প্রতিনিধি 23 September 2024 , 1:59:39 প্রিন্ট সংস্করণ
মতিন গাজীঃ
টানা বৃষ্টিপাত থেমে গিয়ে আকাশে ঝলমলে রোদের দেখা মিলেছে। সাথে সাথে ভয়াবহ দুর্ভোগ বেড়েছে পানিবন্দি মানুষের। বৃষ্টিপাত থেমে গেলেও এখন নজীরবিহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে যশোরের অভয়নগর উপজলোর ২৫ গ্রামের মানুষকে। আগেই বৃষ্টির পানিতে ভেসে গেছে মাছের ঘের, তলিয়ে গেছে বসতভিটাসহ ফসলী ক্ষেত। গবাদী পশু নিয়ে বিপাকে পড়েছে পানিবন্দি মানুষ। স্কুল কলেজের অস্থয়ী আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে শত শত পরিবার।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার কোটা, বেতভিটা, বলারাবাদ, আন্ধা, ডুমুরতলা, স্বরখোলা, দিঘলিয়া, ভাটাডাঙ্গিসহ অধিকাংশ গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে রয়েছে। বিশুদ্ধ পানির অভাবে দুষিত পানি পান করে নানাবিধ রোগে আক্রান্ত হচ্ছে বেশিরভাগ নারী ও শিশুরা। তাছাড়া পানিবাহিত রোগ ছড়িয়ে পড়েছে পানিবন্দি সকল গ্রামে। এদিকে ভবদহের বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কায় রয়েছে আরো ১৫ গ্রামের হাজার হাজার মানুষ। টেকারঘাটের চমরডাঙ্গা এলাকায় বেড়িবাঁধের উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হওয়ার খবরে গ্রামবাসীর মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। মাইকিং করে লোকজন জড়ো করা হয়। এরপর সম্পুর্ন স্বেচ্ছাশ্রমে বালুর বস্তা দিয়ে নতুন বাঁধ তৈরি করা হয়েছে।
উপজেলার ফকিরহাট গ্রামের বারান্দি এলাকার বাসিন্দা অধ্যাপক ইমাদ উদ্দিন গাজী বলেন, অভয়নগরে নি¤œাঞ্চল আগেই প্লাবিত হয়েছে। তবে এখন যে পানির চাপ তাতে আমাদের পায়রা ইউনয়নের বেশ কয়েকটি গ্রাম নতুন করে জলাবদ্ধ হয়ে পড়তে পারে। ভবদহের বাঁধ আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ হলে তাৎক্ষনিক এলাকাবাসীকে সাথে নিয়ে তা মেরামত করা হয়েছে। যদি ভবদহের বাঁধ ভেঙ্গে যায় তবে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হবে বারান্দি, ফকিরহাট, পায়রা, সমসপুর, দামুখালী ও দত্তগাতি গ্রামের সাধারণ মানুষ।
উপজেলার পায়রা ইউনিয়নের সমসপুর গ্রামের বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম সরদার বলেন, আপাতত বালুর বস্তার বাঁধ দিয়ে পানি ঠেকানো হয়েছে। তবে প্রতিনিয়ত যেভাবে পানি বাড়ছে তাতে আমরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছি। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মনিরামপুরের ডাকুরিয়া গ্রামের মধ্যদিয়ে যশোরের উঁচু অঞ্চলের পানি নেমে ভবদহ এলাকায় এসে জমা হচ্ছে। তবে তুলনামূলক পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় নতুন নতুন এলাকায় পানি ঢুকে পড়ছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জয়দেব চক্রবর্তী বলেন, আমরা ইতিমধ্যে আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নেওয়া পানিবন্দি মানুষকে প্রয়োজনীয় খাদ্য ও ওষুধ সামগ্রী সহায়তা করেছি। নতুন এলাকায় যেন পানি প্রবেশ করতে না পারে সেদিকে উপজেলা প্রশাসন নজর রেখেছে। ভবদহের জলাবদ্ধতার স্থায়ী সমাধান কল্পে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।