নিউজ ডেস্ক
বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানার মেয়ে ও যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন লেবার সরকারের মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে আগেই অনিয়ম ও দুর্নীতির একাধিক অভিযোগ উঠেছে। যার প্রেক্ষিতে মন্ত্রিত্ব থেকে সরানোর কথা ভাবছে দেশটির প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমার। এমন খবরের মধ্যে এবার তার চাচী ও চাচাতো বোনকে নিয়ে চাঞ্চল্যকর প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ সংবামাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমস।
যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন লেবার সরকারের মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক (বাঁয়ে) ও তার চাচী শাহীন সিদ্দিক ও চাচা তারিক আহমেদ সিদ্দিক। ছবি: সংগৃহীত
যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন লেবার সরকারের মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক (বাঁয়ে) ও তার চাচী শাহীন সিদ্দিক ও চাচা তারিক আহমেদ সিদ্দিক।
শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রায় ১০ কোটি টাকা খরচ করে ইউরোপের দেশ মাল্টার পাসপোর্ট নেয়ার আবেদন করেছিলেন টিউলিপে চাচী শাহীন সিদ্দিক ও তার চাচাতো বোন বুশরা সিদ্দিক। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে গণমাধ্যমে ‘অর্থপাচার, দুর্নীতি, জালিয়াতি ও ঘুষ লেনদেনের’ অভিযোগ থাকায় পাসপোর্ট প্রত্যাখ্যান করা হয়।
ফিন্যান্সিয়াল টাইমস বলেছে, ফাঁস হওয়ার নথিতে দেখা গেছে, ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ আত্মীয় ও টিউলিপের চাচী শাহীন সিদ্দিক ২০১৩ সালে নিজের জন্য মাল্টার পাসপোর্টের আবেদন করেন। সেই সময় মাল্টার নাগরিকত্ব ও পাসপোর্ট কর্মসূচি পরিচালনার দায়িত্বে থাকা যুক্তরাজ্যভিক্তিক অভিবাসন বিষয়ক পরামর্শ প্রতিষ্ঠান হ্যানলি অ্যান্ড পার্টনার্স তা প্রত্যাখ্যান করে।
প্রত্যাখ্যানের কারণ হিসেবে প্রতিষ্ঠানটি ‘প্রচ্ছায়া’ নামের একটি কোম্পানির সঙ্গে তার সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি উল্লেখ করে যে কোম্পানির বিরুদ্ধে ‘ঢাকায় অবৈধভাবে মূল্যবান সরকারি জমি বাগিয়ে নেয়ার’ অভিযোগ বাংলাদেশি বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রকাশ হয়েছিল।শাহীন সিদ্দিক সাবেক সেনা কর্মকর্তা ও শেখ হাসিনার নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিকের স্ত্রী। জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার ১৬ বছরের শাসনের অবসানের পর গত অক্টোবরে তারিক ও শাহীনের ব্যাংক হিসাব জব্দ করে সরকার।
প্রতিবেদন মতে, তারিকের পরিবার, যারা এখন শেখ হাসিনার শাসনামলে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ব্যবহার করে দেশ ও দেশের নাগরিকদের সম্পদ হাতিয়ে ব্যক্তিগত সম্পদে পরিণত করার অভিযোগের কেন্দ্রে রয়েছে, কীভাবে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করেছিল পাসপোর্ট আবেদনের নথিতে তার বিশদ বিবরণ রয়েছে।
পাসপোর্ট প্রত্যাখ্যানে হ্যানলির সিদ্ধান্তে যে অভিযোগের কথা উল্লেখ করা হয় তা মূলত ২০১২ সালের। শাহীন সিদ্দিকের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত প্রচ্ছায়া নামে একটি কোম্পানি ঢাকার মূল্যবান জমি দখল করেছিল। শাহীন তার ২০১৩ সালের পাসপোর্ট আবেদনে প্রচ্ছায়াতে তার ভূমিকা উল্লেখ করেছিলেন।
প্রথমবার প্রচ্ছায়ার কথা উল্লেখ করে পাসপোর্ট না পাওয়ায় ২০১৫ সালে দ্বিতীয়বার আবেদন করেন শাহীন সিদ্দিক। সেখানে তিনি দাবি করেন, চট্টগ্রামের ‘দ্য আর্ট প্রেস প্রাইভেট লিমিটেড’ নামের একটি কোম্পানির পরিচালক তিনি। যেটি ১৯২৬ সালে তার বাবা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তবে এই কোম্পানি নিয়ে সন্তষ্ট না হওয়ায় তাকে ও তার মেয়েকে ওই সময় আর পাসপোর্ট দেয়া হয়নি।