প্রতিনিধি 29 July 2025 , 5:16:30 প্রিন্ট সংস্করণ
গাজা, ২৯ জুলাই ২০২৫:
আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলের হামলা অব্যাহত রয়েছে। এই বর্বরোচিত হামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় (সোমবার) আরও ৮০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আলজাজিরাকে জানিয়েছে। তবে প্রকৃত নিহতের সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে, কারণ অনেক আহত-নিহতকে হাসপাতালে আনা সম্ভব হয়নি এবং ধ্বংসস্তূপের নিচেও অনেকে আটকা পড়ে আছেন।
গুলি-বোমার সঙ্গে অনাহারে মৃত্যু: শিশুদের করুণ পরিণতি
ইসরায়েলি হামলায় শুধু গুলি-বোমায় নয়, অনাহারেও প্রাণহানি আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। উপত্যকাটিতে নতুন করে আরও ১৪ ফিলিস্তিনি অনাহারে মারা গেছেন, যাদের মধ্যে দুজন শিশু। এ নিয়ে অপুষ্টিজনিত কারণে এখন পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪৭ জনে, যার মধ্যে ৮৮ জনই শিশু। এই সংখ্যা গাজায় মানবিক বিপর্যয়ের ভয়াবহতা স্পষ্ট করে তোলে।
দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর ‘মানবিক যুদ্ধবিরতি’ ও ত্রাণ করিডর
গাজার ভয়াবহ মানবিক সংকট এবং ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক চাপের মুখে অবশেষে কিছুটা স্বস্তির খবর এসেছে। ইসরায়েল প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ের জন্য যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দিয়েছে। রয়টার্সের খবর অনুযায়ী, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৮টা পর্যন্ত (স্থানীয় সময়) আল-মাওয়াসি, মধ্যাঞ্চলের দেইর আল-বালাহ এবং উত্তরের গাজা শহরে সামরিক তৎপরতা বন্ধ রাখবে। এই অঞ্চলগুলোকে ‘মানবিক এলাকা’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে এবং নতুন ত্রাণ করিডরও চালু করা হয়েছে।
জর্ডান ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের আকাশপথে ত্রাণ সরবরাহ
ইসরায়েলের এই ঘোষণার মধ্যেই জর্ডান ও সংযুক্ত আরব আমিরাত গাজায় দীর্ঘদিন পর আবারও আকাশপথে ত্রাণ সরবরাহ শুরু করেছে। জর্ডান সরকার জানিয়েছে, তারা এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত যৌথভাবে প্রথম দফায় গাজায় ২৫ টন খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা প্যারাশুটের মাধ্যমে পাঠিয়েছে। তবে জর্ডান স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, এই এয়ারড্রপ কোনোভাবেই সড়কপথে ত্রাণ পৌঁছানোর বিকল্প নয়, কারণ সড়কপথেই আরও বেশি ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছানো সম্ভব।
জাতিসংঘ এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা বারবার গাজায় নির্বিঘ্নে ত্রাণ প্রবেশ নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছে। এই মানবিক যুদ্ধবিরতি গাজার জনগণের জন্য কতটা স্বস্তি নিয়ে আসে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।