মনিরামপুর যশোর প্রতিনিধি :
যশোর জেলার নেহালপুর, কালিবাড়ি, কাচারি বাড়ি, খোন্দকারবাড়ী, কুমারঘাটা ও কপালিয়া এলাকায় গত রাতে ভয়াবহ ঝড়বৃষ্টির কারণে বিদ্যুৎ সরবরাহ কার্যত বন্ধ হয়ে পড়ে। ঝড়ের তীব্রতার কারণে বৈদ্যুতিক লাইনের বেশ কয়েকটি স্থানে ইনসুলেটর ভেঙে পড়লে পুরো অঞ্চলের বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। এতে প্রায় ৫ ঘণ্টা এলাকাবাসী বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় দুর্ভোগ পোহান।
তবে, এমন দুর্যোগের মাঝেও বিদ্যুৎ বিভাগের তিন নিরলস কর্মী তাদের দায়িত্ব থেকে এক পা নড়ে না। মোঃ আবু তৌহিদ গাজী (লাইন গ্রেড ওয়ান), মোঃ নিরন আহমেদ এবং মোঃ নূর আলম (লাইন শ্রমিক) রাতের অন্ধকারে এবং ঝড়বৃষ্টির মাঝেও একনিষ্ঠভাবে কাজ করতে থাকেন। তাদের এই নিবেদিত প্রচেষ্টার ফলে মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই বিদ্যুৎ সরবরাহ আবারও স্বাভাবিক হয়ে ওঠে।
এদিনের ঘটনাটি দৃষ্টান্ত হিসেবে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। নিয়ম অনুযায়ী, বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মীদের ৮ ঘণ্টা ডিউটি করার কথা থাকে, কিন্তু এই তিন কর্মী তাদের দায়িত্ববোধের জায়গা থেকে অতিরিক্ত সময়ও কাজ করেন। তারা সারারাত কাজ করে বিদ্যুৎ সরবরাহ পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হন, যা স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে অত্যন্ত প্রশংসনীয় হয়েছে।
মোঃ আবু তৌহিদ গাজী (লাইন গ্রেড ওয়ান), যিনি এই কঠিন পরিস্থিতিতে প্রথম থেকেই মেরামতের কাজ শুরু করেন, তিনি বলেন, "আমরা সবসময় জনগণের সেবায় নিয়োজিত। কখনো কখনো আমাদের নিয়মিত ডিউটির বাইরে কাজ করতে হয়, তবে মানুষের সেবা করা আমাদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।"
এছাড়া, মোঃ নিরন আহমেদ জানান, "ঝড়বৃষ্টির মধ্যে কাজ করতে ভীষণ কষ্ট হলেও যখন দেখি এলাকার মানুষ তাদের বিদ্যুৎ ফিরে পেয়েছে, তখন মনে হয় আমাদের কাজ সার্থক হয়েছে।"
মোঃ নূর আলম আরও বলেন, "দুর্যোগকালীন পরিস্থিতিতে আমাদের সহকর্মীরা একে অপরকে সহায়তা করে কাজ করে থাকে। আমাদের সবার একটাই উদ্দেশ্য — জনগণের সেবা করা।"
স্থানীয় বাসিন্দারা দ্রুত বিদ্যুৎ সরবরাহ ফিরে পাওয়ায় তাদের কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, "যতটা দ্রুত বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু হয়েছে, তার জন্য আমরা কর্মীদের প্রতি চিরকাল কৃতজ্ঞ। এই কর্মীরা আমাদের অমূল্য সম্পদ।"
বিদ্যুৎ বিভাগের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, "যেকোনো দুর্যোগ বা বিপর্যয়ের মধ্যে আমাদের কর্মীরা জনগণের সেবায় নিজেদের নিবেদিত রেখে কাজ করে। এই তিন কর্মীর দৃষ্টান্তমূলক ভূমিকা প্রশংসনীয়।"
বিদ্যুৎ বিভাগের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, "এ ধরনের পরিস্থিতিতে আমাদের কর্মীদের সাহসিকতা ও দক্ষতার অভাবনীয় প্রদর্শন ঘটে। তাদের উদ্যম ও দায়বদ্ধতা জনগণের কাছে উদাহরণ হয়ে থাকবে।"
এই ঘটনা প্রতিফলিত করে যে, আমাদের কর্মীরা শুধু নিয়মিত ডিউটি পালন করেন না, তারা জনগণের সেবা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নিজেদের সর্বোচ্চ দিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। তাদের এই পরিশ্রম এবং আত্মত্যাগ আমাদের সমাজের অমূল্য রত্ন।
এভাবে দীর্ঘসময় ধরে সেবামূলক কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার মাধ্যমে বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মীরা সত্যিই উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন।