অন্যান্য

ফকিরহাটে কৃষি প্রণোদনা পেয়ে বোরো চাষে কৃষকদের আগ্রহ বেড়েছে

  প্রতিনিধি 12 December 2024 , 7:29:04 প্রিন্ট সংস্করণ

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

 

বাগেরহাটের ফকিরহাটে আমন ধান কাটা-মাড়াই শেষ হতে না হতেই বোরো ধান চাষাবাদের জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েছে বিভিন্ন এলাকার কৃষকরা।চলতি বোরো মৌসুমে ধান আবাদের জন্য কৃষি বিভাগ থেকে আগাম বিনামূল্যে সার ও বীজ পেয়ে কৃষকরা কোমর বেঁধে মাঠে নেমেছেন। চাষাবাদের শুরুতেই প্রণোদনা পাওয়ায় বোরো চাষে কৃষকদের আগ্রহ বেড়েছে। শীতকে তুচ্ছ করে মাঠে ঘাম ঝরাচ্ছেন কৃষক। শীত ও কুয়াশার কাকডাকা ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মাঠে পরিশ্রম করছেন তারা। হালচাষে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। মাঠে কেউবা বীজতলায় পানি দিচ্ছেন, কেউবা লাঙ্গল চালাচ্ছেন। আমন ধানের ভালো দাম পাওয়ায় উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে বোরো আবাদে মাঠে নেমেছেন তারা।

 

উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, উচ্চফলনশীল ও ভালো মানের ফসল উৎপাদনের জন্য উপজেলার ৫হাজার ৪’শ জন চাষীকে বোরো ধানের হাইব্রিড বীজ দেয়া হয়েছে। কৃষি বিভাগের সরবরাহকৃত এসব বীজ থেকে চাষিরা বীজতলা তৈরি করেছে। ভালো অঙ্কুরদগমন হওয়ায় খুশি চাষিরা।এবছর মাঠ পর্যায়ে হীরা-২, ব্যাবিলিয়ন-২, এসএলএইটএইচ, ইস্পাহানি, পাটটেক্স-৩, সিনজেন্টা ১২০৫, ময়না, আফতাব, হীরা-২, সাথী, ব্রি-৮৯, ব্রি-৯৯, ব্রি-১০০, ব্রি-১০২, ব্রি-১০৪ জাতের ধান চাষ করছেন কৃষকরা।

 

উপজেলা কৃষি বিভাগের সূত্র জানা যায়, চলতি বছরে উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে ৮হাজার ৫১৯ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি বিভাগ। এ লক্ষ্যে ৪১০ হেক্টর জমিতে বীজতলা প্রস্তত করেছে চাষিরা। কৃষি বিভাগ থেকে সার ও ওষুধসহ বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে বলে কর্মকর্তারা জানান।

 

বিভিন্ন ব্লকে দেখা গেছে, কৃষকদের বোরো ধানের বীজতলা তৈরির কর্মব্যস্ততা ছিল চোখে পড়ার মতো। কেউ বীজতলায় সেচ দিচ্ছে, কেউ লাঙ্গল অথবা কোদাল দিয়ে বীজতলা চাষ করছে। অনেকেই মই দিয়ে বীজতলা সমান করছেন। আবার কোনো কোনো চাষি অঙ্কুরিত বীজ ধানগুলো বীজতলায় ছিটাচ্ছে পরম যতেœ।

 

মৌভোগ ব্লকের কৃষক মো. জাকির হোসেন জানান, তিনি এবার দুই বিঘা জমিতে বোরো ধানের চাষ করছেন। ইতিমধ্যে বীজতলা চারা বড় হয়ে গেছে। বীজতলা খুব ভাল হয়েছে। ১০/১২ দিনের মধ্যে তিনি বোরা ধানের চারা রোপন করবেন বলে জানান।

 

কৃষক আফতাব উদ্দিন মোড়ল, ওলিউর রহমান, ইয়ার আলীসহ অনেক কৃষক জানান, আগাম কৃষি প্রণোদনা পেয়ে তারা খুব খুশি। বীজতলার চারা খুব ভাল হয়েছে। খুব দ্রুত তারা বোরো আবাদ করবেন বলে জানান। এ বছর আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে ধানের বাম্পান ফলন হবে বলে কৃষকরা আশা করছেন।

 

উপজেলার নলধা-মৌভোগ ইউনিয়নের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা বিপ্লব দাস জানান, এবার বীজতলা অনেক ভাল হয়েছে। কোন সমস্যা না হলে ধানের ভাল ফলন হবে। লক্ষ্য মাত্রার চেয়ে বেশী ফলন হবে বলে তিনি আশা করছেন। কৃষকরা আগাম বীজ ও সার পেয়ে খুশি হয়েছেন।

 

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শেখ সাখাওয়াত হোসেন বলেন, এ চলতি বছরে কৃষি বিভাগ থেকে উপজেলার ৫হাজার ৪’শ কৃষকদের মাঝে বীজ ও সার প্রদান করা হয়েছে। নভেম্বরের শুরুতে কৃষকদের এই কৃষি প্রণোদনা দেওয়া হয়। বোরো ধানের বীজ সময় মত কৃষকদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। ফলে আগাম বীজতলা তৈরি, রোপন ও ফসল ঘরে তুলতে পারবে চাষীরা। বোরো ধানের আবাদ আগাম করতে পারলে কৃষকরা শীতজনিত রোগের সমস্য থেকে মুক্ত থাকে। এতে চাষীরা উপকৃত হবেন। কৃষকদের মাঝে সময় মতো বীজ ধান দিতে পেরে তিনিও খুশি বলে জানান।

Author

আরও খবর

                   

জনপ্রিয় সংবাদ

দুর্গাপুরে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অভিযানে আটক ৩ জনের কারাদণ্ড

একটা কিনলে অন্যটা কেনার টাকা থাকে না ঝিনাইদহ প্রতিনিধি চার সদস্যের পরিবার নিয়ে ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলার ঋষিপাড়ায় থাকেন ফজলুল রহমান। ভ্যান চালিয়ে দিনে আয় করেন ২৫০-৩০০ টাকা। এর অর্ধেক চলে যায় কিস্তি দিতে। বাকি টাকায় দৈনন্দিন সংসার খরচ চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন। গত বৃহস্পতিবার সকালে ফজলুর হরিণাকুণ্ডুর একটি দোকানে ডিম কিনতে এসেছিলেন। দাম শুনেই তিনি হতবাক। প্রতি হালি ডিমের দাম চাওয়া হচ্ছে ৫৬ টাকা। ফজলুর লোকমুখে শুনেছেন, সরকার ডিমের দাম কমিয়েছে। কিন্তু বাস্তবে দাম এত বেশি কেন? জিজ্ঞেস করতেই দোকানি বলেন, ‘নিলে নেন, না হলে অন্যখানে যান।’ পকেটের অবস্থা ভালো ছিল না ফজলুরের। বাধ্য হয়ে ফিরে যাচ্ছিলেন তিনি। এর আগে গিয়েছিলেন স্থানীয় কাঁচাবাজারে। শাকসবজিসহ সব পণ্যের অস্বাভাবিক দামে হতাশা ঘিরে ধরে তাঁকে। আয়ের সঙ্গে খরচের হিসাব মেলাতে পারছিলেন না। ফজলুর রহমান বলেন, ১৫ দিন আগেও প্রতি পিস ডিমের দাম ছিল ১২ টাকা। এখন সেটার দাম কোথাও ১৩ টাকা ৫০ পয়সা আবার কোথাও ১৪ টাকা। হালিতে এই ১৫ দিনের ব্যবধানে ডিমের দাম বেড়েছে ৬-৮ টাকা। শাকসবজি, মাছ, আলু, পেঁয়াজ, কাঁচামরিচসহ সবকিছুর দামই বেড়েছে। এভাবে দ্রব্যমূল্য বাড়তে থাকলে সীমিত আয়ে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে না খেয়ে থাকতে হবে। ২৫০-৩০০ টাকা আয়ের মধ্যে ঋণ নিয়ে কেনা ভ্যানের কিস্তির জন্য দিতে হয় ১৫০ টাকা। বাকি ১০০-১৫০ টাকায় চাল, ডাল, তেল আর তরিতরকারি কেনা যায় না। একটা কিনলে অন্যটা কেনার টাকা থাকে না। কাঁচাবাজারে কেনাকাটা করতে এসেছিলেন সাগর হোসেন। তিনি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত। হরিণাকুণ্ডু পৌরসভার শুড়া এলাকায় থাকেন স্ত্রী, দুই সন্তান ও মা-বাবা নিয়ে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে ছয় সদস্যের সংসারে খরচ চালাতে হিমশিম অবস্থা তাঁর। সাগর বলেন, সপ্তাহের ব্যবধানে সবকিছুর দাম বেড়েছে। কোনো কোনো পণ্যের দাম দ্বিগুণের বেশি বেড়েছে। বাজার নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্টদের পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান তিনি। ডিমের বাজার নিয়ন্ত্রণে ১৫ অক্টোবর সরকারের কৃষি বিপণন অধিদপ্তর মূল্য নির্ধারণ করে দেয়। উৎপাদক পর্যায়ে ১০ টাকা ১৯ পয়সা, পাইকারিতে ১১ টাকা ১ পয়সা এবং খুচরায় ১১ টাকা ৮৭ পয়সা প্রতি পিসের ডিমের দাম নির্ধারণ করা হয়। বুধবার থেকে এ দামে ডিম বিক্রির কথা থাকলেও বাজারের চিত্র ভিন্ন। একেক জায়গায় একেক রকম দাম নেওয়া হচ্ছ। উপজেলা শহরের কোথাও ১৩ টাকা ৩৩ পয়সা, কোথাও ১৩ টাকা ৫০ পয়সায় বিক্রি হচ্ছে। গ্রামাঞ্চলের বাজারে ১৪ টাকা করে। লাগামহীন ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির দামও। বাজারভেদে প্রতি কেজি ব্রয়লার বিক্রি হচ্ছে ১৮০-২০০ টাকায়। সোনালি মুরগি ২৮০-৩০০ টাকা কেজি। বৃহস্পতিবার সকালে শহরের কাঁচাবাজারে প্রতি কেজি কাঁচামরিচ বিক্রি হয় ২৮০-৩২০ টাকায়। পেঁয়াজের কেজি ১২০ টাকা। লাউ পিস ৫০-৬০ টাকা, আলুর ৬০ টাকা কেজি। ৩০ টাকার মিষ্টি কুমড়া বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকা। ৪০ টাকার কাঁচাকলা ৬০ টাকা। ৪০ টাকার শসা বিক্রি হয়েছে ৬০ টাকায়। গত সপ্তাহের চেয়ে এদিন ঢ্যাঁড়শের দাম কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫০ টাকায়। প্রতি কেজি পেঁপে ৩০ টাকা থেকে হয়েছে ৪০-৫০ টাকা। বেগুন বিক্রি হতে দেখা গেছে ১৩০-১৫০ টাকায়। ৫০ টাকার নিচে বাজারে সবজি মিলছে না। ব্যবসায়ীদের দাবি, সরবরাহ কম থাকায় দাম বেড়েছে। কাঁচাবাজারের বিক্রেতা খাইরুল ইসলামের ভাষ্য, কয়েকদিন আগে টানা বৃষ্টি হয়েছে। তা ছাড়া অনেক এলাকায় বন্যা হচ্ছে। মানুষের সবজি ও কাঁচামালের ক্ষতি হয়েছে। এতে সরবরাহ কম। তাই সব কিছুর দাম বেড়েছে। দাম কমাতে হলে আগে আড়তদারদের নিয়ন্ত্রণের আহ্বান জানান পাইকারি বিক্রেতা আব্দুল খালেক। তিনি বলেন, আড়ত থেকে কিনে সামান্য লাভে বিক্রি করেন। হরিণাকুণ্ডু উপজেলা মোড়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে আশরাফুল ইসলামের। তাঁর দাবি, খামারির কাছ থেকেই প্রতি পিস ডিম কিনতে হয় ১৩ টাকা ২০ পয়সায়। এর সঙ্গে পরিবহন খরচ রয়েছে। খুচরায় বিক্রি করছেন ১৩ টাকা ৩৩ পয়সায়। আনার সময় অনেক ডিম ভেঙে যায়। ফলে লাভ থাকে না। শুধু ক্রেতা ধরে রাখতেই ডিম বিক্রি করছেন। উৎপাদক ও পাইকার পর্যায়ে দাম নিয়ন্ত্রণ না করতে পারলে ডিম বা ব্রয়লার মুরগির দাম খুচরা বাজারে কমবে না বলে মনে করেন তিনি। মাছের বাজারেও একই অবস্থা। এদিন সকালে হরিণাকুণ্ডু শহরের দৈনিক বাজারে প্রতি কেজি রুই ও কাতলা প্রকারভেদে বিক্রি হয়েছে ২৫০-৩৫০ টাকায়। পাঙাশ ও তেলাপিয়ার দর ১৫০-২৫০ টাকা; চ্যাঙ ও দেশি পুঁটি বিক্রি হয় ৩২০-৫০০ টাকায়। মাছ বিক্রেতা জয়নাল মিয়ার ভাষ্য, আড়তে তেমন মাছ আসছে না। অল্প পরিমাণে যা আসছে, অনেক বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। আড়তদার কামাল উদ্দিন বলেন, বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের আড়তে মাছ আসে। কিছু এলাকায় বন্যা ও অতিবৃষ্টির কারণে প্রচুর ঘের-পুকুর তলিয়ে গেছে। এ ছাড়া প্রচুর মাছ মারাও গেছে। ফলে সরবরাহ কমেছে, তাই দাম বেশি। ঝিনাইদহ ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক নিশাত মেহের বলেন, এই এলাকায় খামারি নেই। ব্যবসায়ীরা পাবনা বা অন্য এলাকা থেকে বেশি দামে ডিম কিনেন। ফলে সরকারের বেঁধে দেওয়া দর নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। তবুও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলেছেন। ডিমসহ সব নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন। প্রতিনিয়ত বাজার তদারকি চলছে জানিয়ে ইউএনও আক্তার হোসেন বলেন, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে নানামুখী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

খুলনার পাইকগাছা ও তার পার্শ্ববর্তী রাড়ুলী বাঁকা বাজারে জমে উঠেছে ঈদের বেচা কেনা।

জাতীয়তাবাদী দলের পুনর্জাগরণে এডভোকেট এস এম ওবায়দুল হক নাসির: ঘাটাইলে নতুন দিগন্তের উন্মোচন

প্রথম আলো কার্যালয়ের সামনে জিয়াফত কর্মসূচি

‘ডিভোর্স’ পারফিউম নিয়ে মানুষের কৌতূহল বাড়ছে