অন্যান্য

বিকাশ-নগদে হিসাব খুলবেন কীভাবে, কী সুবিধা পাওয়া যায়

  প্রতিনিধি 1 September 2025 , 3:49:17 প্রিন্ট সংস্করণ

বাংলাদেশে আর্থিক লেনদেনে নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা (এমএফএস)। বিকাশ, নগদ ও রকেটের মতো সেবা দেশের বেশির ভাগ মানুষের জীবনে সহজলভ্য আর্থিক সেবা নিশ্চিত করেছে। এর ফলে ধনী-গরিব সবাই এ ধরনের আনুষ্ঠানিক আর্থিক লেনদেনব্যবস্থায় যুক্ত হয়েছেন, যা দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক পরিবর্তন আনছে।
এখন সহজেই এসব হিসাব খোলা যাচ্ছে। নিজ নিজ অ্যাপ ব্যবহার করে বা এজেন্টের কাছে গিয়ে হিসাব খুলে লেনদেন করা যাচ্ছে। এ জন্য প্রয়োজন একটি সচল মোবাইল নম্বর, জাতীয় পরিচয়পত্র অথবা পাসপোর্ট এবং একটি স্মার্টফোন।
যেভাবে হিসাব খুলবেন
হিসাব খুলতে হলে গুগল প্লে স্টোর বা অ্যাপল অ্যাপ স্টোর থেকে বিকাশ, নগদ, রকেট বা পছন্দের এমএফএস প্রতিষ্ঠানের অ্যাপটি ডাউনলোড করুন। অ্যাপটি খুলে ‘নতুন অ্যাকাউন্ট খুলুন’ বা ‘রেজিস্টার’ অপশনে ক্লিক করুন। এরপর আপনার মোবাইল নম্বরটি দিন এবং অপারেটর (যেমন রবি, এয়ারটেল, গ্রামীণফোন, বাংলালিংক, টেলিটক) নির্বাচন করুন। আপনার নম্বরে একটি যাচাইকরণ কোড আসবে। কোডটি দিয়ে আপনার মোবাইল নম্বরটি যাচাই করুন।
এবার আপনার জাতীয় পরিচয়পত্রের সামনের এবং পেছনের পৃষ্ঠার ছবি তুলুন এবং অ্যাপে আপলোড করুন। অ্যাপের নির্দেশনা অনুযায়ী ছবি তুললে তা আরও সহজ হবে। আপনার ব্যক্তিগত তথ্য যাচাই করার পর অ্যাপ আপনাকে একটি সেলফি তুলতে বলবে। স্পষ্ট ছবি তোলার চেষ্টা করুন, যেখানে আপনার চেহারা পরিষ্কারভাবে দেখা যায়। এরপর কিছু ব্যক্তিগত তথ্য (যেমন পেশা, লিঙ্গ, আয়ের উৎস, নমিনি) দিতে হবে। এসব তথ্য প্রদান করে সম্মতি দিন।
সব তথ্য যাচাই হয়ে গেলে আপনার মুঠোফোনে একটি এসএমএস আসবে, যেখানে আপনার হিসাব খোলার বিষয়টি নিশ্চিত করা হবে।
এরপর আপনার হিসাবের জন্য একটি নতুন পিন নম্বর সেট করুন। মনে রাখবেন, এই পিন অন্য কাউকে জানানো যাবে না। একটি জাতীয় পরিচয়পত্রের বিপরীতে শুধু একটি সেবায় একটি হিসাব খোলা যায়। পিন নম্বরটি সব সময় গোপন রাখুন। অপরিচিত নম্বর থেকে আসা কোনো লিংকে ক্লিক করবেন না বা কোনো ধরনের আর্থিক প্রলোভনে পিন নম্বর বা ব্যক্তিগত তথ্য দেবেন না।
এরপর ব্যাংক থেকে টাকা এনে বা এজেন্টের কাছে গিয়ে টাকা জমা করে লেনদেন শুরু করা যাবে।
সেবার সুবিধা
এখন এসব সেবায় টাকা জমা করা, টাকা পাঠানো, মোবাইল রিচার্জ, বিল পরিশোধ, কেনাকাটা, বিমার প্রিমিয়াম পরিশোধ, ব্যাংকের কিস্তি, ক্রেডিট কার্ডের বিলসহ নানা সেবা নেওয়া যায়। এতে জীবন আরও সহজ ও গতিময়। যেমন মুহূর্তেই আপনি টাকা লেনদেন করতে পারবেন। আবার নগদ টাকার পরিবর্তে এমএফএস দিয়ে মুদিদোকান থেকে শুরু করে বড় বড় সুপারশপে কেনাকাটা করতে পারবেন। পারবেন ব্যাংকের কিস্তি পরিশোধ বা ডিপিএসের টাকা জমা দিতে। এভাবে জীবনের প্রায় প্রতিটি লেনদেনের সঙ্গে আপনি এই এমএফএস সুবিধা ব্যবহার করতে পারেন। যেসব সুবিধা মেলে, এর মধ্যে অন্যতম হলো-
১. সহজলভ্য ও গতি
মুঠোফোন ও ইন্টারনেট সংযোগ থাকলে যেকোনো স্থান থেকে যেকোনো সময় লেনদেন করা যায়। এতে সময় ও শ্রম দুটোই বাঁচে। পাশাপাশি ইউএসএসডি ব্যবহার করেও লেনদেন করা যায়।
২. আর্থিক অন্তর্ভুক্তি
যারা ব্যাংকিং সেবার বাইরে ছিল, তাদের জন্য এটি একটি বড় সুযোগ। মোবাইল ব্যাংকিং দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষকে আর্থিক ব্যবস্থার মূল স্রোতে যুক্ত করেছে।
৩. নিরাপত্তা
বেশির ভাগ লেনদেন একটি নির্দিষ্ট পিন নম্বর দ্বারা সুরক্ষিত থাকে। এর ফলে টাকা হারানোর ভয় কম থাকে। লেনদেনের রেকর্ড ফোনে জমা থাকে।
৪. কম খরচ
অনেক ক্ষেত্রে মোবাইল ব্যাংকিং লেনদেনের খরচ ঐতিহ্যবাহী ব্যাংকিংয়ের চেয়ে কম হয়, যা সাধারণ মানুষের জন্য সাশ্রয়ী।
৫. মানিব্যাগের মতো
মুঠোফোনেই অ্যাপস ব্যবহার করে এই সেবা নেন বেশির ভাগ মানুষ। তাই এটি অনেকটা মানিব্যাগের মতো। মনে হবে সব টাকা আপনার পকেটে আছে, যা আপনাকে একধরনের স্বস্তি দেবে।

আরও খবর

                   

জনপ্রিয় সংবাদ