ওয়াশিংটন ডি.সি.,
ফিলিস্তিনিদের স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের অধিকার নেই—এই মন্তব্য আবারও জোরালোভাবে পুনর্ব্যক্ত করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, ফিলিস্তিনিরা নিজেদের প্রশাসন চালাতে পারলেও, তাদের হাতে কখনোই কোনো 'সার্বভৌম ক্ষমতা' তুলে দেওয়া হবে না। গতকাল সোমবার (৭ জুলাই) যুক্তরাষ্ট্র সফরে হোয়াইট হাউসে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে এক বৈঠককালে এই বিস্ফোরক মন্তব্য করেন নেতানিয়াহু। জানা গেছে, এই বৈঠকে গাজায় যুদ্ধবিরতি এবং হামাসের হাতে আটক জিম্মিদের মুক্তি নিয়ে সম্ভাব্য চুক্তি নিয়েও আলোচনা হয়।
সার্বভৌম ক্ষমতার লাগাম ইসরায়েলের হাতে
আল-জাজিরা জানিয়েছে, নেতানিয়াহু বৈঠকে বলেন, "ফিলিস্তিনিদের নিজেদের শাসন করার অধিকার থাকা উচিত। তবে যেসব ক্ষমতা আমাদের নিরাপত্তার জন্য হুমকি সৃষ্টি করতে পারে, সেগুলো তাদের হাতে যাবে না। সামগ্রিক নিরাপত্তাসহ সব সার্বভৌম ক্ষমতা থাকবে ইসরায়েলের অধীনে।" তিনি আরও বলেন, "আমরা এমন শান্তি চাই, যেখানে আমাদের প্রতিবেশী ফিলিস্তিনিরা আমাদের ধ্বংস করতে না চায়। আর সেই শান্তি এমন হবে, যেখানে আমাদের নিরাপত্তা—সার্বভৌম নিরাপত্তার ক্ষমতা—সব সময় আমাদের হাতেই থাকবে।"
"আর কখনো নয়": ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা নিয়ে নেতানিয়াহুর শপথ
ফিলিস্তিন রাষ্ট্র কখনোই প্রতিষ্ঠিত হতে দেওয়া যাবে না মর্মে তিনি বলেন, "এখন অনেকেই বলবে, 'এটা তো পূর্ণাঙ্গ রাষ্ট্র নয়, এটা রাষ্ট্রই নয়, এটা ওটা।' আমরা এসব নিয়ে ভাবি না। আমরা শপথ করেছি—আর কখনো নয়। আর কখনো নয়—মানে এখনই। এটা আর কখনো ঘটতে দেওয়া হবে না।" তার এই মন্তব্য ফিলিস্তিন সমস্যার দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান ধারণার প্রতি ইসরায়েলের বর্তমান সরকারের অনীহাই পুনর্বার প্রকাশ করে।
ট্রাম্পের প্রতিক্রিয়া: "আমি জানি না"
এদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বিষয়টি নিয়ে খুব একটা আগ্রহী নন বলেই মনে হচ্ছে। নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠকের সময় হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে যখন তার কাছে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বিষয়ে তার ভাবনা জানতে চাওয়া হয়, জবাবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট শুধু বলেন, "আমি জানি না।" ট্রাম্পের এই সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়া আন্তর্জাতিক মহলে বিভিন্ন জল্পনা তৈরি করেছে।
নেতানিয়াহুর এই কঠোর অবস্থান এবং ট্রাম্পের নীরবতা ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংঘাতের ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ বাড়িয়ে দিয়েছে। এই মন্তব্যগুলো কি চলমান শান্তি প্রচেষ্টাকে আরও জটিল করে তুলবে, নাকি এর পেছনে অন্য কোনো কৌশল রয়েছে, তা সময়ই বলে দেবে।