শিল্পী আক্তার, ঢাকা:
“একজন ‘রোকেয়া সরকার’ বারবার পাওয়া যাবে না। দলের দুঃসময়ে কঠিন ভূমিকা ছিল তার। রোকেয়া সরকারের রাজপথের শ্রম হাজার কোটি টাকা দিয়ে পরিশোধ করা যাবে না। রোকেয়া সরকার ছাড়া বনানী থানার বিকল্প নাই। রোকেয়া সরকারকে মাইনাস করে এই পকেট কমিটি বিলুপ্ত করা হোক।”
কথাগুলো ফেসবুকে লিখেছেন মহানগর উত্তর বনানী থানাধীন ১৯নং ওয়ার্ড যুবদল নেতা শহিদুল ইসলাম।
সম্প্রতি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মহিলা দল ঢাকা মহানগর উত্তর এর বনানী থানা আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। নতুন কমিটি ঘোষণার পর থেকেই শুরু হয়েছে নানা বিতর্ক!
চলছে আলোচনা-সমালোচনা। অভিযোগ উঠেছে নব-ঘোষিত কমিটিতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ঠাই দেওয়া হয়েছে। যারা এতদিন আওয়ামী লীগ করতো তারা এখন টাকার বিনিময়ে বিএনপি বনে গেছে। ৫ আগষ্টের আগে তাদের বিএনপিতে কোনো ভূমিকা ছিল না তাদের নিয়ে ঘোষিত কমিটিকে অনেকে রহস্য জনক বলে মনে করছেন।
ইতিমধ্যে খোদ বিএনপি নেতারাই সদ্য ঘোষিত বনানী থানা মহিলা দলের কমিটিতে স্থান পাওয়া কয়েকজনের আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করেছেন। তাদের পুরনো পদপদবির ঘোষণা পত্র শেয়ার করেছেন।
এদিকে জানা গেছে, বনানীতে বিএনপির একজন বিশ্বস্ত কর্মীর নাম রোকেয়া সরকার। যিনি কমিটিতে পদ পাওয়ার জন্য সর্ব প্রথম সুযোগ্য দাবিদার। রাজপথে যার আছে হাজারো উল্লেখযোগ্য ত্যাগের ঘটনা। বিএনপির রাজনীতি করার অপরাধে তিনি ঘর সংসার ছেড়ে পালিয়ে বেড়িয়েছেন দিনের পর দিন। শত জুলুম নির্যাতন সহ্য করেও দল ছাড়েননি। এখন পুরস্কারের বদলে তাকে দেওয়া হয়েছে তিরস্কার! রোকেয়াকে রহস্যজনক কারণে সদ্য ঘোষিত কমিটির কোথাও রাখা হয়নি। এনিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অনেক বিএনপি নেতা কর্মীরাই।
বনানী থানা যুবদলের সাবেক প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি শাহজাহান সরকার ফেসবুকে লিখেছেন, ‘আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসী বাহিনীর কাছে যেহেতু ত্যাগী কর্মীরা হার মানেনি আর কিছু আমলা কামলার কাছে হার মানবে, কখনোই না। রোকেয়া সরকার রাজপথ থেকে লড়াই করে বেড়ে ওঠা কর্মী। বিগত সতেরো বছর পদ পদবি ছাড়াই যেহেতু দলের জন্য লড়াই করেছে, আর এখন দলের ভিতরে যেসব আমলা কামলারা ঢুকে পড়েছে তাদের থেকে দলকে নিরাপদ রাখতে রোকেয়া সরকার আবারো লড়াই করবে। সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।’
শাহজাহান সরকার একটি ছবি শেয়ার করে আরো লিখেছেন, ‘আওয়ামী লীগের মহিলা নেত্রী ১৯ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মফিজ কাউন্সিলর এবং স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মাসুদকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানাচ্ছে, লাল চিহ্ন এই মহিলা বনানী থানা স্বঘোষিত আহবায়ক কমিটির ৬ নং যুগ্ন আহবায়ক হয় কিভাবে? আমি একজন বিএনপির কর্মী হিসেবে আমার প্রশ্ন।’
বনানী থানা যুবদল কর্মী মাহারুজ্জামান অপু ফেসবুকে লিখেছেন, ‘রাজপথ নাকি বেঈমানি করে না! রাজপথে আর কি কি যোগ্যতা প্রমাণের বাকী রাখে! আমি দায়িত্ব নিয়ে বলছি দেশনেত্রীর হাজিরা হতে শুরু করে আন্দোলন-সংগ্রামে, প্রতিটি সিটি কর্পোরেশন ও স্থানীয় নির্বাচনে উনি স্বশরীরে উপস্থিত ছিলেন এবং নি:সন্দেহে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করেছেন, আমি ক্ষুদ্র কর্মী হিসাবে দুঃখ প্রকাশ করলাম। নবগঠিত কমিটিতে (রোকেয়া সরকার) উনাকে এইভাবে মাইনাস করে কার লাভ হলো? দলের নাকি ব্যাক্তির?’