প্রতিনিধি 16 June 2025 , 9:06:01 প্রিন্ট সংস্করণ
স্টাফ রিপোর্টার।
লাঠিচার্জে খুলনা মহানগর বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এএনএম ফকরুল আলম এর চোখ নষ্ট হওয়ার ঘটনার দায়ের করা মামলায় খুলনা সদর থানার সাবেক ওসি হাসান আল মামুনকে জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ দিয়েছে আদালত।
রবিবার (১৫ জুন) দুপুরে তিনি আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন তিনি। খুলনা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. শরীফ হোসেন হায়দার জামিন না মঞ্জুর করে তাকে জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ প্রদান করেছেন। হাসান আল মামুন জামালপুর জেলার মাদারগঞ্জ মডেল থানায় ওসি হিসেবে কর্মরত ছিলেন।এদিকে কারাগারে নেয়ার সময় বিএনপি নেতাকর্মীরা হাসান আল মামুনকে লক্ষ্য করে পঁচা ডিম এরং আম নিক্ষেপ করেন। তারা ওসির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়ে বিভিন্ন ম্লোগান দেন। পরে বিএনপি নেতাদেরকে শান্ত রাখার জন্য যৌথ বাহিনীর সদস্যদের মোতায়ন করা হয়।
মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) একেএম শহিদুল আলম বলেন, মামলাটিতে উচ্চ আদালতের জামিনে ছিলেন হাসান আল মামুন। উচ্চ আদালতের নির্দেশে রবিবার খুলনা মহানগর দায়রা জজ আদালতে তিনি আত্মসমর্পণ করেন। এ সময় তার আইনজীবীরা জামিনের আবেদন করেন। আমরা জামিনের বিরোধিতা করি। আদালত জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০২২ সালের ৫ জানুয়ারি বিএনপির ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ এর কর্মসূচি চলাকালে ওসি হাসান আল মামুনের আদেশে অন্যান্য পুলিশ সদস্যরা বিএনপির নেতাকর্মিদের উপর লাঠিচাজ, টিয়ারগ্যাস ও ফাঁকাগুলি করে শান্ত পরিবেশকে অশান্ত করে তুলে। এসময় ওসি হাসান আল মামুন নিজে ফখরুল আলমের মুখে বাড়ি মেরে বলেন সারা জীবনের জন্য জবান বন্ধ করে দিব। পরে তার হাতে থাকা লাঠি দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে ফখরুল আলমের মাথায় বাড়ি মারেন। এতে তার চোখের মনি ফেঁটে রক্ত বের হয় এবং চোখ ক্ষতিগ্রস্থ হয়। পরবর্তীতে দেশ-বিদেশে চিকিৎসক দেখালেও চোখের আলো আর ফিরে পাননি তিনি। এ ঘটনায় তিনি গত বছরের ১৯ আগস্ট বাদী হয়ে ওসি হাসান আল মামুনের বিরুদ্ধে খুলনার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে মামলা দায়ের করেন যার নং-১০৮৯/২৪। ওই দিন আদালত মামলাটি গ্রহণ করে নগর গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) উপ-কমিশনারকে তদন্তপুর্বক ২৪ অক্টোবরের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নগর গোয়েন্দা শাখার এডিসি জালাল উদ্দিন আল মামুনের বিরুদ্ধে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন।
আদালত তিন দফা সমন জারির পরেও ওসি আল মামুন আদালতে হাজির না হওয়ায় ২৩ মার্চ আদালতের নির্দেশ অবমাননা করায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। এ মামলার পরবর্তী দিন ধার্য করা হয়েছিল ২২ জুন। উচ্চ আদালতের নির্দেশে রবিবার খুলনা মহানগর দায়রা জজ আদালতে তিনি আত্মসমর্পণ করেন।