প্রতিনিধি 13 December 2024 , 1:38:12 প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
নীলফামারী জেলা সদরের পঞ্চপুকুর ইউনিয়নের ঝাড়পাড়ায় সড়কের পাশে গড়ে উঠে মাল্টা বাগান। মাল্টার কারণেই সেই মোড়টির নাম হয়েছে মাল্টার মোড়। বাগানের নামকরণ করেছেন রাজু অর্গানিক গার্ডেন অ্যান্ড নার্সারী। বাগানে বিভিন্ন জাতের মাল্টা, কমলাসহ নানা জাতের ফলে ভরপুর।পাকা মাল্টা আর চায়না কমলা বাগানের সৌন্দর্য অনেকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। নিজের নামে মাল্টা উদ্ভাবন করেছেন তিনি। রাজু-১ ও রাজু-২ মাল্টার জাত দেশব্যাপী ছড়িয়ে দিতে চান উদ্যোক্তা ও পরিচালক মনিরুজ্জামান (রাজু)। তাঁর বাগান থেকে মাল্টা নীলফামারীসহ বাইরের জেলায়ও যাচ্ছে।রাজু ডিপ্লোমা কৃষিবিদ পাস করে চাকরির চেষ্টা করেন। কিন্ত চাকরি না পেয়ে উদ্যোক্তা হয়ে উঠেন। বাগান তৈরি করার মন-মানসিকতায় গড়ে তোলেন নিজেকে। নিজের পৈতৃক দেড় একর জমিতে ২০১৮ সালে বিভিন্ন স্থান থেকে ফলের চারা সংগ্রহ করে গড়ে তোলেন ফলের বাগান।
রাজুর বাগানে সিকি মোসাম্বি, বারী-১, বারী-২, ইএলও-২, মরক্কো, সাউথ অফ্রিকানসহ নিজের নামে দুটি মাল্টার জাত উদ্ভাবণ করেছেন। রাজু-১ ও রাজু-২ জাতের মাল্টার চারা তৈরী করেছেন তিনি। এ ব্যাপারে কৃষি বিভাগও তাঁকে সহযোগিতা করছেন।
বাগানটিতে প্রায় ৪০০ মাল্টার গাছ রয়েছে। বাগানে প্রতিকেজি মাল্টা বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা কেজি দরে।
বেশির ভাগ মাল্টা বাইরে পাঠানো হচ্ছে কুরিয়ারে।
বাগানে মাল্টা ও কমলা ছাড়াও আম, থাই পেয়ারা, বারো মাসী আমড়া, কাঁঠাল, মিষ্টি তেঁতুল, ড্রাগন, বড়াই, সৌদি খেঁজুর, ভিয়েতনাম নারিকেল, শরিফা, সবেদা, আমলকি, কাজু ও পেস্তা বাদাম, থাই কদবেল, থাই জাম্বুরা, সুইট লেমন, আঙ্গুর, সাদা ও কালো জাম, লটকন, আনার, আপেল, আলু বোখারা, ত্বীন ফল, মালবেরীসহ বিভিন্ন জাতের দেশি-বিদেশী ফলের চারা পাওয়া যায়। এ ব্যাপারে রাজু অর্গানিক গার্ডেন অ্যান্ড নার্সারীর উদ্যোক্তা ও পরিচালক কৃষিবিদ মনিরুজ্জামান (রাজু) বলেন, চাকরী না পেয়ে বাগান করি। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৮ সালে মাল্টার ২০০ চারা রোপণ করি। ২০১৯ সালে কিছু কিছু গাছে ফল আসে। ২০২০ সালে খুব ভালো ফল হয়। বাজারে চাহিদা অনেক বেশি। গতবছর এই বাগান থেকে ১০ লাখ টাকার মতো আয় করেছি। এবারে ১৫ লাখ টাকা ছাড়িয়ে যাওয়ার আশা করছেন তিনি। তিনি বলেন, ধৈর্য হারায়নি, লেগে ছিলাম বলে আজ সফলতা মিলছে।
সদরের পঞ্চুকুর ইউনিয়নের পঞ্চপুকুর ব্লকের উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা আনারুল হক বলেন, কৃষি বিভাগের পরামর্শে মাল্টা, কমলা উৎপাদন করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন তিনি। নানা জাতের চারা তৈরিতে সফলতা এসেছে।
নীলফামারী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. এস এম আবু বকর সাইফুল ইসলাম বলেন, বাগানটি অনেকবার পরিদর্শন করেছি। এখানে মাল্টা ইন্ডাস্ট্রি হতে পারে। অত্যন্ত সুস্বাদূ, মিষ্টি ও রসালো মাল্টা এই বাগান থেকে মাত্র ১২০ টাকা কেজিতে মিলছে। অথচ বাজারে এই মাল্টার দাম ৩২০ টাকা কেজির মতো। বাগানের জমিতে ভার্মি কম্পোষ্ট, জৈব সার, হাঁড়ের গুড়া ব্যবহার করে আশাতীত ফলন মিলছে।