ঝিনাইদহ কালীগঞ্জের কোলাবাজারে নির্মাণাধীন সেতুর বিকল্প সড়কটি পানির নীচে চলে গেছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন কোলা ও পাশর্^বর্তী জামাল ইউনিয়নের কমপক্ষে ৪০ গ্রামের মানুষ। উপজেলার ছালাভরা- কোলা জেসি সড়কের কোলাবাজারে বেগবতী নদীর ওপর সেতু নির্মানের কাজ বেশ আগেই শুরু হয়। নির্মানের সময়কাল চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে শেষ হওয়ার কথা। কিন্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাজের ধীরগতিতে এখনও এ সেতুর কাজ তেমন একটা দৃশ্যমান হয়নি। এদিকে মানুষের যাতায়াতের জন্য পাশেই যে বিকল্প সড়কটি নির্মান করা হয়েছে তার একপাশ পানির নীচে চলে গেছে। এতে পাশাপাশি জামাল ও কোলা ইউনিয়নের কমপক্ষে ৪০ গ্রামের মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন।
কালীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী অফিস (এলজিআরডি) সূত্রে জানাগেছে, উপজেলার ছালাভরা -কোলাবাজার জেসি সড়কের বেগবতী নদীর ওপর কোলাবাজারে ৪ কোটি ৫৬ লাখ টাকা ব্যয়ে সেতু নির্মানের কাজ গত বছর শুরু হয়। সেতুটি নির্মানে ঝিনাইদহের মেসার্স জাকাউল্লাহ , শামিম এন্ড ব্রাদার্স, মেসার্স মিজানুর রহমান ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজ করছে। যে কাজ চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা।
এলাকাবাসী জানান, কোলাবাজারের বেগবতী নদীর ওপর নির্মাণাধীন সেতুটি পাশ^বর্তী জামাল ও কোলা ইউনিয়নের বাসিন্দাদের মধ্যে সেতুবন্ধনকারী হিসেবে মনে করা হয়। তারা বলেন, কোলাবাজারটি দেশের গ্রামাঞ্চালের মধ্যে একটি অন্যতম বৃহদ বাজার। যেখানে ছোট বড় মিলে কমপক্ষে সহস্্রাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও দোকানপাট রয়েছে। এ বাজারটির এপার ওপারে কলেজ, মাধ্যমিক, প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাদ্রাসাসহ অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। রয়েছে ব্যাংক বীমা, পুলিশ ফাঁড়িসহ অসংখ্য অফিস। যে কারনে সকাল হলেই সাধারন মানুষদেরকে এ বাজারে আসতে হয়। তারা আরও জানান, এ বিশাল এলাকার কৃষকদের উৎপাদিত ধানসহ কৃষিপন্য বিক্রি করতে এ বাজারেই আসতে হয়। সপ্তাহে দুই দিন এখানে হাট বসে। এ দইু দিনে আশপাশসহ দুর দুরান্তের হাজার হাজার মানুষের উপস্থিতি থাকে এ বাজারে। তারা আরও বলেন, অনেক আগেই থেকেই পুরাতন সেতুর স্থানে নতুন সেতু নির্মানে কাজ চলছে। তাদের অভিযোগ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সারাবছর অল্প সংখ্যক শ্রমিক দিয়ে ধীর গতিতে কাজ করেছেন। যে কারনে সেতুটির কাজ এখনও তেমন একটা দৃশ্যমান হয়নি। বাধ্য হয়ে নির্মিত বিকল্প সড়ক দিয়েই বিস্তর এলাকার মানুষকে কষ্ট করে চলতে হচ্ছে। কিন্ত বিকল্প সড়কটিও অত্যন্ত নিম্নমানের ভাবে তৈরী করা হয়েছে। যে কারনে গত বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর বিকল্প সড়কের নদীর ওপর নির্মিত কাঠের সেতুটি নদীর পানিতে ভাসিয়ে নিয়ে গিয়েছিল। পরে তা মেরামত করে চালানো হচ্ছিল। কিন্ত এ বছরেও গত কয়েকদিনের ভারি বৃষ্টিতে এর উপর দিয়ে আবার পানি প্রবাহিত হচ্ছে। নদীর স্্েরাতে ধসে গেছে একপাশ। এখন মাঝখানে একটি বাঁশের তৈরী চিকন চরাট দিয়ে খুব কষ্ট করে এপার ওপার আশা যাওয়া করছেন তারা। এর উপর দিয়ে মালামাল মাথায় করে বহন করছেন। তারা আশঙ্কা করছেন গত বছরের মত এ বছরেও যে কোন সময় নদীর স্্েরাতেই ভেসে যেতে পারে কাঠের সেতুটিও। তখন তাদেরকে এপার ওপার আসা যাওয়া করতে কমপক্ষে ১২/১৪ কিলোমিটার ঘুরে আসতে হবে। তখন ভোগান্তি আরও বহুগুনে বেড়ে যাবে।
উল্যা গ্রামের বাসিন্দা মোহম্মদ আলী জানান, বিকল্প সড়কের কাঠের সেতু পার হয়ে অত্যন্ত কষ্ট করে বাজারে এসেছিলেন। এখন কেনাকাটা করে বাড়ি ফিরছেন। তিনি বলেন কাঠের সেতুটির একপাশ ইতোমধ্যে পানির নীচে চলে গেছে। ভাঙন শুরু হয়েছে। এরপর আবার ভারি বৃষ্টি হলে ভেসে যাবে বাকি অংশ। তখন এলাকাবাসীর এপার ওপার আসা যাওয়া করার উপায় থাকবেনা। বিস্তর এলাকার মানুষ পড়বে মহাভোগান্তিতে।