মো: সাকিব হোসেন
পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধি: জুলাই গণঅভ্যুত্থান ২০২৪-এর ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে পটুয়াখালীর দুমকিতে অনুষ্ঠিত হলো এক ব্যতিক্রমধর্মী গ্রাফিতি চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা। বৃহস্পতিবার ১৭ই (জুলাই) সকাল ১০টায় সরকারি জনতা কলেজ ক্যাম্পাসে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে উপজেলার ১২টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ৩টি কলেজের শিক্ষার্থীরা অংশ নেয়।
প্রতিযোগিতায় কলেজ পর্যায়ে প্রথম স্থান অর্জন করে সরকারি জনতা কলেজের শিক্ষার্থীরা। বিজয়ী দলের সদস্যরা হলেন- নীলিমা, তাবিতা, সিনথিয়া, রিফাত ও বুশরা। অপরদিকে, স্কুল পর্যায়ে প্রথম স্থান অর্জন করে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়'স্থ সৃজনী বিদ্যানিকেতনের শিক্ষার্থী- রায়না তাসনিম আনিসা ও মাইশা ইসলাম।
প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া তরুণ শিল্পীদের আঁকা চিত্রে ফুটে ওঠে ২০২৪ সালের জুলাইয়ের বিক্ষুব্ধ সময়কাল, শহীদদের আত্মত্যাগ এবং জনগণের অধিকার আদায়ের সংগ্রাম। বিজয়ী শিক্ষার্থীদের আঁকা ছবি এখন স্থান পেয়েছে সরকারি জনতা কলেজের দেয়ালে-দেয়ালে— যা এখন ঐ সময়ের এক প্রতীকী দেয়ালচিত্র হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
সৃজনী বিদ্যানিকেতন'র মেধাবী শিক্ষার্থী-রায়না তাসনিম আনিসা বলেন, “এই অর্জন আমি উৎসর্গ করছি ২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানে জুলাই শহীদ ও আহত সকল যোদ্ধাদের। তাঁদের রক্ত আর ত্যাগ আমাদের প্রতিবাদী চেতনার মশাল হয়ে জ্বলছে।”
এ প্রসঙ্গে, আয়োজক কমিটির অন্যতম সদস্য ও সরকারি জনতা কলেজের রসায়ন বিভাগের প্রভাষক মো. সহিদুল ইসলাম জানান, “এই আয়োজন তরুণ প্রজন্মকে ইতিহাস জানানো এবং আন্দোলনের চেতনায় উদ্বুদ্ধ করার এক প্রয়াস। বিজয়ী শিক্ষার্থীদের চিত্রকর্মকে আমরা বলছি- ‘প্রতিবাদের রঙে আঁকা সাহসী ইতিহাস।’”
তিনি আরও বলেন, সাহসী ইতিহাস কখনও কেবল পাঠ্যপুস্তকে সীমাবদ্ধ থাকে না- তা উঠে আসে দেয়ালের ক্যানভাসে, শিল্পীর তুলিতে, এবং মানুষের হৃদয়ে। এমন উদ্যোগগুলো তরুণদের সৃজনশীলতা যেমন জাগিয়ে তোলে, তেমনি জাতির গৌরবময় অধ্যায়কেও করে জীবন্ত।
উল্লেখ্য, গ্রাফিতি চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্য থেকে অনেক চিত্রকর্মেই উঠে আসে গণঅভ্যুত্থানের চিত্র,জুলাই বিপ্লবের প্রথম শহীদ আবু সাঈদ ও মুগ্ধসহ অনেক জুলাই শহীদদের গ্রাফিতি চিত্রকর্ম,গণদাবির ভাষা, এবং সমাজে বঞ্চিত মানুষের প্রতিচ্ছবি। দেয়ালে আঁকা এই প্রতিবাদের ভাষা যেন হয়ে উঠেছে সময়ের জীবন্ত দলিল।