প্রতিনিধি 29 July 2025 , 5:06:45 প্রিন্ট সংস্করণ
যশোর, ২৯ জুলাই ২০২৫:
যমুনার অভয়নগর ও মনিরামপুর উপজেলার সংযোগস্থল টেকা নদীর ওপর নির্মিত টেকারঘাট কাঠের সেতুটি আকস্মিকভাবে ভেঙে পড়ায় হাজার হাজার মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাত্রা থমকে গেছে। গত রবিবার (২৭ জুলাই) সেতুর মাঝ বরাবর ধসে পড়লে দুই উপজেলার মধ্যে সরাসরি যোগাযোগ কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।
দীর্ঘদিনের আশঙ্কা, অবশেষে বিপর্যয়
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, বহু বছর ধরেই টেকারঘাটের এই কাঠের সেতুটি ছিল জীর্ণ ও নড়বড়ে। প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে শত শত ছোট-বড় যানবাহন আর অসংখ্য পথচারী এই সেতু পারাপার হতেন। একটি বড় দুর্ঘটনার আশঙ্কায় থাকলেও, কার্যকর কোনো সংস্কার বা নতুন সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। সেই আশঙ্কাই সত্যি হলো গত রবিবার, যখন সেতুর কাঠামো আর ভার সইতে না পেরে ভেঙে পড়ল।
স্থানীয়রা কিছু জোড়াতালি দিয়ে আপাতত চলাচলের ব্যবস্থা করলেও, ভারি যানবাহন চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ। এর ফলে অভয়নগর ও মনিরামপুরের মধ্যে পণ্য পরিবহন, যাতায়াত এবং স্বাভাবিক জীবনযাত্রা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
থমকে গেছে দৈনন্দিন জীবন
এই সেতু ভেঙে যাওয়ায় সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন কৃষক, শ্রমিক, ছাত্রছাত্রী এবং সাধারণ মানুষ। মনিরামপুর থেকে অভয়নগরের নওয়াপাড়া শহরে যেতে আগে যেখানে ২০-৩০ মিনিট লাগতো, এখন বিকল্প পথে প্রায় দ্বিগুণ সময় লাগছে।
মনিরামপুরের একজন ভুক্তভোগী কৃষক হতাশা ব্যক্ত করে বলেন, “আমরা ফসল বাজারজাত করতে পারছি না। ঘুরপথে যেতে হয়, এতে খরচও বেড়ে যাচ্ছে।”
এক স্কুল শিক্ষার্থী তার দুর্ভোগের কথা জানায়, “প্রতিদিন এই সেতু দিয়েই স্কুলে যেতাম। এখন অনেক দূর ঘুরে যেতে হচ্ছে। পরীক্ষার সময় হলে আরও বিপদে পড়তে হবে।”
স্থায়ী সমাধানের দাবি জোরালো হচ্ছে
এলাকাবাসী জানিয়েছেন, এই অস্থায়ী মেরামত কোনোভাবেই যথেষ্ট নয়। তারা অভয়নগর উপজেলা প্রশাসনের কাছে দ্রুত একটি স্থায়ী এবং মজবুত সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন।
স্থানীয়রা বলছেন, “সেতুটি আমাদের দুই উপজেলার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দীর্ঘদিন ধরে মেরামতের দাবি জানানো হলেও কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।”
ভুক্তভোগীরা আশঙ্কা করছেন, দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া না হলে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তারা অভয়নগর উপজেলা প্রশাসন এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের প্রতি দ্রুত সেতুটি পুনর্নির্মাণের আহ্বান জানিয়েছেন। এই সেতুর অভাবে অঞ্চলের অর্থনীতি এবং সাধারণ মানুষের জীবন কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তা বলাই বাহুল্য।