অন্যান্য

চা-শ্রমিকদের ১০ দফা দাবি, মৌলভীবাজারে বিক্ষোভ-মিছিল ও স্মারকলিপি প্রদান

  প্রতিনিধি 25 August 2025 , 10:09:28 প্রিন্ট সংস্করণ

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি

বাজারদরের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ন্যায্য মজুরি, বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট, উৎসব বোনাস, রেশন বৃদ্ধি, ভূমির অধিকারসহ ১০ দফা দাবিতে উত্তাল হয়ে উঠেছে মৌলভীবাজারের চা-বাগান অঞ্চল।

রোববার (২৪ আগস্ট) দুপুরে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধান উপটেষ্টার ও শ্রম উপদেষ্টার বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন চা-শ্রমিক সংঘ মৌলভীবাজার জেলা কমিটির নেতারা। স্মারকলিপি প্রদানের আগে শহরের চৌমুহনা এলাকা থেকে শুরু হয়ে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।

চা-শ্রমিক নেতাকর্মীরা লাল পতাকা ও নানা দাবিসংবলিত ফেস্টুন হাতে নিয়ে রাজপথে স্লোগান দিতে থাকেন।

মিছিল শেষে চৌমুহনা এলাকায় এক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে চা-শ্রমিকদের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।

চা-শ্রমিক সংঘ মৌলভীবাজার জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক হরিনারায়ন হাজরা বলেন, চা-শ্রমিকরা প্রায় ২০০ বছর ধরে বনের বাঘ-ভাল্লুক, সাপ-জোঁকসহ হিংস্র জীবজন্তুর সঙ্গে প্রতিদিন লড়াই করে চা-শিল্পকে টিকিয়ে রেখেছে। অথচ তাদের মজুরি এখনো ন্যূনতম মানবিক মাত্রার নিচে। বর্তমানে ‘এ’ ক্লাস বাগানে দৈনিক মজুরি সর্বোচ্চ ১৮৭.৪৩ টাকা, যা ৬ সদস্যের পরিবারের জন্য একেবারেই অপ্রতুল। শ্রমিকদের রেশনও সামান্য, সপ্তাহে একজনকে মাত্র ৩.২৭ কেজি চাল/আটা প্রদান করা হয়। ক্ষেতের জমির জন্য অতিরিক্ত রেশন কর্তন করা হয়।

বক্তারা আরও জানান, প্রতিবেশী দেশের চা-শ্রমিকরা যথাযথ মজুরি ও সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন। পশ্চিমবঙ্গের শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ২৫০ রুপি, শ্রীলঙ্কায় ৬৮০ টাকা, নেপালে ১৩,০৫০ টাকা এবং চীনে ৫০,৭৬০ টাকা থেকে ৭৬,১৪০ টাকা।

 

১০ দফা দাবির মধ্যে উল্লেখযোগ্য:

– দৈনিক মজুরি বাজারদরের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করা
– প্রতি বছর ১৫% ইনক্রিমেন্ট
– দুইটি উৎসব বোনাস (বছরে
– রেশন পণ্যের পরিমাণ ও মান বৃদ্ধি
– চা-শ্রমিকদের স্থায়ী বসবাসের জন্য ভূমির মালিকানা প্রদান
– স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষা সুযোগ নিশ্চিত করা
– মাতৃত্বকালীন ছুটি ও ভাতা বাড়ানো চা

আরো শ্রমিক নেতারা বলেন, “চা-বাগানে কঠোর পরিশ্রম করেও শ্রমিকরা বাঁচার মতো মজুরি পান না। আমাদের পরিবার-পরিজনের ন্যূনতম জীবনমান নিশ্চিত করতে এই ১০ দফা বাস্তবায়ন জরুরি।

সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের সাধারণ সম্পাদক রজত বিশ্বাস, রিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মোঃ সুহেল মিয়া, হোটেল শ্রমিক নেতা সুবেল মিয়া, নারী চা-শ্রমিকনেত্রী লক্ষীমনি বাক্তি, সহ-সাধারণ সম্পাদক সুভাষ গৌড়, প্রবীণ চা-শ্রমিক নেতা স্যামুয়েল বেগম্যান, সুনীল কর ও হেমরাজ লোহার প্রমুখ।

আরও খবর

                   

জনপ্রিয় সংবাদ