হাবিব আমজাদ,
নওগাঁ।
গতকাল ১৯/১০/২৪ ইং শনিবার নওগাঁ নওজোয়ান মাঠে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামের সদস্য (রুকন) সম্মেলন সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সকাল ১০ টা থেকে সম্মেলন সভার কার্যক্রম শুরু হয়েছে এবং বিকেল ০৪: ৩০ টায় সমাপ্তি করেন।
প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য প্রদান করেন ডক্টর শফিকুর রহমান আমীর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলাম।
সভাপতি ছিলেন খন্দকার মোহাম্মদ আব্দুর রাকিব আমীর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী নওগাঁ জেলার পূর্ব শাখা।বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য প্রদান করেন অধ্যক্ষ মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিন রাজশাহী অঞ্চল পরিচালক নির্বাহী পরিষদ সদস্য বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। সহঃ পরিচালক মোঃ রফিকুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও রাজশাহী মহানগর আমীর ডঃ মোঃ কেরামত আলী, কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য, ইঞ্জিনিয়ার মোঃ এনামুল হক, এ্যড. আ,স,ম সায়েম, অধ্যাপক মোঃ মহিউদ্দিন, মাওলানা হাবিবুর রহমান।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় আমীর ডাঃ শফিকুর রহমান বলেছেন মানুষকে ধোকা দিলে কি হয় তা সারা বিশ্ব দেখেছে। ধোকা দেয়া একটি জঘন্যতম কাজ। তাই আমরা যদি সরকার গঠন করতে পারি তাহলে কাউকে ধোকা দেওয়ার কাজ করবো না। জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ একটি মানবিক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চায়। যে দেশে মানুষ মানুষকে সম্মান করবে, মানুষের সকল অধিকার নিশ্চিত হবে। যে দেশে কোন যুবক বেকার থাকবে না। সকলের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা হবে। জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ সরকার গঠন করলে আমাদের মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সঃ) নারীদের যে সম্মান দিয়েছেন তাদের সেই সম্মান নিশ্চিত করা হবে। সেই স্বপ্নের দেশ গঠন করা কেবল মাত্র জামায়াতে ইসলামীর দ্বারাই সম্ভব নয়। এমন স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে হলে দেশের সকল জনগণের সহযোগিতা ও সমর্থনেরও প্রয়োজন।
তিনি আরো বলেন আমরা সরকার গঠন করলে দেশের মালিক হবো না, মানুষের সেবক হবো। ইতিপূর্বে যারা রাষ্ট্র ক্ষমতায় গিয়ে নিজেদের দেশের মালিক মনে করেছেন তাদের কি ভয়াবহ পরিনতি হয়েছে আমরা দেখেছি এবং ইতিহাসের পাতায় তা লিপিবদ্ধও রয়েছে। তারা অস্থাকুড়ে নিক্ষেপিত হয়েছে। একটি রাজনৈতিক দল নানাভাবে জাতিকে বিভক্ত করে রেখেছে। আমরা বিভেদ দেখতে চাই না। ধর্ম যার যার রাষ্ট্র আমাদের সবার। কারণ বিভেদ জাতির জন্য কোন মঙ্গল বয়ে আনতে পারে না।
তিনি বলেন বিগত সাড়ে ১৫ বছর শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থার মধ্যে আমরা ছিলাম। আল্লাহর ইচ্ছায় ছাত্র জনতার আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে জুলুমের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছি। এই ১৫ বছরে জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এই দলের মত ক্ষতি আর কোন দলের করা হয় নি। অন্যায়ভাবে আমাদের নিবন্ধন কেড়ে নেয়া হয়েছে। প্রতীক কেড়ে নেয়া হয়েছে। বিচারের নামে প্রহসন করে আমাদের দলের ১১জন নেতাকে হত্যা করা হয়েছে। পিলখানায় সেনা কর্মকর্তাদের হত্যার মধ্যে দিয়ে ঐ ফ্যাসিবাদী সরকার হত্যার রাজনীতি শুরু করে। যুব সমাজ যুগে যুগে দেশের ক্লান্তিলগ্নে, সকল অন্যায় জুলুমের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে দেশেকে রক্ষা করেছে। ঠিক তেমনই ছাত্র জনতার ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে গত ৫ আগষ্ট জুলুমবাজ সরকারের পতন হয়েছে। ছাত্রদের কোটা আন্দোলন পরবতীতে সরকার পতনের যে এক দফার আন্দোলন তা কোন দলের বকা কোন গোষ্ঠির আন্দোলন ছিলনা। সে আন্দোলন ছিল দেশের সকল মানুষের আন্দোলন। এর কৃতিত্ব ছাত্র জনতার। আল্লাহর ইচ্ছায় এই বিপ্লব সংঘটিত হয়েছে। এই আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন, যারা দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে নানা ভাবে অসুস্থ্য হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন, পঙ্গুত্ব বরন করেছেন সে সব পরিবার জাতির বোঝা নয়, তারা জাতির সম্পদ। এসব পরিবারকে সম্মান দিতে হবে মর্যাদা দিতে হবে। মুক্তির এই আন্দোলনে শহীদের প্রত্যেকের পরিবার থেকে একজনকে চাকুরী দিয়ে সম্মানীত করতে হবে। আহতদের যোগ্যতা অনুযায়ী কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে হবে।