অন্যান্য

গামছা বাহিনীর সদস্যরা এখনো সক্রিয় ঝিকরগাছায় 

  প্রতিনিধি 26 October 2024 , 1:37:41 প্রিন্ট সংস্করণ

মাহতিম আহমেদ রাজা 

যশোরের ঝিকরগাছার গামছা বাহিনীর সদস্যরা আইনের আওতায় না আসায় এলাকাবাসীর মাঝে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। উপজেলার শংকরপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি শরিফুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক আদম শফিউল্লাহর নেতৃত্বে সন্ত্রাসী মনিরুল, জাহারুল,মহসিন, আরিফুল, কাজল মেম্বার, জিকো, আমির আলী, সাজল, আবুল খায়ের, আসাদ ও হাসমতসহ গামছা বাহিনীর সদস্যরা স্বৈরাচার সরকারের আমলে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। সন্ত্রাসী বাহিনীর ভয়ে মুখ খুলতে সাহস করেনি কেউ। বিএনপি ও জামায়াতের সিনিয়র নেতাকর্মীদের ওপর হামলা, ঘরবাড়ি, দোকানপাট ভাঙচুর ও লুটপাট করেছে তারা। লাখ লাখ টাকা চাঁদা দিতে হয়েছে নেতাকর্মীদের। গত সাড়ে ১৫ বছর ধরে ইউনিয়ন বিএনপির বর্তমান সভাপতি মাস্টার ফয়জুর রহমান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল গনি মিলন, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক বাবলু, জামায়াত নেতা সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান নিছার আলী, শংকরপুর গ্রামের বিএনপি নেতা লুৎফর রহমান, কুলবাড়িয়ার গোলাম মেম্বার, সেলিম হোসেন, আমির হোসেন, নায়ড়া গ্রামের নাছিমুল হক তপন ও কিরন, আব্দুস সালাম, শামছুর রহমান, লুৎফর রহমান, শংকরপুরের আনিছুর রহমান, নায়ড়া গ্রামের কলেজ শিক্ষার্থী তানজির রহমান বাদশার ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে সে সময়। তাদের কাছ থেকে আদায় করা হয়েছে লাখ টাকা চাঁদা।

শংকরপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মাস্টার ফয়জুর রহমান জানিয়েছেন, ২০১৪ সালের ২ মার্চ ছেলেকে এসএসসি কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার পথে নায়ড়া মোল্লাপাড়া মোড়ে গামছা বাহিনীর সদস্যরা তাকে আটক করে বেদম মারপিট করে। এতে তার ৬টি দাঁত পড়ে যায়। একইদিন তার বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা ও ভাংচুর করা হয়। একই সালের ৩ জুন তার ঘেরের ৩৬০ মণ মাছ লুট করে নেয় শরিফুল-আদমের গামছা বাহিনী।২০১৮ সালের ২৮ ডিসেম্বর তার বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে ৫ লাখ টাকা লুট করে সন্ত্রাসীরা। সর্বশেষ চলতি বছরের ১২ অক্টোবর স্ত্রী তানজিলা বেগমের নামের বৈধ জমির সীমানা নির্ধারন করতে গেলে গামছা বাহিনীর সদস্যরা হামলা চালায়। মাস্টার ফয়জুর রহমান এখন গামছা বাহিনীর সদস্যদের আটক ও বিচার চান।

ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল গনি মিলন বলেন, তিনি বহুবার হামলা-মামলার শিকার হয়েছেন। তিনি বাগআঁচড়া ফাজিল মাদ্রাসায় চাকরি করতেন। ২০২৬ সাল পর্যন্ত তিনি দায়িত্ব পালন করতে পারতেন। শুধুমাত্র বিএনপি করার কারণে তাকে ওই সময়কার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ইলিয়াস কবির বকুল ও অধ্যক্ষ ফসিয়ার রহমান গামছা বাহিনীর সহযোগিতায় তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠান।

বিএনপি নেতা এনামুল হক বাবলু বলেন, গামছা বাহিনীর কারণে তিনি নাশকতামূলক মিথ্যা মামলায় বেশ কয়েকবার জেল খেটেছেন। তার বাগআঁচড়ার বাড়িতে ভাংচুরসহ বোমার বিস্ফোরণ ঘটায় গামছা বাহিনীর সদস্যরা। নায়ড়া গ্রামের বাসিন্দা মনিরুল ও জাহারুলের নেতৃত্বে বিএনপি কর্মী মতিয়ার রহমানের ৭০শতক জমি জোর করে একই গ্রামের বাবলুর রহমানের নামে রেজিস্ট্রি করে নেওয়া হয়। জামায়াত নেতা নিছার আলী চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পরদিন কুপিয়ে তাকে জখম করে গামছা বাহিনীর সদস্যরা। বর্তমানে শংকরপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শরিফুল ইসলাম পালাতক থাকলেও সাধারণ সম্পাদক আদম শফিউল্লাহসহ গামছা বাহিনীর সদস্যরা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে।—লোকসমাজ

আরও খবর

                   

জনপ্রিয় সংবাদ