অন্যান্য

দিয়াবাড়ি ফাইটার জেট বিধ্বস্ত ট্র্যাজেডি: শোকের পাশাপাশি জনমনে ক্ষোভ, ‘ফ্যাসিবাদী হাসিনার’ দুর্নীতি-অব্যবস্থাপনাকে দুষছেন নেটিজেনরা

  প্রতিনিধি 21 July 2025 , 5:57:52 প্রিন্ট সংস্করণ

ঢাকা অফিস:

রাজধানীর দিয়াবাড়িতে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ ফাইটার জেট বিধ্বস্তের ঘটনায় গোটা দেশে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। একই সাথে, এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনার পেছনে সাবেক স্বৈরাচার শেখ হাসিনার ক্ষমতা থাকাকালীন চরম অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতিকে দায়ী করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং সাধারণ মানুষের মাঝে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ পাচ্ছে। নেটিজেনদের অভিযোগ, এই ঘটনা হাসিনার ফ্যাসিবাদী শাসনের অব্যবস্থাপনারই ফল।
সোমবার (২১ জুলাই) দুপুরে উত্তরায় মাইলস্টোন কলেজ ক্যাম্পাসের কাছে এই প্রশিক্ষণ বিমানটি বিধ্বস্ত হয় এবং এতে আগুন ধরে যায়। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর (আইএসপিআর) জানিয়েছে, বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর এফ-৭ বিজিআই প্রশিক্ষণ বিমানটি দুপুর ১টা ৬ মিনিটে উড্ডয়ন করে এবং উড্ডয়নের কয়েক মিনিটের মধ্যেই এটি বিধ্বস্ত হয়। ফায়ার সার্ভিস প্রাথমিকভাবে একজনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে ঘটনাস্থলে আহত অবস্থায় একাধিক শিক্ষার্থীকে সেনাবাহিনীর গাড়িতে ওঠাতে দেখা গেছে।
জনতার অভিযোগ: পুরনো বিমান ও দুর্বল প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা
নেটিজেনদের ধারণা, বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমানগুলো অনেক পুরোনো হয়ে গেছে এবং দেশপ্রেমিক বিমানবাহিনী কোনোভাবে সেগুলোকে রক্ষণাবেক্ষণ করে চালিয়ে রেখেছে। তাদের মতে, গত ১৭ বছরে হাসিনার সরকার বিমান বাহিনীর উন্নয়নে কোনো কাজ করেনি, বরং ভারতের ‘গোলামী’ করার জন্য বিমান বাহিনীকে দুর্বল করে রেখেছে। সচেতন মহল মন্তব্য করেছেন যে, আমাদের অসীম সাহসী ফাইটার পাইলটেরা প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই পুরোনো বিমানগুলো চালাচ্ছেন। বিগত কয়েক বছরে অল্প সময়ের ব্যবধানে বেশ কয়েকটি বিমান বিধ্বস্তের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে তিন-চার মাস আগে চট্টগ্রামে একজন অভিজ্ঞ প্রশিক্ষক বিমান বিধ্বস্ত হয়ে মারা যান।
প্রতিরক্ষা খাতে দুর্নীতি ও পেশাদারিত্বের অবক্ষয়?
মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনার পরপরই ফেসবুক, টুইটার এবং অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অসংখ্য পোস্ট, মন্তব্য ও হ্যাশট্যাগ দেখা যায়, যেখানে এই দুর্ঘটনার তীব্র নিন্দা জানানো হয়। নেটাগরিকরা দুর্ঘটনায় নিহতদের মাগফিরাত কামনা ও শোকসন্তপ্ত পরিবারগুলোর প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন এবং আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেছেন। একই সাথে, তারা এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি তুলেছেন।
জনগণের অভিযোগ, প্রতিরক্ষা খাতে ব্যাপক দুর্নীতি এবং অব্যবস্থাপনার কারণে দেশের সামরিক সক্ষমতা দুর্বল হয়ে পড়েছে। তারা মনে করছেন, এই দুর্ঘটনা তারই ফল। প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম ক্রয়ে অনিয়ম এবং পুরাতন ও ত্রুটিপূর্ণ সরঞ্জামের ব্যবহারকে এই দুর্ঘটনার মূল কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হচ্ছে। এমন অভিযোগও রয়েছে যে, ‘খুনি হাসিনার’ আমলে সামরিক বাহিনীকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করার কারণে তাদের পেশাদারিত্ব ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং এর ফলেই এমন দুর্ঘটনা ঘটছে।
অনেকের মতে, সাবেক আওয়ামী লীগ সরকারের দীর্ঘ শাসনামলে বিভিন্ন খাতে ব্যাপক দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনা হয়েছে, যার প্রভাব সামরিক বাহিনীতেও পড়েছে। বিমান ক্রয়ের স্বচ্ছতা, রক্ষণাবেক্ষণ এবং প্রশিক্ষণ ব্যবস্থার মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। অনেকে মনে করছেন, সরকারের সামগ্রিক অদক্ষতা ও দুর্নীতির কারণেই এ ধরনের দুর্ঘটনা ঘটছে।
ফাইটার জেট বিধ্বস্তের ঘটনায় ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি সেনাবাহিনীর সদস্যরা উদ্ধার কাজ করছেন।

আরও খবর

                   

জনপ্রিয় সংবাদ