প্রতিনিধি 31 May 2025 , 2:48:06 প্রিন্ট সংস্করণ
আগুন কেড়ে নিলো সাংবাদিকের স্বপ্ন চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন ‘চেতনায় বাংলাদেশ’-এর প্রিয়জন. দাফন সম্পন্ন সিনিয়র রিপোর্টার ইয়াসিন আলমের অন্তঃসত্ত্বা সহধর্মিণীর, শোকে স্তব্ধ পত্রিকা পরিবার
মোঃ ওবায়দুল্লাহ
একটা চুলার আগুন যেন একসাথে পুড়িয়ে দিয়েছে একটি সংসার, একটি গর্ভে থাকা স্বপ্ন, আর একটি সাংবাদিক পরিবারের প্রাণভোমরাকে।
‘দৈনিক চেতনায় বাংলাদেশ’ পত্রিকার সিনিয়র রিপোর্টার ইয়াসিন আলমের সহধর্মিণী ছিলেন তিন মাসের গর্ভবতী, কোমল হৃদয়ের এক মানবী অবশেষে হার মানলেন নিয়তির নির্মমতার কাছে।
গত ২২ মে, রান্নাঘরে চুলার আগুনে দগ্ধ হয়ে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ভর্তি করা হয় ঢাকার শেখ হাসিনা বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে। চিকিৎসকরা চেষ্টা করলেও, মৃত্যুকে থামানো যায়নি।
৩০ মে রাত ১১টা ৪০ মিনিটে আল্লাহর ডাকে সাড়া দিয়ে এই পৃথিবীর সফর শেষ করেন তিনি। একইসঙ্গে বিদায় নেয় তার গর্ভে থাকা অবুঝ একটি প্রাণ।
শেষ বিদায় যেন হৃদয় ভেঙে যাওয়ার শব্দ
আজ ৩১ মে শনিবার, দুপুর ৩টা ৪৫ মিনিটে শ্যামনগর উপজেলার মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের ফুলতলা গ্রামে অনুষ্ঠিত হয় প্রথম জানাযা।স্থানীয় মানুষের ভিড়ে কান্নায় ভারী হয়ে ওঠে ঈদগাহ মাঠ, যেখানে পরিচিত-অপরিচিত সকলেই তাকে বিদায় জানাতে ছুটে আসেন।
এরপর কাফনে মোড়ানো নীরব দেহটি পৌঁছায় তার বাবার বাড়ি, ভেটখালী ইউনিয়নের সোরা গ্রামে।ঈদগাহ মাঠে দ্বিতীয় জানাযা শেষে সন্ধ্যা ৫টা ৩০ মিনিটে নিজ শৈশবের গ্রামেই দ্বিতীয় জানাযা অনুষ্ঠিত হয়
সেখানেও হৃদয়বিদারক এক পরিবেশ স্বজনদের বুকফাটা আহাজারি আর প্রিয়জন হারানোর শূন্যতা যেন আকাশকেও কাঁদায়।এবং সেখানেই চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয় তাকে।
“আমার বোন ছিল সে” চোখ ভেজা কণ্ঠে শোক জানালেন পত্রিকার চেয়ারম্যান
‘দৈনিক চেতনায় বাংলাদেশ’ পত্রিকার চেয়ারম্যান কে.এম. মোজাপ্ফার হুসাইন শোক জানিয়ে বলেন
“ইয়াসিন শুধু আমার সহকর্মী নয় আমার পরিবারের একজন। আর তার স্ত্রী ছিলেন আমার আপন বোনের মতো। আমি কখনও প্রকাশ করিনি, কিন্তু আজ বলতে বাধ্য হচ্ছি এই মেয়েটি আমার জন্য ঠিক বোনের চেয়ে কম কিছু ছিল না। প্রতিনিয়ত খোঁজ নিত, পাশে থাকতো, আমাদের স্বপ্নের পত্রিকা ভালোবেসেছিল নিজের প্রাণ দিয়ে।
আজ সে চলে গেছে… আর কখনো বলবে না, ভাইয়া কেমন আছেন?
চেতনায় বাংলাদেশ পরিবারে শোকের ছায়া
সাংবাদিক সমাজ, দেশজুড়ে জেলা-উপজেলা প্রতিনিধি, সম্পাদকমণ্ডলী, পাঠক ও শুভানুধ্যায়ীরা শোক জানিয়ে তার আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া করেছেন।
তাঁর চলে যাওয়া আমাদের জন্য শুধু একজন স্ত্রী, কন্যা, মা হারানোর বেদনা নয় একটি প্রিয় মুখের নীরব ভালোবাসা, অনুপ্রেরণা আর মানবিক হৃদয়ের এক অপূরণীয় শূন্যতা।
ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।আল্লাহ তাকে জান্নাতুল ফেরদৌসের মেহমান হিসেবে কবুল করুন। আমিন।