অন্যান্য

গাজীপুরে হিল্লা বিয়ে নামে ধর্ষণ, পাহাড়ায় থাকা ইমাম বরখাস্ত

  প্রতিনিধি 15 December 2024 , 2:13:50 প্রিন্ট সংস্করণ

 

 

মোঃ মিন্টু মিয়া

 

হিল্লা বিয়ে নামে ধর্ষণ, পাহাড়ায় থাকা ইমাম বরখাস্ত> ফতোয়া জানতে গিয়ে ২ ঘন্টার চুক্তিতে হিল্লা বিয়ে করেন মাওলানা আশেকী

বিয়ের ঘন্টাখানিক পর-ই তালাক

বিয়ে পড়ানো ও পাহাড়া দেয়া ইমাম বরখাস্ত

 

 

গাজীপুরের শ্রীপুরে তালাকের ফতোয়া জানতে আসলে দুই ঘন্টার চুক্তিভিত্তিক বিয়ের পর ইমামের পাহাড়ায় মসজিদের ভেতরে সহবাস করার অভিযোগ উঠেছে টেংরা এলাকার এক মাদ্রাসার মুহতামিমের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত ওই মুহতামিম ময়মনসিংহের ধোবাউরা উপজেলার কামালপুর গ্রামের ইসমত আলী আশেকী এবং মসজিদের ভেতরে যৌন মিলনে সহায়তাকারী ইমামের নাম কফিল উদ্দিন। সে টেপিরবাড়ি পশ্চিম পাড়া আরফান আলী শাহী জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব।

 

অভিযুক্ত ইসমত আলী আশেকী গত প্রায় ৪ বছর যাবত টেংরা মধ্যপাড়া জামিউল উলূম ক্বওমী মাদ্রাসা ও এতিমখানা’র মুহতামিমের দায়িত্ব পালন করে আসছেন।

 

পবিত্র স্থানে এমন ঘটনার বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকায় বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়, পরবর্তীতে মসজিদের ইমাম কফিল উদ্দিনকে তাৎক্ষণিক বরখাস্ত করে মসজিদ কমিটি ও মুসল্লিরা। গত শনিবার (১৪ ডিসেম্বর ) বিকেলে সরেজমিনে অনুসন্ধানকালে প্রত্যক্ষদর্শী স্বাক্ষী কফিল উদ্দিন (ইমাম) ঘটনাটির সত্যতা নিশ্চিত করেন।

 

অনুসন্ধানে জানা যায়, নোয়াখালীর এক গৃহবধূকে ঝগড়াঝাঁটির পর তার স্বামী তিন তালাক প্রদান করেন। অতঃপর ওই ব্যক্তির স্ত্রী-কে চাচাতো ভাইয়ের নিকট গাজীপুরের শ্রীপুরে পাঠানো হয় বিজ্ঞ আলেমদের সঙ্গে পরামর্শ করার জন্য। পরবর্তীতে চাচাতো ভাই ওই তালাকপ্রাপ্ত নারীকে মুহতামিম ইসমত আলী আশিকী হুজুরের নিকট নিয়ে আসেন ফতোয়া জানার জন্য। পরে আশিকী হুজুর বলেন, এই নারীকে অন্যত্র বিয়ে দেয়া ছাড়া পূর্বের স্বামীর জন্য হালাল হবে না।

 

ভুক্তভোগী নারীকে কু-মতলবে ইমামের সহযোগিতায় বিয়ে নামক খেলা শুরু করেন ইসমত আলী আশেকী, পরে মসজিদের সিড়ির উপর সহবাস করেন। আলোকিত মসজিদের লাইট নিভিয়ে অন্ধকারে রূপান্তরিত করেন অভিযুক্ত ইমাম কফিল উদ্দিন। শারীরিক মিলনের পর মসজিদে থাকা অবস্থায় ওই নারীকে তালাক প্রদান করেন। এবং ওই নারীকে পূর্বের স্বামীর সাথে সংসার করতে পারবে কোন সমস্যা নেই বলে ফতোয়া জারি করেন ইসমত আলী আশেকী।

 

অভিযুক্ত ইসমত আলী আশেকী নিজেকে বড় বক্তা বলে দাবি করেন, এসব অভিযোগ সম্পূর্ণরুপে অস্বীকার করে তিনি বলেন, আমার নিকট তারা এসেছিল, পরে অনুরোধ করলে আমি ওই নারীকে আরেকজনের মাধ্যমে হালাল করে দিয়েছি। কার সঙ্গে হালাল করা হয়েছিল ? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি একবার বলেন, পরে জানাবো, আমি এখন মাহফীলে যাচ্ছি। পরবর্তীতে তিনি বলেন, একজন ফকিন্নির সঙ্গে হিল্লা বিয়ে করিয়ে দিয়েছিলাম, এখন আমি তার নাম ঠিকানা বলতে পারবো না। অতঃপর বিয়ে পড়িয়ে দেয়া সেই ইমাম কফিল উদ্দিনের স্বীকারোক্তি প্রসঙ্গে পূণরায় জিগ্যেস করলে তিনি বলেন, সবাই আমার সম্মানহানি করার জন্য ষড়যন্ত্র করছে।

 

ভুক্তভোগী ওই নারীর স্বামী বিস্তারিত শুনে দেশবরেণ্য আলেমদের সাথে পরামর্শ করলে জানতে পারেন চুক্তিভিত্তিক হিল্লা বিয়ে শরিয়ত সম্মত নয়। এটি প্রতারণার শামিল। ওই নারীর সরলতার সুযোগ নিয়ে অভিযুক্ত মুহতামিম ও ইমাম প্রতারণা করেছে। এঘটনায় স্থানীয়রাও সঠিক বিচার ও শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

 

এ বিষয়ে আরফান আলী শাহী মসজিদ কমিটির সভাপতি আলফাজ উদ্দিন স্বপন বলেন, মসজিদ পবিত্র স্থান, এটা শুধুমাত্র ইবাদতের জায়গা। সেখানে সহবাস করার ঘটনায় জড়িত থাকার বিষয়টি জানাজানি হলে ইমাম কফিল উদ্দিনকে তাৎক্ষণিকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে ।

 

এ বিষয়ে টেংরা মধ্যপাড়া জামিউল উলূম ক্বওমী মাদ্রাসা’র ম্যানেজিং কমিটির সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বলেন, আমি বিষয়টি মাওলানা আশেকী হুজুরের সঙ্গে বিস্তারিত কথা বলে শুনে জানাতো পারবো।

Author

আরও খবর

                   

জনপ্রিয় সংবাদ