অন্যান্য

বাঞ্ছারামপুরে আলোচিত শাহিনুর হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন

  প্রতিনিধি 31 July 2025 , 1:13:59 প্রিন্ট সংস্করণ

মাহমুদুল হাসান চট্টগ্রাম বিভাগীয় ব্যুরো প্রধানঃ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরের চাঞ্চল্যকর শাহিনুর আক্তার-(২৫) হত্যা ঘটনার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এর সদস্যরা। হত্যাকান্ডে জড়িত মোঃ সুজন মিয়া-(৩৭) কে গ্রেপ্তার করে গত বুধবার বিজ্ঞ আদালতে হাজির করলে সুজন মিয়া হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করে।
এর আগে গত ২৬ জুলাই শনিবার রাতে ঢাকার কামরাঙ্গীরচর থানার বাগানবাড়ি এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত সুজন মিয়া বাঞ্ছারামপুর উপজেলার দড়ি বাঞ্ছারামপুর গ্রামের মোঃ রফিক মিয়ার ছেলে।
নিহত শাহিনুর আক্তার একই এলাকার গিয়াস উদ্দিনের কন্যা ও সৌদি আরব প্রবাসী হাসান মিয়ার স্ত্রী। শাহিনুর আক্তার বাঞ্ছারামপুর পৌর এলাকার ৭ নং ওয়ার্ডের থানা কলোনীর স্টীল ব্রীজ সংলগ্ন বাড়ির বাসিন্দা মোঃ নজরুল ইসলামের বাসার নীচ তলায় ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করতো।
পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই), ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার শচীন চাকমা জানান, নিহত শাহিনুর আক্তার তার প্রথম স্বামীকে তালাক দিয়ে সৌদি আরব প্রবাসী হাসান মিয়াকে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। প্রথম সংসারে তার সিয়াম নামে ১০ বছরের একটি ছেলে রয়েছে। ছেলেটি তার বাবার সাথে থাকে।
দ্বিতীয় বিয়ের পর শাহিনুর আক্তার বাঞ্ছারামপুর পৌর এলাকার ৭ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মোঃ নজরুল ইসলামের বাসার নীচ তলায় ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করতেন। গত ১৭ জুলাই আসামী সুজনসহ আরো ৩ জন শাহিনুরের বাসায় গিয়ে তার কাছে ৫ লাখ টাকা চাদা দাবি করেন। শাহিনুর টাকা দিতে অস্বীকার করায় আসামীরা চাকু দিয়ে শাহিনুরের পেটে আঘাত করে তাকে হত্যা করে। পরে তার লাশ ঘরে রেখে রুমের বাইরে থেকে তালা দিয়ে চলে যায়।
১৮ জুলাই রাতে রুম থেকে পচা দূর্গন্ধ বের হলে শাহিনুরের পিতা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ এসে তালা ভেঙ্গে রুম থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
এ ঘটনায় শাহিনুরের পিতা গিয়াস উদ্দিন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে বাঞ্ছারামপুর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। (মামলা নং -১৫(০৭)২০২৫, ধারা-৩০২/৩৪ পেনাল কোড।)
এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে পিবিআই ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পরিদর্শক মোঃ বেলাল উদ্দিন ও এস আই শাহাদাত হোসেনের নেতৃত্বে পিবিআইয়ের একটি ক্রাইমসিন টিম ঘটনাস্থলে পৌছে ছায়া তদন্ত শুরু করে। ছায়া তদন্তকালে তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে ঘটনায় জড়িত আসামীর বিষয়ে তথ্য পাওয়া গেলে পিবিআই, ব্রাহ্মণবাড়িয়া মামলাটি অধিগ্রহণ করে এস আই শাহাদাত হোসেনকে তদন্তকারী কর্মকর্তা নিয়োগ করেন। পরে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় গত ২৬ জুলাই রাতে আসামী মোঃ সুজন মিয়াকে ঢাকার কামরাঙ্গীরচর থানাধীন চাঁন মসজিদ বাগান বাড়ী রোড এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত আসামী সুজন পুলিশকে জানায় সে এলাকায় মাদক ব্যবসা ও জুয়ার বোর্ড পরিচালনা করতো।
গত ২৮ জুলাই তাকে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুরের আবেদন করলে বিজ্ঞ আদালত ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেন। রিমান্ডে থাকা অবস্থায় সুজনকে তথ্য প্রযুক্তি থেকে প্রাপ্ত তথ্য ও সোর্সের মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্য নিয়ে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে ঘটনার কথা স্বীকার করে।
গত ৩০ জুলাই আসামী সুজনকে বিজ্ঞ আদলতে হাজির করলে সে হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।
পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই), ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার শচীন চাকমা আরো জানান, হত্যাকান্ডে জড়িত অন্য আসামীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

আরও খবর

                   

জনপ্রিয় সংবাদ