোগী দেখার ব্যবসা চলবে না। ফাইল আটকে ঘুষ চাওয়া আর অস্ত্র ঠেকিয়ে চাঁদা আদায় করা একই কথা। আমার মোবাইল নাম্বার সকলের জন্য উন্মুক্ত। যখন যে প্রান্ত থেকে দূর্নীতির কোন খবর পাবো সেখানে আমি পৌঁছে যাব।
মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব উল্লেখ করে তিনি বলেন-মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন এবং আমাদের জন্য রিজিক বরাদ্দ করেছেন তাহলে কেন দুর্নীতি করতে হবে? কেন আমাদেরকে ঘুষ খেতে হবে? ঘুষের টাকায় সন্তান মানুষ করে সেই সন্তান আপনাকে বৃদ্ধ বয়সে দেখবে? এর কি গ্যারান্টি আছে। মনে রাখবেন উপরওয়ালার কাছে আপনার হিসাব আপনাকেই দিতে হবে।
উপস্থিত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উদ্দেশ্যে সুস্পষ্ট ভাবে বলেন-এতদিন যা করেছেন করেছেন। আজকের সাতক্ষীরায় আমার অধীনে চাকরি করতে গেলে সঠিক ও ন্যায়ের পথে থাকতে হবে। কোন ধরনের ঘুষ দুর্নীতি করলে আমি সেই কর্মকর্তাকে কোন অবস্থায় ছাড় দেবো না। আজ থেকে উপজেলার সকল কর্মকর্তা কর্মচারীরা শপথ নিন দুর্নীতির বিরুদ্ধে। কেউ দুর্নীতি করবেন না অপরকে করতে দিবেন না।
আসন্ন দুর্গাপূজায় শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার আহ্বান জানানোর পাশাপাশি দুষ্কৃতিকারীদের হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন-আমরা হলাম সরকারি মাস্তান,সরকার আমাদেরকে জনগণের জান মালের নিরাপত্তা বিধানের জন্য পাঠিয়েছে। কেউ কোন ধরনের বিশৃঙ্খলা বা নাশকতা ঘটানোর চেষ্টা করবেন না, তাহলে কিন্তু আমরা আমাদের মাস্তানি দেখাতে বাধ্য হব। আর সেটা কত বড় ভয়ঙ্কর হতে পারে তা আপনারা কল্পনাই করতে পারছেন না।
উপস্থিত সহকারি কমিশনার (ভূমি) কে উদ্দেশ্য করে তিনি আরো বলেন-আপনি আপনার অফিস সহ ভূমি অফিসের কর্মকর্তাদেরকে জানিয়ে দিন আজকের পর থেকে ঘুষ নেওয়ার জন্য কোন ধরনের গ্রাহকদের হয়রানি করা হলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়াও তিনি সাব-রেজিস্ট্রার, একাউন্ট অফিস, প্রকল্প উন্নয়ন অফিস, শিক্ষা অফিস,সমাজ সেবা অফিস, সমবায় অফিস, স্বাস্থ্য অফিসের কর্মকর্তা সহ উপস্থিত সকল সরকারি কর্মকর্তাকে ঘুষ-দুর্নীতি থেকে দূরে থাকার জন্য কঠোর হুঁশিয়ারি প্রদান করেন।
উপস্থিত আশাশুনি থানা অফিসার ইনচার্জকে উদ্দেশ্য করে বলেন-মাদকের ক্ষেত্রে আপনার অবস্থান হবে জিরো টলারেন্স। একমাস পর আমি যেন খবর পাই আশাশুনি উপজেলায় কোন মাদক বিক্রেতা বা মাদক সেবী নেই।
মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি বক্তব্যে শেষে রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, সাংবাদিক, শিক্ষক, ছাত্র, সরকারি কর্মকর্তাগন সংক্ষিপ্ত আকারে এই উপজেলার বিভিন্ন সমস্যা ও সম্ভবনার কথা তুলে ধরেন।
উপস্থিত সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে জেলা প্রশাসক বলেন- আপনারা চোখ কান খোলা রাখবেন। যেকোনো দুর্নীতি প্রতিরোধকল্পে আপনারা বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশ করলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারবো।