জেমস আব্দুর রহিম রানা, যশোর:
গণঅধিকার পরিষদ যশোর সদর উপজেলার দুই নেতা পদত্যাগ করেছেন। শনিবার (২৩ আগস্ট) রাতে সংগঠনটির জেলার সভাপতি-সম্পাদক বরাবর পৃথক দুটি লিখিত পত্রে তারা নিজ নিজ পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন।
পদত্যাগকারী নেতারা হলেন- দলটির সদর উপজেলা কমিটির সহ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবু বক্কার ছিদ্দিক এবং অর্থ সম্পাদক রাফাত রহমান দ্বীপ। জেলায় দলটির কেন্দ্রীয় সভাপতির সমাবেশের পরের দিন দুই নেতার পদত্যাগের খবরে নেতা-কর্মীরা হতবাক হয়েছেন।
পদত্যাগকারী নেতারা বলছেন, দলটির সভাপতি নুরুল হক নুর আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের পুনর্বাসনের ইঙ্গিত দিচ্ছেন। সর্বশেষ শুক্রবার যশোরে গণসমাবেশে তার বক্তব্য সেই ইঙ্গিত দিয়েছেন। আদর্শের সঙ্গে সমঝোতা করে রাজনীতি করা তাদের পক্ষে সম্ভব নয় বলেই তারা পদত্যাগ করেছেন।
পদত্যাগপত্রে দুই নেতাই গণঅধিকার পরিষদ স্বাধীনতা বিরোধীদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বিভাজনের রাজনীতির দিকে ধাবমান হচ্ছে বলে পদত্যাগ পত্রে উল্লেখ করেছেন। পদত্যাগপত্রে তারা উল্লেখ করেছেন, জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী হলেও গতানুগতিক ধারার বাইরে রাজনীতি করতে তারা গণঅধিকার পরিষদের রাজনীতি শুরু করেন। কিন্তু গণঅধিকার পরিষদ বাংলাদেশের স্বাধীনতা বিরোধীদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশপন্থী রাজনীতি না করে বিভাজনের রাজনীতির দিকে ধাবমান হচ্ছে। এ অবস্থায় নিজের আদর্শের সঙ্গে সমঝোতা করে রাজনীতি করা আমাদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না।
গত শুক্রবার (২২ আগস্ট) স্থানীয় টাউন হল মাঠে ১৮’র কোটা সংস্কার থেকে ২৪’র রাষ্ট্র সংস্কারের স্মৃতিচারণ এবং গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষায় নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে গণ সমাবেশের আয়োজন করে গণঅধিকার পরিষদ যশোর জেলা। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন নুরুল হক নূর। সমাবেশে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মাফ করে দেয়া নিয়ে বক্তব্য দেন। অনেকেই পক্ষে-বিপক্ষে আলোচনা-সমালোচনাও করছেন। এর প্রতিবাদে অনেক নেতাকর্মী ক্ষুব্ধ বলে জানা গেছে। ক্ষুব্ধ হয়েই তারা পদত্যাগ করেছেন।
পদত্যাগ করা রাফাত রহমান দ্বীপ বলেন, গণঅধিকার পরিষদে এখন ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করার প্রক্রিয়া চলছে। আদর্শের নৈতিকতার জায়গা থেকে আমি পদত্যাগ করেছি। ২২ আগস্টের সমাবেশেও সেটি ফুটে উঠেছে দলীয় প্রধানের বক্তব্যের মাধ্যমে। আমার পদত্যাগপত্র জেলা সভাপতির হোয়াটসঅ্যাপে পাঠানো হয়েছে। সদর উপজেলার সাধারণ সম্পাদককেও পাঠানো হয়েছে।
সংগঠনটির সদর উপজেলার সাধারণ সম্পাদক শাকিল মল্লিক টিপু বলেন, আমাকে মৌখিক জানানো হয়েছিল, তারা পদত্যাগ করবে। কিন্তু লিখিত কোন পত্র পায়নি। এমনকি কি কারণে তারা পদত্যাগ করবে সেটাও জানি না।
দলটির খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আশিক ইকবাল বলেন, শুনেছি তারা পদত্যাগ করেছে। খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি, তারা আগে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল। রাজনীতিক পটপরিবর্তনের পর বিএনপির নেতারা তাদের বলেছে গণঅধিকার পরিষদ করার দরকার নেই। তাদের কথা শুনে এখন দল থেকে পদত্যাগ করেছে। এমনকি তাদের পদত্যাগপত্রে স্বীকার করেছে আগে জাতীয়তাবাদী মতাদর্শের মানুষ ছিলেন। দল সম্পর্কে তারা যে অভিযোগ তুলছে, তাদের অভিযোগ মিথ্যা।