প্রতিনিধি 13 March 2025 , 11:08:23 প্রিন্ট সংস্করণ
এস এম পারভেজ তালুকদার।
তথ্য চাওয়ার জের ধরে এক সাংবাদিককে গ্রেপ্তারের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বুধবার সন্ধ্যায় নাটোরের সিংড়া উপজেলা পরিষদ চত্বর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃত সাংবাদিক আব্দুর রশিদ দৈনিক সমকালের সিংড়া উপজেলা প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত আছেন।
তার মুক্তি, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তাকে অপসারণ এবং বরখাস্তকৃত পুলিশ সুপার ফজলুল হকের বিরুদ্ধে মামলার প্রতিকার চেয়ে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে নাটোর জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন নাটোরের ছয়টি উপজেলার সাংবাদিকরা। সাংবাদিক আব্দুর রশিদকে মুক্তি না দেওয়া পর্যন্ত সাংবাদিকরা কলম বিরতিসহ নানা ধরণের কর্মসূচি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
স্থানীয় সাংবাদিকদের অভিযোগ, তথ্য অধিকার আইনে সরকারি ফরমে খাসপুকুরের তথ্য চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে আবেদন করেন সাংবাদিক আব্দুর রশিদ। তথ্য দিতে গড়িমশি করায় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার সাথে বাগবিতণ্ডা হয় আব্দুর রশিদের। এরই জের ধরে সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিংড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আসমাউল হকের দাবি, সারা দেশে চলা ‘ডেভিল হান্ট অভিযানের’ অংশ হিসেবে সাংবাদিক আব্দুর রশিদকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ওই সাংবাদিক বিগত দিনে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি ছিলেন। চাঁদাবাজি ও মারপিটের অভিযোগে গত বছর উপজেলার ইতালি ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমানের করা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
সিংড়া উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি সাইফুল ইসলাম জানান, সরকারি খাস জলমহাল ইজারাসংক্রান্ত তথ্য চেয়ে সম্প্রতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে আবেদন করেছিলেন আব্দুর রশিদ। তথ্য দিতে দেরি হওয়ায় আব্দুর রশিদ উপজেলা প্রশাসনিক কর্মকর্তাকে (তথ্য কর্মকর্তা) ফোন দিয়ে কারণ জানতে চেয়েছিলেন। তখন ওই কর্মকর্তা অশ্লীল ভাষায় গালমন্দ করেন। এই কথোপকথন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এমন পরিস্থিতিতে হঠাৎ করে আব্দুর রশিদকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
নাটোরের ইউনিক প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক বুলবুল আহমেদ বলেন, আবদুর রশিদ একজন মূল ধারার সাংবাদিক। তাঁকে খোঁড়া অজুহাতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সিংড়া থানা-পুলিশের এই কর্মকাণ্ডে সরকারের ‘ডেভিল হান্ট অভিযান’ বিতর্কিত হবে। তিনি বলেন, আব্দুর রশিদকে মুক্তি না দেওয়া পর্যন্ত সাংবাদিকরা নানা ধরণের কর্মসূচি পালন করে যাবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘সাংবাদিক আবদুর রশিদ কিছু তথ্য চেয়ে আবেদন করেছিলেন। কিন্তু ব্যস্ততার কারণে কিছুটা দেরি হলেও আমরা তথ্যগুলো দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। হঠাৎ শুনলাম, পুলিশ আব্দুর রশিদকে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তারের সঙ্গে তথ্য চাওয়ার কোনো যোগসূত্র নাই।’