অন্যান্য

গোয়ালন্দে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হলো শারদীয় দুর্গোৎসব

  প্রতিনিধি 15 October 2024 , 1:39:06 প্রিন্ট সংস্করণ

নাজমুল হোসেন, স্টাফ রিপোর্টার-

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলায় চারটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার,কাঁসরের ঘন্টা,শঙ্খের ধ্বনি, ঢাকের বোল, আর পুণ্যার্থীদের সমাগমে পাঁচ দিন ধরে জমজমাট হয়ে থাকা পূজা মন্ডপ গুলো আজ নিরব হয়ে পড়েছে। রবিবার মধ্যাহ্নের পরে থেকে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হলো সনাতন ধর্মালম্বিদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। গত বুধবার ৯ অক্টোবর মহাষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে শুরু হয় পাঁচ দিনের এই উৎসব। এবার গোয়ালন্দ উপজেলায় ২৬টি পূজা মন্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গোয়ালন্দের পৌরসভায় ২০ টি প্রজা মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হয় আর বাকি ৬টি উপজেলার চারটি ইউনিয়নে অনুষ্ঠিত হয়। আজ বিজয়া দশমী পূজা শুরু হয় গতকাল শনিবার দিবা ৬:১৪ মিনিটে ।গোয়ালন্দ পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ডের রেলস্টেশন সংলগ্ন রামকৃষ্ণ হরিজন পল্লীর মন্দিরের পূজারী শ্রী বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী এবং মন্দির কমিটির সভাপতি শ্যাম ভক্ত জানান, দশমী পূজার লগ্ন ছিল গতকাল শনিবার দিবা ৬:১৪ মিনিটে এরমধ্যেই মন্দিরের দশমীর বিহিত পূজা সম্পন্ন হয়েছে।এরপর দর্পণ বিসর্জনের মধ্য দিয়ে পাঁচ দিনের শারদীয় দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়। দর্পণ বিসর্জনের মধ্য দিয়েই মূলত দেবী দুর্গার বিসর্জন হয়। পুরোহিত শ্রী বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী আরো জানান, এবছর দোলায় অর্থাৎ পালকিতে চেপে দেবীদুর্গা মর্ত্যলোকে আগমন করেছেন,
আবার ঘোটকে অর্থাৎ ঘোড়ায় চড়ে কৈলাসে গেলেন। দোলা-অর্থাৎ পালকিতে আগমন বা গমনের ফল-দোলায়াং মকরং ভবেৎ-অর্থাৎ মহামারী বা মরকতুল্য বিষয়ে ভোগার আশঙ্কা থাকে। ঘোটক অর্থাৎ ঘোড়া আগমন বা গমনের ফল-ছাত্রভংস্ত্তরঙ্গমে অর্থাৎ ছত্রভঙ্গ -ধ্বংস বা ছন্নছাড়া ধংসাত্মক কোন ঘটনা ঘটার আশঙ্কা সৃষ্টি হওয়া বোঝায়। তবে দেবীর চরণে অঞ্জলি দিয়ে শান্তি আর কল্যান কামনা করছেন। দর্পণ বিসর্জনের পর মন্দিরে বিবাহিত নারীরা সিঁদুর খেলায় অংশ নেন। গোয়ালন্দে সাধারণত স্থানীয় মন্দিরগুলোতে সিঁদুর খেলার আয়োজন হয়ে থাকে। তরুণীরা সিঁদুর খেলায় অংশ না নিলেও দেবীকে বিজয়ার প্রণাম জানাতে অনেকে তরুণ-তরণীরা মন্দির গুলোতে আসেন। তাতে বিজয়ার বিষাদের মধ্যেও মিশে থাকে আনন্দে আবহ।
গোয়ালন্দের রামকৃষ্ণ হরিজন পল্লীতে আজ সকালে গিয়ে দেখা গেল, লাল সাদা শাড়ি পড়ে শত শত গৃহিণী বরণ ডালা ও সিঁদুরের কৌটো নিয়ে মেতেছেন দেবী দুর্গার চরণ স্পর্শ করে সঙ্গী বা উপস্থিত অন্যান্য ভক্তদের কপালে ও গালে সিঁদুর মাখিয়ে দেওয়া। গোয়ালন্দের কাজী পাড়া হরিজন কলোনী এলাকা থেকে বরণ ডালা নিয়ে আসেন নীপা রাণী ভক্ত। তাঁর স্বামীর নাম চন্দন কুমার ভক্ত ময়মনসিংহে মুক্তাগাছা থানার পৌরসভার পরিচ্ছন্ন কর্মীরকাজ করেন। তাঁদের গ্রামের বাড়ি মুক্তাগাছা রাজার বাড়ি আঠাননি গেট সংলগ্ন শহরে। স্বামীর সংসারের কল্যাণ কামনায় বরণ ডালা সাজিয়ে নিয়ে এসেছেন গোয়ালন্দ রামকৃষ্ণ হরিজন পল্লীতে। তিনি জানালেন, বিসর্জনের পর এই সিঁদুর খেলা মূলত বিবাহিত নারীদের একটি মাঙ্গলিক আচরণ। স্বামী সংসারের মঙ্গল কামনা করে সবাই বরণ ডালা সাজিয়ে নিয়ে আসেন।এই সিঁদুর দেবী দুর্গার চরণ স্পর্শ করিয়ে কৌটায় করে সংরক্ষণ করেন। এই সিঁদুর তারা সারা বছর ব্যবহার করেন ‌। যারা বরণডালা সাজিয়ে নিয়ে আসেন। তাতে থাকে ধান, কড়ি,দুর্বা, কাঁচা হলুদ, বেলপাতা, যেকোনো ধরনের অত্যান্ত একটি ফুল,মিষ্টি আর নাড়ু। আর বিশেষ করে সিঁদুরের কৌটা তো থাকবেই। এই বরণ ডালা নিয়ে দেবীকে প্রণাম করে ঘরে ফেরেন তারা। তারা বলেন এক বছরের জন্য দেবী চলে যাচ্ছেন তাই মনটা তাদের ভার হয়ে আছে বিষাদে। প্রতিমা বিদায় দিয়ে তারপর ঘরে ফিরবেন ‌। এই পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক উত্তম ভক্ত বলেন,এবার তাঁরা মন্ডপ তৈরি ও সাজসজ্জায় দেশি ও পরিবেশবান্ধব
উপকরণের প্রাধান্য দিয়ে।পূজায় প্রতিদিনই প্রসাদ বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়াও নবমীর দিনে বস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। সব মন্দির থেকে প্রতিমা একে একে বেলি ব্রিজ সংলগ্ন পদ্মা নদীর ঘাটে থানা হয় । এরপর সেখান থেকে নিয়ে ডেলি ব্রিজ সংলগ্ন পদ্মা নদীর ঘাটের দিকে বিসর্জনের প্রধান শোভাযাত্রা শুরু হয়। রাত ১০ টায় বিসর্জন হয়েছে পদ্মার নদীর ঘাটে সাধারণত এই ঘাটেই হয়ে থাকে দেবীর ভাসান।

উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক কার্তিক চন্দ্র ঘোষ বলেন, পূজা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আইন শৃঙ্খলা নিয়োজিত বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ বাহিনী, আনসার ভিডিপি সদস্যদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। কমিটি আরও ধন্যবাদ জানান, পূজা সম্পন্ন করতে পেরে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি সকল সম্প্রদায়ের মানুষের
সার্বিক সহযোগিতায় অব্যাহত ছিল বলেন।

আরও খবর

                   

জনপ্রিয় সংবাদ

শার্শায় র‌্যাবের অভিযানে গাঁজাসহ আটক-১

প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ

সুলতাপুর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের এড কমিটির প্রথম মিটিং অনুষ্ঠিত 

পাইকগাছায় বিষপানে গৃহবধূর আত্মহত্যা নাজমুল হোসেন সানা (পাইকগাছা, খুলনা) খুলনার পাইকগাছায় পারিবারিক কলহের জেরে বিষপানে হীরা মন্ডল (২২) নামের এক গৃহবধু আত্মহত্যা করেছে। সোমবার দুপুরে উপজেলার গড়ইখালী ইউনিয়নের আমিরপুর গ্রামে‌ এঘটনা ঘটে। হীরা মন্ডল ওই বাড়ির অনুপ মন্ডলের স্ত্রী। এবং পাশ্ববর্তী লস্কর ইউনিয়নের খড়িয়া গ্রামের দেবাশিষ মন্ডলের মেয়ে। তিন বছর আগে পারিবারিক ভাবে হীরা মন্ডল ও অনুপ মন্ডল বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পরিবারিক দ্বন্দ্বে শশুর-শাশুড়ির সাথে অভিমান করে তিনি বিষ পান করেন। পাইকগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ মো. সবজেল হোসেন জানান, পারিবারিক কলহের জেরে বিষপান করে আত্মহত্যা করে হীরা মন্ডল নামের এক গৃহবধু। মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য খুমেক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

চুরির অপবাদে তরুণকে গাছে ঝুলিয়ে নির্যাতন

দুর্গাপুরে গার্ড অফ অনারের মধ্য দিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধাও সাবেক সেনা ক্যাপ্টেন আইয়ুব আলী কে শেষ শ্রদ্ধা