অন্যান্য

ঢাকা সাভারে স্বাধীনতা দিবসে শ্রদ্ধা জানাতে পুরোপুরি প্রস্তুত জাতীয় স্মৃতিসৌধ

  প্রতিনিধি 25 March 2025 , 3:57:22 প্রিন্ট সংস্করণ

 

 

রাজ রোস্তম আলী স্টাফ রিপোর্টার :

 

ঢাকা সাভার নবীনগর

স্মৃতিসৌধ স্বাধীনতা দিবসে শ্রদ্ধা জানাতে পুরোপুরি প্রস্তুত জাতীয় এই স্মৃতিসৌধ

রাত পোহালেই ২৬শে মার্চ, দেশের ৫৫তম মহান স্বাধীনতা দিবস। দিনটিতে ১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে পরাধীনতা ঘোঁচাতে জাতির যে বীর সন্তানেরা নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছেন তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবে সমগ্র বাংলার জাতি।

 

এদিন সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন রাষ্ট্রপতি, প্রধান উপদেষ্টাসহ উপদেষ্টা পরিষদের অন্যান্য সদস্য ও সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ। শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে হাজারো মানুষের ঢল নামবে স্মৃতিসৌধে। ফুলে ফুলে ভরে উঠবে জাতীয় স্মৃতিসৌধের বেদি। এ লক্ষ্যে স্মৃতিসৌধ পুরোপুরি প্রস্তুত করা হয়েছে।

ইতোমধ্যে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা নিবেদন নির্বিঘ্ন করতে নেওয়া হয়েছে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সবুজে ঘেরা ১০৮ হেক্টর জমির ওপর নির্মিত স্মৃতিসৌধে সৌন্দর্যবর্ধনসহ নানা কাজ সম্পন্ন করেছে সাভার গণপূর্ত বিভাগের কর্মীরা। যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি পালনের লক্ষ্যে পুরো স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণ সাজিয়ে তোলা হয়েছে বর্ণিল সাজে। রঙ তুলির আঁচর পরেছে স্মৃতিসৌধ চত্বরের বিভিন্ন সড়ক, সিঁড়িতে। বিভিন্ন স্থানে সংস্কারসহ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ শেষ করা হয়েছে।

সোমবার (২৫ মার্চ) স্মৃতিসৌধ চত্বর ঘুরে দেখা যায়, মহান স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের প্রস্তুতির শেষ মুহূর্তে ব্যস্ত সময় পার করছেন সাভার গণপূর্ত বিভাগের কর্মীরা। এদের মধ্যে কয়েকজন মিলে সড়কের পাশে ফাঁকা জায়গায় পরিকল্পনা অনুযায়ী ঘাসের চারা রোপণ করছেন। স্মৃতিসৌধ চত্বর পানি দিয়ে ধুয়ে মুছে পরিষ্কার করা হচ্ছে, রঙতুলির আঁচড়ে ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে বেদিসংলগ্ন সিঁড়িগুলো। সবুজ ঘাসের গালিচা কেটে ছেঁটে নান্দনিক করে তোলা হচ্ছে। পুরোনো ফুলের গাছগুলোকে পরিচর্যা করার পাশাপাশি রোপণ করা হয়েছে নানা জাতের ফুলের গাছ। ভবনের দেয়ালে ঝোলানো হয়েছে বর্ণিল আলোকবাতি।

জাতীয় স্মৃতিসৌধের ইনচার্জ সাভার গণপূর্ত বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, মহান স্বাধীনতা দিবস উদযাপন উপলক্ষে পুরো স্মৃতিসৌধ চত্বর ধুয়ে মুছে পরিষ্কার-পরিপাটি করা হয়েছে। এছাড়া পুরো চত্বরে ফুল দিয়ে সাজানো, রঙ তুলির কাজ, সিসি ক্যামেরা স্থাপন, আলোকসজ্জা, লেক সংস্কারসহ সকল কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়েছে। প্রায় দেড় মাস ধরে চলা এ কার্যক্রমে শতাধিক কর্মী কাজ করেছেন। নিরাপত্তার লক্ষ্যে গত ১৬ মার্চ থেকে স্মৃতিসৌধে দর্শনার্থীদের প্রবেশ সংরক্ষিত করা হয়েছে। ২৬ মার্চ রাষ্ট্রপতি, প্রধান উপদেষ্টার শ্রদ্ধা নিবেদনের পর স্মৃতিসৌধ সকলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।

 

Author

আরও খবর

                   

জনপ্রিয় সংবাদ

নাসিরনগর প্রেসক্লাবে সভাপতির অব্যাহতি

দুর্গাপুরে কৃষি প্রযুক্তি মেলার শুভ উদ্বোধন 

মনিরামপুর মাধ্যমিক অফিস যেন ঘুসের মোকাম

নাসিরনগরে বিএনপির আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

একটা কিনলে অন্যটা কেনার টাকা থাকে না ঝিনাইদহ প্রতিনিধি চার সদস্যের পরিবার নিয়ে ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলার ঋষিপাড়ায় থাকেন ফজলুল রহমান। ভ্যান চালিয়ে দিনে আয় করেন ২৫০-৩০০ টাকা। এর অর্ধেক চলে যায় কিস্তি দিতে। বাকি টাকায় দৈনন্দিন সংসার খরচ চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন। গত বৃহস্পতিবার সকালে ফজলুর হরিণাকুণ্ডুর একটি দোকানে ডিম কিনতে এসেছিলেন। দাম শুনেই তিনি হতবাক। প্রতি হালি ডিমের দাম চাওয়া হচ্ছে ৫৬ টাকা। ফজলুর লোকমুখে শুনেছেন, সরকার ডিমের দাম কমিয়েছে। কিন্তু বাস্তবে দাম এত বেশি কেন? জিজ্ঞেস করতেই দোকানি বলেন, ‘নিলে নেন, না হলে অন্যখানে যান।’ পকেটের অবস্থা ভালো ছিল না ফজলুরের। বাধ্য হয়ে ফিরে যাচ্ছিলেন তিনি। এর আগে গিয়েছিলেন স্থানীয় কাঁচাবাজারে। শাকসবজিসহ সব পণ্যের অস্বাভাবিক দামে হতাশা ঘিরে ধরে তাঁকে। আয়ের সঙ্গে খরচের হিসাব মেলাতে পারছিলেন না। ফজলুর রহমান বলেন, ১৫ দিন আগেও প্রতি পিস ডিমের দাম ছিল ১২ টাকা। এখন সেটার দাম কোথাও ১৩ টাকা ৫০ পয়সা আবার কোথাও ১৪ টাকা। হালিতে এই ১৫ দিনের ব্যবধানে ডিমের দাম বেড়েছে ৬-৮ টাকা। শাকসবজি, মাছ, আলু, পেঁয়াজ, কাঁচামরিচসহ সবকিছুর দামই বেড়েছে। এভাবে দ্রব্যমূল্য বাড়তে থাকলে সীমিত আয়ে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে না খেয়ে থাকতে হবে। ২৫০-৩০০ টাকা আয়ের মধ্যে ঋণ নিয়ে কেনা ভ্যানের কিস্তির জন্য দিতে হয় ১৫০ টাকা। বাকি ১০০-১৫০ টাকায় চাল, ডাল, তেল আর তরিতরকারি কেনা যায় না। একটা কিনলে অন্যটা কেনার টাকা থাকে না। কাঁচাবাজারে কেনাকাটা করতে এসেছিলেন সাগর হোসেন। তিনি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত। হরিণাকুণ্ডু পৌরসভার শুড়া এলাকায় থাকেন স্ত্রী, দুই সন্তান ও মা-বাবা নিয়ে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে ছয় সদস্যের সংসারে খরচ চালাতে হিমশিম অবস্থা তাঁর। সাগর বলেন, সপ্তাহের ব্যবধানে সবকিছুর দাম বেড়েছে। কোনো কোনো পণ্যের দাম দ্বিগুণের বেশি বেড়েছে। বাজার নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্টদের পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান তিনি। ডিমের বাজার নিয়ন্ত্রণে ১৫ অক্টোবর সরকারের কৃষি বিপণন অধিদপ্তর মূল্য নির্ধারণ করে দেয়। উৎপাদক পর্যায়ে ১০ টাকা ১৯ পয়সা, পাইকারিতে ১১ টাকা ১ পয়সা এবং খুচরায় ১১ টাকা ৮৭ পয়সা প্রতি পিসের ডিমের দাম নির্ধারণ করা হয়। বুধবার থেকে এ দামে ডিম বিক্রির কথা থাকলেও বাজারের চিত্র ভিন্ন। একেক জায়গায় একেক রকম দাম নেওয়া হচ্ছ। উপজেলা শহরের কোথাও ১৩ টাকা ৩৩ পয়সা, কোথাও ১৩ টাকা ৫০ পয়সায় বিক্রি হচ্ছে। গ্রামাঞ্চলের বাজারে ১৪ টাকা করে। লাগামহীন ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির দামও। বাজারভেদে প্রতি কেজি ব্রয়লার বিক্রি হচ্ছে ১৮০-২০০ টাকায়। সোনালি মুরগি ২৮০-৩০০ টাকা কেজি। বৃহস্পতিবার সকালে শহরের কাঁচাবাজারে প্রতি কেজি কাঁচামরিচ বিক্রি হয় ২৮০-৩২০ টাকায়। পেঁয়াজের কেজি ১২০ টাকা। লাউ পিস ৫০-৬০ টাকা, আলুর ৬০ টাকা কেজি। ৩০ টাকার মিষ্টি কুমড়া বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকা। ৪০ টাকার কাঁচাকলা ৬০ টাকা। ৪০ টাকার শসা বিক্রি হয়েছে ৬০ টাকায়। গত সপ্তাহের চেয়ে এদিন ঢ্যাঁড়শের দাম কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫০ টাকায়। প্রতি কেজি পেঁপে ৩০ টাকা থেকে হয়েছে ৪০-৫০ টাকা। বেগুন বিক্রি হতে দেখা গেছে ১৩০-১৫০ টাকায়। ৫০ টাকার নিচে বাজারে সবজি মিলছে না। ব্যবসায়ীদের দাবি, সরবরাহ কম থাকায় দাম বেড়েছে। কাঁচাবাজারের বিক্রেতা খাইরুল ইসলামের ভাষ্য, কয়েকদিন আগে টানা বৃষ্টি হয়েছে। তা ছাড়া অনেক এলাকায় বন্যা হচ্ছে। মানুষের সবজি ও কাঁচামালের ক্ষতি হয়েছে। এতে সরবরাহ কম। তাই সব কিছুর দাম বেড়েছে। দাম কমাতে হলে আগে আড়তদারদের নিয়ন্ত্রণের আহ্বান জানান পাইকারি বিক্রেতা আব্দুল খালেক। তিনি বলেন, আড়ত থেকে কিনে সামান্য লাভে বিক্রি করেন। হরিণাকুণ্ডু উপজেলা মোড়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে আশরাফুল ইসলামের। তাঁর দাবি, খামারির কাছ থেকেই প্রতি পিস ডিম কিনতে হয় ১৩ টাকা ২০ পয়সায়। এর সঙ্গে পরিবহন খরচ রয়েছে। খুচরায় বিক্রি করছেন ১৩ টাকা ৩৩ পয়সায়। আনার সময় অনেক ডিম ভেঙে যায়। ফলে লাভ থাকে না। শুধু ক্রেতা ধরে রাখতেই ডিম বিক্রি করছেন। উৎপাদক ও পাইকার পর্যায়ে দাম নিয়ন্ত্রণ না করতে পারলে ডিম বা ব্রয়লার মুরগির দাম খুচরা বাজারে কমবে না বলে মনে করেন তিনি। মাছের বাজারেও একই অবস্থা। এদিন সকালে হরিণাকুণ্ডু শহরের দৈনিক বাজারে প্রতি কেজি রুই ও কাতলা প্রকারভেদে বিক্রি হয়েছে ২৫০-৩৫০ টাকায়। পাঙাশ ও তেলাপিয়ার দর ১৫০-২৫০ টাকা; চ্যাঙ ও দেশি পুঁটি বিক্রি হয় ৩২০-৫০০ টাকায়। মাছ বিক্রেতা জয়নাল মিয়ার ভাষ্য, আড়তে তেমন মাছ আসছে না। অল্প পরিমাণে যা আসছে, অনেক বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। আড়তদার কামাল উদ্দিন বলেন, বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের আড়তে মাছ আসে। কিছু এলাকায় বন্যা ও অতিবৃষ্টির কারণে প্রচুর ঘের-পুকুর তলিয়ে গেছে। এ ছাড়া প্রচুর মাছ মারাও গেছে। ফলে সরবরাহ কমেছে, তাই দাম বেশি। ঝিনাইদহ ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক নিশাত মেহের বলেন, এই এলাকায় খামারি নেই। ব্যবসায়ীরা পাবনা বা অন্য এলাকা থেকে বেশি দামে ডিম কিনেন। ফলে সরকারের বেঁধে দেওয়া দর নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। তবুও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলেছেন। ডিমসহ সব নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন। প্রতিনিয়ত বাজার তদারকি চলছে জানিয়ে ইউএনও আক্তার হোসেন বলেন, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে নানামুখী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

ঘর থেকে মাটিচাপা দেওয়া যুবকের মরদেহ উদ্ধার