শাহরিয়া হাসান উল্লাস
জামালপুরের মেলান্দহে মেধাবী স্কুল ছাত্রী আশা মনিকে ধর্ষন ও আত্মহত্যার রোচনার মামলার আসামী তামিম আহাম্মেদ স্বপন এর জামিন বাতিল ও তার ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার (১৯ মার্চ) দুপুরে মালঞ্চ আব্দুল গফুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও শাহজাতপুর এলাকাবাসী এ মানববন্ধনের আয়োজন করে।
জামালপুর-দেওয়ানগঞ্জ মহাসড়কে আয়োজিত এ মানববন্ধনে "সাড়া বাংলাই খবর দে, ধর্ষনকারীর কবর দে"আমার বোন কবরে, খুনী কেন বাহিরে, “আশা মনি কবরে, আশা মনির ধর্ষনকারী কেন বাইরে, বিচার চাই বিচার, চাই ধর্ষনকারীর বিচার চাই”সহ নানান শ্লোগানে জামিনে বের হয়ে হুমকি দেওয়া আসামী স্বপনের জামিন বাতিল করে তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন তারা।
মেয়ে আশা মনির স্মৃতিজড়িত স্কুল ব্যাগ নিয়ে ধর্ষকের বিচারের দাবিতে মানববন্ধনকালে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে জ্ঞ্যান হারিয়ে ফেলেন মা শিলা বেগম।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন ধর্ষনের শিকার নিহত স্কুল ছাত্রী আশা মনির সহপাঠী সারজিনা আক্তার সুমি, সাদিয়া ইসলাম সাড়া মনি, মিহাদ হাসান, এম.এ গফুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কফিল উদ্দিন মোল্লা। বাবা আবু সাইদ ও মা শিলা বেগমসহ আরো অনেকে।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ২০২২ সালে স্কুলে আসার পথে শিক্ষার্থী আশা মনিকে জোরপূর্বক রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে ধর্ষন করে আসামী তামিম আহম্মেদ স্বপন। যার ফলে লোক লজ্জায় আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয় আশা মনি। এমন জঘন্যতম অপরাধ করার পরেও আদালত থেকে কিভাবে জামিন পায় সে। আশা মনি কবরেও থাকলেও আসামি স্বপনসহ অন্যানরা খোলা আকাশে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এখন উল্টো আশা মনির বাবাকে মামলা তুলে নিতে প্রান নাশের হুমকি দিচ্ছে।
এসময় তারা অতিদ্রুত আসামী স্বপনের জামিন বাতিল করে গ্রেফতার ও তার ফাসির দাবি জানান।
এদিকে জামিনে বের হয়ে আসামী তামিম আহম্মেদ স্বপন সন্ত্রাসী নিয়ে আশা মনির বাবাকে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য
চাপ দেয়। মামলা তুলে না নিলে তাকে প্রাননাশের হুমকি দেয় বলে জানান আশা মনির বাবা আবু সাইদ মিয়া।
এ ঘটনায় থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন তিনি।
অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করে যথাযথ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন
মেলান্দহ থানার অফিসার ইনচার্জ শফিকুল ইসলাম।
উল্লেখ, ২০২২ সালে বান্ধবীদের সাথে স্কুলে যাওয়ার পথে রাস্তা থেকে জোর পুর্বক তুলে নিয়ে একটি বাড়ীতে দিনভর একটি আটকে রেখে আশামনিকে যৌন নির্যাতন করে তামিম আহম্মেদ স্বপন। এরপর আশামনি বাড়ি ফিরে নিজের ঘরে লোক লজ্জার ভয়ে দুটি চিরকুট লেখে ফাসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করে।
চিরকুটে আসামী তামিমের নাম উল্লেখ সহ মান সম্মানের দিক চেয়ে আত্মাহত্যার কথা জানিয়ে ,‘তামিম আমাকে সারাদিন এক রুমে আটকাইছে। তামিম আমাকে খুব ডিস্টার্ব করত ও আমাকে বলেছে ওর সাথে দেখ করলে সে আমার জীবন থেকে চলে যাবে। কিন্তু ও আমার সাথে খুব খারাপ কিছু করেছে যা বলার মত না’।
মা, পারলে ক্ষমা করো। যদি কোনো বিচার করো, ছেলেটার নাম তামিম। মা-বাবা তোমরা ভালো থেকো। আমাকে ভুলে যেও। আমি বেঁচে থাকলে তোমাদের সম্মান শেষ হয়ে যেতো। বাবা-মা আবার বলছি ভালো থেকো। গুড বাই, সোনা বাবা মা।’ এসব লিখে।