প্রতিনিধি 13 June 2025 , 11:26:34 প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক
দীর্ঘ ছুটি শেষে জীবিকার তাগিদে ঢাকায় ফিরছে মানুষঈদুল আজহা উপলক্ষে দীর্ঘ ১০ দিনের ছুটি পেয়েছিলেন সরকারি চাকরিজীবীরা। বেসরকারি চাকরিজীবীসহ অন্যান্য পেশাজীবীরাও তুলনামূলক বেশি দিন ছুটি পেয়েছেন এবার। দেখতে দেখতে শেষ হয়ে এলো সে ছুটি। ইতোমধ্যে অনেক অফিস ও প্রতিষ্ঠানে কর্মব্যস্ততা শুরু হয়েছে। তাই, ঈদ উদযাপন শেষে জীবিকার তাগিদে ঢাকায় ফিরতে হচ্ছে কর্মজীবী মানুষদের।দীর্ঘ ছুটির শেষদিকে শুক্রবার (১৩ জুন) সকাল থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন প্রবেশপথে মানুষের ঢল নেমেছে। গুলিস্তান, গাবতলী, ফুলবাড়িয়া, সায়েদাবাদ, ধোলাইপাড় ও রায়েরবাগ এলাকায় দেশের নানা প্রান্ত থেকে আসা মানুষদের উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে। কাপড়ের ব্যাগ ও কোরবানির মাংস হাতে ঢাকায় ফিরছেন চাকরিজীবী, শিক্ষার্থীসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ।
গুলিস্তানে দেখা গেছে, শত শত মানুষ নামছেন বাস ও মাইক্রোবাস থেকে। তার পর রিকশা, অটোরিকশা বা লোকাল বাসে করে যাচ্ছেন নিজ নিজ গন্তব্যে।বাংলাদেশ সচিবালয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ে চাকরি করেন আমানুর রহমান। তিনি রাইজিংবিডি ডটকমের এ প্রতিবেদককে বলেন, গ্রামে পরিবারের সঙ্গে ঈদ করার আনন্দের তুলনা হয় না। কিন্তু, ঢাকায় ফিরতেই হচ্ছে, কাজ তো থেমে থাকে না। বাসে সিট পেতে কষ্ট হয়েছে। ভাড়াও আগের চেয়ে অনেক বেশি।মাদারীপুর থেকে ঢাকায় আসা আসমা খাতুন বলেন, “আমার স্কুল শুরু হবে রবিবার (১৫ জুন)। তাই, ভিড় ঠেলে ফিরতে হলো। বাসে প্রচণ্ড ভিড় ছিল। ৩০০ টাকার বাসভাড়া ৫০০ টাকা দিতে হয়েছে।”বাংলাদেশ বাস মালিক সমিতির সদস্য তোফায়েল হোসেন বলেন, প্রতি ঈদের আগে-পরে বাসে মানুষের চাপ বাড়ে। এবার ছুটি লম্বা হওয়ায় অনেকেই দেরিতে ফিরছেন। অতিরিক্ত বাস দেওয়া হয়েছে। কিন্তু, যাত্রীসংখ্যা এত বেশি যে সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
খুলনা ও বরিশাল বিভাগের যাত্রীরা পদ্মা সেতু ও এক্সপ্রেসওয়ে হয়ে রায়েরবাগ ও ধোলাইপাড় এলাকা দিয়ে রাজধানীতে প্রবেশ করছেন। সকাল থেকে এসব এলাকায় যাত্রীদের বাস থেকে নেমে রিকশা বা অটোরিকশায় করে গন্তব্যে যেতে দেখা গেছে। চট্টগ্রাম ও সিলেট অঞ্চল থেকে আসা যাত্রীরা সায়েদাবাদ এলাকা দিয়ে রাজধানীতে ফিরছেন।ভাড়া নিয়ে যাত্রীদের ক্ষোভ
অটোরিকশায় অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ করেছেন অনেক যাত্রী। সুজাতা নামের এক নারী জানান, ফুলবাড়িয়া থেকে শনিরআখড়ার ভাড়া ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা, আজ দিতে হয়েছে ৬০০ টাকা। আমি খুলনা থেকে এসেছি। বাসেও দ্বিগুণ ভাড়া দিতে হয়েছে।
সিএনজি অটোরিকশার চালক মো. কাদের বলেন, সকাল থেকেই যাত্রীর চাপ বেশি। অনেকেই দূরে যেতে চান। ফেরার পথে যাত্রী পাই না বলে ভাড়াও একটু বেশি নিতে হচ্ছে।
টার্মিনালে ভিড়, নিরাপত্তা ভালো
গুলিস্তান, ফুলবাড়িয়া ও সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল এলাকায় যাত্রীদের ভিড় স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় কয়েকগুণ বেশি। ট্রাফিক পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা টার্মিনালগুলোতে তৎপর আছেন।দালাল বা পকেটমারদের বিষয়ে সতর্ক থাকতে যাত্রীদের পরামর্শ দিচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
ঢাকা মহানগর ট্রাফিক পুলিশের যাত্রাবাড়ী অঞ্চলের এসআই মনির হোসেন বলেন, ফিরতি যাত্রার চাপ সকাল থেকেই বাড়ছে। এখনো বড় কোনো যানজট হয়নি। তবে, ধোলাইপাড়, রায়েরবাগ ও পোস্তগোলায় যাত্রীরা হঠাৎ সড়কে নামায় দুর্ঘটনার ঝুঁকি বেড়েছে। আমরা সতর্ক অবস্থানে আছি।
চাপ থাকবে আরো দুই দিন
সরকারি চাকরিজীবীদের ছুটি শেষ হচ্ছে শনিবার (১৪ জুন)। ফলে, আজ ও আগামীকাল ঢাকামুখী মানুষের চাপ আরো বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। পরিবহন সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন, আগামী দুই দিনের পর পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হবে।