প্রতিনিধি 13 September 2024 , 5:27:54 প্রিন্ট সংস্করণ
মতিন গাজী
খুলনা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ত্রান ও পূনবাসন শাখা থেকে ফুলতলা উপজেলায় অবস্থিত ১১টি এতিমখানা ও মাদ্রাসায় জিআর চাল বরাদ্দ হয় ৩৩ মেট্রিক টন । সেই চাউলের বেশিরভাগই গায়েব হয়ে যায়। নাম মাত্র চাউল পায় মাদ্রাসা ও এতিমখানা । চাউল আত্মসাতের পিছনে ফুলতলা উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সেক্রেটারী আসলাম খাঁন ও ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের নেতা খলিল শেখের সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়।
তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, আসলাম খাঁন ও খলিল শেখ মূলত খুলনার বিভিন্ন সরকারী প্রতিষ্ঠান থেকে ফুলতলার মাদ্রাসা ও এতিমখানার নামে বরাদ্দ বা আর্থিক অনুদান নিয়ে আসেন। তবে বেশিরভাগ আর্থিক অনুদান এই দুই আওয়ামীলীগ নেতার পকেটে চলে যায়। শুধু এখানেই শেষ নয়। মাদ্রাসা ও এতিমখানার পরিচালনা পরিষদের নাম বে-নাম কাগজপত্র ও স্বাক্ষর জাল করার মত গুরুত্বর অভিযোগ উঠে আসে।
দামোদার কারিকর পাড়া মহিলা মাদ্রাসা পরিচলানা পরিষদের সদস্য ও আরবী বিভাগের শিক্ষিকা রেখা বেগম জানান, ৩টন চাউল আমাদের মাদ্রাসায় বরাদ্দ হয়, তবে আমরা পেয়েছি মাত্র ৩০ হাজার টাকা, আসলাম খাঁন আমাদের ইউএনও’র কাছে লিখিত অভিযোগ দিতে দেয়নি।
মশিয়ালী হযরত আঃ কাদের জিলানী (রহঃ) হাফিজিয়া মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি সরদার আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আমার মাদ্রাসায় চাউল আসছে, উঠানো হয়ে গেছে, অথচ আমরা জানলামই না. আমাদের স্বাক্ষর জাল করে এসব করেছে।
সরজমিনে গিয়ে জানা যায়, দারুন নাজাত মাদ্রাসা, ফুলতলা আহম্মাদিয়া এতিমখানা, দামোদার ফজলুল উলুম, মশিয়ালী শিশু সদন, কারিকর পাড়া মহিলা মাদ্রাসা, খাদিজাতুল কুবরা মহিলা মাদ্রাসা, মদিনাতুল উলুম এতিমখানা, কাজী আবু মাকারম এতিমখানা, মশিয়ালী হযরত আঃ কাদের জ্বিলানী মাদ্রাসা, গোড়াখোলা দাখিল মাদ্রাসা, আকাম আলী বিশ্বাস মাদ্রাসা । এই প্রত্যকটি মাদ্রাসা ও এতিমখানায় ৩ মট্রিক টন চাউল বরাদ্দ হয়। মোট ১১টি প্রতিষ্ঠানে ৩৩ মেট্রিক চাউল ত্রান ও পূর্নবাসন শাখা থেকে বরাদ্দ হয় । উল্লেখিত ১১টি প্রতিষ্ঠানে কোনটিতেই ৩ মেট্রিক টন চাউল বা সমপরিমান টাকা পায়নি। নাম মাত্র ২০-৩০ হাজার টাকা পেয়েছ। এই সকল চাউল আত্মসাতের ঘটনার পিছনে খলিল শেখ সরাসরি জড়িত এবং তার সহযোগী হিসেবে ছিলেন থানা আওয়ামীলীগের সাবেক সক্রেটারী আসলাম খাঁন এমনই মন্তব্য মাদ্রাসা ও এতিমখানা সংশ্লিষ্টদের।
এ বিষয়ে মুঠাফোনে আসলাম খাঁনকে না পেলেও খলিল শেখকে পাওয়া যায়। মুঠোফোনে খলিল বলেন, আমি কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত নই। আমার বিরুদ্ধে যে সকল অভিযোগ আসছে তা সঠিক নয়।
ফুলতলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাসনীম জাহান জানান, এতিমদের জন্য চাউল বরাদ্দ এসেছে, তা আবার আত্মসাৎ হয়েছে। এটা মেনে নেওয়া যায় না, মন্ত্রণালয় থেকে বরাদ্দ এসেছে তা আবার তছরুপ হবে তাও আবার এতিমদের বিষয়,এটার বিষয় আমি সবসময় সচেষ্ট থাকব এবং তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।