প্রতিনিধি 16 August 2025 , 2:04:20 প্রিন্ট সংস্করণ
ঝালকাঠিতে প্রকাশ্যে ঘুরছে ধ র্ষ ণ মা*ম*লা*র আ*সা*মী কৃষি ব্যাংক কর্মকর্তা, ব্যবস্থা নিচ্ছে না পুলিশ
——————————————–
নিউজ ডেস্ক ::
ঝালকাঠিতে কাজের বুয়াকে বাসায় ডেকে নিয়ে ধর্ষণের অভিযোগে কৃষি ব্যাংক কর্মকর্তার নামে মামলা হলেও এখনো কোনো ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ। ধর্ষণ মামলার দুই মাস পেরিয়ে গেলেও পুলিশের নেই কোন মাথা ব্যথা। আসামি নুপুর মন্ডল ঝালকাঠি শাখায় কৃষি ব্যাংকে এজিএম হিসাবে কর্মরত থেকে দিব্যি অফিস করছে। এছাড়াও পুলিশের চোখের সামনে ঘোরাফেরা করলেও পুলিশ নিচ্ছে না কোন ব্যবস্থা।
ঘটনাটি ঘটেছে ঝালকাঠি জেলার কৃষ্ণকাঠি এলাকার ৪৪৫/১২ মল্লিক পয়েন্টে। এ বিষয়ে ঝালকাঠি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে ভুক্তভোগী নারী চলতি বছরের ২৩ জুন একটি মামলা দায়ের করেন। যাহার মামলা নং ৭৩/২০২৫।
আসামি নুপুর মন্ডল ঝালকাঠি কৃষি ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা। বিচারক ভুক্তভোগী নারীর লিখিত বক্তব্য ও জবানবন্দী শুনে ঝালকাঠি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে এফআইআর হিসাবে গণ্য করতে নির্দেশ দেন এবং নির্দেশ প্রাপ্তির ১কর্ম দিবসের মধ্যে ট্রাইবুনালকে অবগত করতে আদেশ দেন। কিন্তু মামলাটি রুজু করার দুই মাস পেরিয়ে গেলেও থানা পুলিশ এখনো কোনো ব্যবস্থা নেয়নি কৃষি ব্যাংক কর্মকর্তা ধর্ষণকারী নুপুর মণ্ডলের বিরুদ্ধে।
মামলা সূত্রে জানা যায়- আসামি নুপুর মন্ডলের স্ত্রী অসুস্থ থাকার সুবাদে দশ হাজার টাকা মাসিক বেতনে ভুক্তভোগী ওই নারীকে তার স্ত্রীর সেবা যত্ন সহ কাজের বুয়া হিসাবে বাসায় নিযুক্ত করেন। বেশ কিছুদিন পর আসামি নুপুর মন্ডলের কুদৃষ্টি পরে ও অসামাজিক কার্যকলাপের জন্য তাকে বিভিন্নভাবে প্রস্তাব দেয়।এতে অনেক চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। পরে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তাকে একাধিকবার জোরপূর্বক ধর্ষণ করে এবং ধর্ষণের ভিডিও করে রাখে। এরপর হঠাৎ নুপুর মন্ডলের স্ত্রী ঢাকা পিজি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। মারা যাওয়ার বেশ কিছুদিন পর কাজের বুয়া ভুক্তভোগী ওই নারীকে তার পাওনা টাকা নেয়ার কথা বলে বাসায় আসেতে বলে। চলতি বছরের ৫ই জুন (বৃহস্পতিবার) বেতন নিতে আসলে নুপুর মন্ডল তার শয়নকক্ষে ডেকে নিয়ে যায় হঠাৎ শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থানে স্পর্শ করে এবং জড়িয়ে ধরে। এবং বলে আমি হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে তোমাকে বিয়ে করব। এই বলে জোরপূর্বক ভুক্তভোগী ওই নারীর ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধর্ষণ করে বাসা থেকে পাঠিয়ে দেয়। গত ১০ জুন আসামি নুপুর মণ্ডলকে বিবাহের জন্য বললে তিনি বিবাহ করবে না বলে হুমকি দেয় এবং কারো কাছে কিছু জানালে অসামাজিক কার্যকলাপের গোপনে ধারণ করে রাখা ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে দিবে বলে হুমকি দেয়। এদিকে ধর্ষণের শিকার নারী কোন উপায়ান্ত না পেয়ে তার আত্মীয়-স্বজনকে জানায়। তারা বিষয়টি আমলে নিয়ে ঝালকাঠি থানার ওসির কাছে গেলে থানা কর্তৃপক্ষ অভিযোগ না নিয়ে আদালতে যেতে বলে। ভুক্তভোগী নারী আদালতে গেলে আদালত বিষয়টি আমলে নিয়ে ঝালকাঠি থানার ওসিকেই মামলাটি নিতে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে নির্দেশ দেন। থানার ওসি মোঃ মনিরুজ্জামান আদালতের আদেশে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ২৫ জুন নারীও শিশু নির্যাতন আইন ২০০০ (সংশোধিত ২০০৩)এর ৯(১) ধারায় মামলাটি রুজু করেন। যাহার মামলা নং ১৯।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত কৃষি ব্যাংক কর্মকর্তা নুপুর মণ্ডলকে ফোন দিলে তিনি সাংবাদিকের কথা শুনে কথা ঘুরিয়ে বলেন, নুপুর মণ্ডল ফোনের কাছে নেই। পরে এসে কথা বলবে।
জানা যায়, ধর্ষণকারী নুপুর মন্ডল ঝালকাঠি একাধিক সাংবাদিক ও পুলিশকে ম্যানেজ করে নিজের অপরাধ ডাকতে টাকা দিয়ে সবকিছু ধামাচাপা দিতে চেষ্টা করছেন। এ নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয়রা ও স্বজনরা জানায়, ঝালকাঠি কৃষি ব্যাংকের কর্মকর্তা নুপুর মণ্ডলের বাসায় তার অসুস্থ স্ত্রীর দেখাশোনা ও বাসার কাজের জন্য মাসিক বেতনে কাজ নেন ভুক্তভোগী নারী। কাজের বেশ কিছুদিন পর কৃষি ব্যাংক কর্মকর্তা নুপুর মণ্ডলের কুদৃষ্টি পড়ে তার উপর। ভুক্তভোগী ওই নারীকে বিভিন্নভাবে অসামাজিক কার্যকলাপের জন্য লোভ দেখায়। ধর্ষক নুপুর মন্ডলের কু-প্রস্তাবে রাজি না হলে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ভুক্তভোগী ওই নারীর ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধর্ষণ করে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি সূত্র জানায়, কিছু সংখ্যক সাংবাদিক ও প্রশাসনকে ম্যানেজ প্রক্রিয়ায় ধর্ষক নুপুর মন্ডল প্রকাশ্য ঘুরে বেড়াচ্ছে এবং দিব্যি তার অফিস করছে।
ঝালকাঠি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ মনিরুজ্জামান জানান, মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষ অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।’