SAGOR
স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের উন্মেষ পর্বে আলতাফ মাহমুদ নিজেকে যুক্ত করেছিলেন নানা সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে। গতকাল ৩০ আগস্ট ছিল ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’ গানের সুরকার, বাঙালি সংগীতজগতের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র আলতাফ মাহমুদের অন্তর্ধান দিবস। অন্তর্ধান দিবসে তাঁকে স্মরণ করা হলো স্মৃতিকথায় আর গানে। শনিবার সন্ধ্যা ৭টায় ছায়ানট মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয় বিশেষ শ্রদ্ধাঞ্জলি অনুষ্ঠান ‘আজিকে স্মরিও তারে’।ছায়ানটের এ আয়োজনের লক্ষ্য ছিল শহীদ আলতাফ মাহমুদের সংগীতের প্রতি ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা। শারমিন সাথী ইসলাম ময়নার একক পরিবেশন ‘ঘুমের দেশে ঘুম’ গানের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। গানের কথা, সুরের আবেদন আর শিল্পীর গায়কি—সব মিলে মিলনায়তনে সমাগত দর্শকদের মন ছুঁয়ে যায়।
পরে ছায়ানট সভাপতি সারওয়ার আলী শহীদ আলতাফ মাহমুদের অবদান ও কর্মময় নানা দিক নিয়ে আলোচনা করেন। অনুষ্ঠানে একের পর এক সংগীত পরিবেশন হয়। ফারহানা আক্তার মঞ্চে পরিবেশন করেন শহীদ আলতাফ মাহমুদের বিখ্যাত গান ‘মৃত্যুকে যারা তুচ্ছ করিল’।
এরপর বিমল চন্দ্র বিশ্বাস গেয়ে শোনান ‘রাষ্ট্র ভাষা আন্দোলন’ গান, যা ভাষা আন্দোলনের সংগ্রামী দিনগুলোর গৌরবকে মনে করিয়ে দেয়। এরপর বিজন চন্দ্র মিস্ত্রি ‘এই ঝঞ্ঝা মোরা রুখবই’ গানটি পরিবেশন করেন, যা তাঁর দৃঢ় কণ্ঠের মাধ্যমে আন্দোলনের সাহসিকতা ও সংগ্রামের চেতনা তুলে ধরে।
বিশেষ পর্বে সেন্টু রায় নির্মিত তথ্যচিত্র ‘শহীদ আলতাফ মাহমুদ’ প্রদর্শিত হয়। এতে তাঁর জীবনের সংগ্রাম, সংগীত জগতে অবদান ও ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বিশদ আলোকপাত করা হয়। শাহীন সামাদ গেয়ে শোনান, ‘আমরা পুবে-পশ্চিমে’ গানটি। পরে ওয়াহিদুল হকের লেখা নিয়ে একটি ভিডিও চিত্র প্রদর্শিত হয়।
গানের ফাঁকে ফাঁকে ছিল আলতাফ মাহমুদের কন্যা শাওন মাহমুদের বক্তব্য, যেখানে তিনি পিতার সঙ্গে কাটানো সময়ের স্মৃতিচারণা করেন। বাবার বর্ণাঢ্য জীবনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন শাওন। আয়োজনের সর্বশেষ অংশে সম্মিলিত কণ্ঠে ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো’ গানটি পরিবেশন করা হয়।
ছায়ানটের রীতি অনুযায়ী জাতীয় সংগীত পরিবেশন দিয়ে এ অনুষ্ঠানটি শেষ হয়।