অন্যান্য

নাসিরনগরে জুলাই যোদ্ধাদের মানববন্ধন

  প্রতিনিধি 8 July 2025 , 3:08:16 প্রিন্ট সংস্করণ

মোঃ কাউছার আহমেদ ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধিঃ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) নাসিরনগর উপজেলা শাখার নবগঠিত সার্চ কমিটিতে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতাদের পুর্নবাসন করা হয়েছে অভিযোগ করেছেন গণঅভ্যুত্থানে আহত জুলাইযোদ্ধা এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা।
সোমবার দুপুরে নাসিরনগর উপজেলা সদরের কলেজ মোড়ের শহীদ ইমরান চত্বরে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন থেকে এই দাবি তোলা হয়।
মানববন্ধনে জুলাই ও আগস্টে আন্দোলনে আহত জুলাই যোদ্ধা তাহজিন ভূঁইয়া জানান, গত বছরের ৫ জুলাই রাজধানী ঢাকার চকবাজারের চানখারপুল এলাকায় ছাত্র জনতার আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। সেখানে পুলিশ এবং ফ্যাসিষ্টরা ছাত্র জনতার উপর গুলি করে হত্যা করছে। সে আন্দোলনে তার ডান হাতে চাইনিজ রাইফেলের গুলি লাগে। তিনি বলেন, আমাদের রক্ত দেওয়ার উদ্দ্যেশই ছিলো আমরা ফ্যাসিস্টমুক্ত একটি দেশ পাবো।
কিন্তু ঘটনার এক বছর পর আমরা দেখতে পাচ্ছি আমাদেরকে নিয়ে বিভিন্ন দল বিভিন্নভাবে রাজনীতি করছে। অনেকে অনেকভাবে সুবিধা নিচ্ছে। আমরা লক্ষ্য করছি নাসিরনগরে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) নাসিরনগর উপজেলা শাখার নবগঠিত সার্চ কমিটি গঠন করা হয়েছে। এতে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতাদের পুর্নবাসন করা হয়েছে। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমরা এই সার্চ কমিটি বাতিলের দাবি জানাচ্ছি। পাশাপাশি দ্রুত সময়ের মধ্যে জুলাই সনদ ঘোষনারও দাবি জানাচ্ছি। তিনি যারা ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগকে পুর্নবাসন করার চেষ্টা করবেন তাদেরকে প্রতিহত করার ঘোষনা দেন।
মানববন্ধনে জুলাই আন্দোলনে রাজধানীর উত্তর বাড্ডায় গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত জুলাই যোদ্ধা লুৎফুর রহমান বলেন, গত ৫ জুলাই ফ্যাসিস্ট বিরোধী আন্দোলনে আমার হাতে শর্টগানের গুলি লাগে। এতে আমি গুরুতর আহত হই। এই হাত নিয়ে চলাচল করতে কষ্ট হচ্ছে। তিনি বলেন জুলাই সনদ ও জুলাই স্বীকৃতি অবিলম্বে দিতে হবে। আর যারা মাঠ পর্যায়ে আওয়ামী লীগকে পুর্নবাসন করছে তাদেরকে প্রতিহত করা হবে।
তিনি বলেন, আমাদের রক্তের উপর দাঁড়িয়ে আছে এই সরকার। আমরা আমাদের রক্ত বৃথা যেতে দেবোনা।
মানববন্ধনে আহত যুবক ইকরাম হোসেনের মা নাসিমা খাতুন বলেন, ছেলেকে ওয়ার্কসপের কাজ শিখিয়ে বিদেশ পাঠাবো বলে স্বপ্ন দেখেছিলাম। কিন্তু গত ১৮ জুলাই ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ সড়কে ছাত্র আন্দোলনে গিয়ে যোগ দেয় সে। এ সময় সে ডান চোখে গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হয়। নিমিষেই ছেলেকে নিয়ে দেখা স্বপ্ন ধুলিস্যাৎ হয়ে যায়। এখন সে বেকার অবস্থায় বাড়িতে রয়েছে। আন্দোলনের পর আমার ছেলের চিকিৎসার জন্য কোনো সহযোগিতা পাইনি। ছেলে আহত হওয়ার কোন বিচারও পাইনি। দেশবাসীর কাছে আমার দাবি আমি যেন আমার ছেলে আহত হওয়ার বিচার পাই। সেই সাথে আমি জুলাই ঘোষণাপত্র চাই।
এ ব্যাপারে নাসিরনগর উপজেলার এনসিপির সার্চ কমিটির যুগ্ম সমন্বয়ক ও ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১-(নাসিরনগর) আসনে এনসিপির প্রার্থী কাজী মমিনুল হাসান জানান, বিএনপি, এনসিপি, জামাত, মাঝে মধ্যে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করছে। যারা রক্তের সাথে বেইমানি করছে, আওয়ামী লীগকে পুনবার্সন করছে। তা মেনে নিতে পারছে না জুলাই যোদ্ধারা। যারা এই শহীদের রক্তের সাথে প্রতারণা করবে, তাদেরকে অবশ্যই প্রতিহত করবে জনতা।
তিনি বলেন, আমরা দেখতে পাচ্ছি, এ সরকার জুলাই ঘোষণাপত্রের জন্য এক মাস সময় নিয়েছিল। এই সময়ের মধ্যে তারা ঘোষণা করেনি। গেজেট প্রকাশ করেনি। এতে মনে হয় এ সরকার গণঅভ্যুত্থানের পক্ষের সরকার নয়। আমরা মনে করি বাইরের কোন প্রেসক্রিপশনে এই সরকার পরিচালিত হচ্ছে। এই সরকার যদি জন আকাঙ্খা থেকে বিচ্ছিন্ন কোন কাজ করে, বা করতে চায়, এ সরকারকেও জনগণ ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিহত করবে ইনশাল্লাহ। মানববন্ধনে জুলাই যুদ্ধারা ছাড়াও স্থানীয় বিভিন্ন শ্রেণী পেশার নারী পুরুষ অংশ নেন।

আরও খবর

                   

জনপ্রিয় সংবাদ