অন্যান্য

ভবদহ এলাকায় শৌচাগার ও বিশুদ্ধ খাবার পানির তীব্র সংকট

  প্রতিনিধি 23 October 2024 , 7:46:25 প্রিন্ট সংস্করণ

জি এম ফিরোজ উদ্দিন

,মণিরামপুর:

মণিরামপুরের পানিবন্দি ভবদহ এলাকার তিন ইউনিয়নের বেশিরভাগ গ্রাম পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় শৌচাগার ও বিশুদ্ধ খাবার পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। এতে করে চরম স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে ভুক্তভোগীদের। দিন কয়েক পূর্বে কিছু ল্যাট্রিন ও নলকূপ স্থাপন করা হলেও তা চাহিদার তুলনায় নিতান্ত অপ্রতুল। উপজেলার কুলটিয়া, নেহালপুর,মনোহরপুর ও দুর্বাডাঙ্গা ইউনিয়নে সম্প্রতি ভারী বৃষ্টিতে বাড়ি ঘর পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় এলাকার হাজারো মানুষ ঠাঁই নিয়েছেন রাস্তার উপর ও বিভিন্ন স্কুলের কক্ষে। সোমবার দুর্গত এলাকার মণিরামপুর উপজেলার কুলটিয়া ইউনিয়নের লখাইডাঙ্গা, কুলটিয়া, সুজাতপুর, হাটগাছা, বাজেকুলটিয়া, মহিষদিয়া, আলীপুর, পোড়াডাঙ্গা ও পদ্মনাথপুর, নেহালপুর ইউনিয়নের পাঁচাকড়ি, বালিধা ও নেহালপুর এবং দূর্বাডাঙ্গা ইউনিয়নের কুশখালি, আসাননগর, বাহিরঘরিয়া, দত্তকোনা, কাজিয়াড়া, বাজিতপুর, কামিনীডাঙ্গা ,মনোহরপুরের রজিপুরের ককিছু অংশ,বয়ারখোলা গ্রাম ঘুরে এসব চিত্র চোখে পড়ে। ওই এলাকার অধিকাংশ বাড়ি পানিতে তলিয়ে গেছে। শৌচাগার ও নলকূপগুলোর বেশিরভাগ পানির নিচে। কেউ কেউ বাঁশ ও চট দিয়ে পানির উপর ঝুলন্ত শৌচাগার তৈরি করে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে শৌচকার্য করতে বাধ্য হচ্ছেন।

অপরদিকে ঘরবাড়ি হারা এসব দুর্গত মানুষেরা বসতভিটা ছেড়ে নেহালপুর-কালিবাড়ী টু নওয়াপাড়া সড়কের ওপর টং ঘর বানিয়ে গবাদি পশুর সঙ্গে মিলে বসবাস করছেন। ঘরের এক পাশে গরু-ছাগল আরেক পাশে চৌকি বানিয়ে রাতযাপন করছেন। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশেই চলছে রান্না, খাওয়া-দাওয়া। হাটগাছা গ্রামের মিলন বৈরাগী, ফুগী মণ্ডল, মান্দারী মল্লিক, অধীর মণ্ডল, ক্ষুদিরাম বিশ্বাস, মালতি বালাসহ একাধিক ভুক্তভোগীরা প্রশ্ন করেন, আমাদের দুর্দশা কি কোনদিন যাবে না? জলই আমাদের শেষ করে ফেললো। হাটগাছা গ্রামের শিমুল বৈরাগী জানান, টয়লেট আর খাবার পানির সংকট দেখা দেয়ায় চরম স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়েছেন এলাকার মানুষ।
কুলটিয়া ইউপি চেয়ারম্যান শেখর চন্দ্র রায় পানিবন্দি মানুষকে বাঁচাতে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন। উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী জয়দেব দত্ত জানান, সংকট নিরসনে এ পর্যন্ত দুর্গত এলাকায় ১০ টিউবওয়েল ও ৪০ অস্থায়ী ল্যাট্রিন স্থাপনসহ ৫ হাজার পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট (হ্যালোজেন) বিতরণ করা হয়েছে। কিন্তু এগুলো চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল।
পানিবন্দি ভবদহ বিলপাড়ের দুর্গত মানুষ রাস্তার ওপর টং ঘর বানিয়ে গবাদি পশুর সঙ্গে মিলে করছেন বাস। শৌচাগার ও টিউবওয়েল পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় বিশুদ্ধ খাবার পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। এতে করে চরম স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে ভুক্তভোগী মানুষ। অবশ্য ইতোমধ্যে কিছু টিউবওয়েল, স্যানিটেশন স্থাপন করা হলেও তা চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল বলে দাবি ভুক্তভোগীদের।
সম্প্রতি ভারি বৃষ্টিতে বাড়ি-ঘর পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় জলাবদ্ধ ভবদহ বিলপাড়ের হাজারো মানুষ ঠাঁই নিয়েছে রাস্তার ওপর। ভবদহ বিলপাড়ের কমপক্ষে তিনশ গ্রামের তিন লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছে।সরেজমিনে যশোরের মনিরামপুর উপজেলার লখাইডাঙ্গা, পদ্মনাথপুর, সুজাতপুর, হাটগাছাসহ একাধিক গ্রাম ঘুরে এসব চিত্র চোখে পড়ে। ওই এলাকার অধিকাংশ বাড়ি পানিতে তলিয়ে গেছে। ঘরবাড়ি হারা এসব মানুষের অনেকেই মনিরামপুর-নওয়াপাড়া সড়কের ওপর টং ঘর বানিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন। একটু অবস্থা সম্পন্ন পরিবার যাতায়াতের জন্য বাড়ির উঠানে বাঁশের সাঁকো আর ডিঙ্গি নৌকা বানিয়ে নিয়েছেন। আর অসচ্ছল পরিবারগুলো রাস্তার ওপর ঘর বানিয়ে গৃহপালিত পশুর সঙ্গে দিনাতিপাত করছে। ঘরের এক পাশে থাকছে গরু-ছাগল আরেক পাশে চৌকি বানিয়ে রাত যাপন করছেন তারা। সেখানেই চলছে খাওয়া-দাওয়া।হাটগাছা গ্রামের মালতি বালাসহ একাধিক ভুক্তভোগী জানান, আর কতকাল তারা এভাবে কষ্টে দিন যাপন করবেন। ভবদহ দিয়ে পানি সরে গেলে তাদের কষ্টের লাঘব হবে। কিন্তু কেউ তাদের দিকে ফিরে তাকাচ্ছে না। এভাবে বৃষ্টি হলেই বছরের পর বছর পানিবন্দি হয়ে গরু-ছাগলের সঙ্গে আর কত দিন কাটাবেন তারা।
লখাইডাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক উৎপাল বিশ্বাস বলেন, টয়লেট আর খাবার পানির সংকট দেখা দেওয়ায় চরম স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়েছেন এলাকার মানুষ।
উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী জয়দেব দত্ত জানান, সংকট নিরসনে গত সপ্তাহে দুর্গত এলাকায় ১০টি টিউবওয়েল ও ৪০টি অস্থায়ী ল্যাট্রিন স্থাপনসহ ৫ হাজার পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট (হ্যালোজেন) বিতরণ করা হয়েছে। কিন্তু এগুলো চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল।
মনিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা তন্ময় বিশ্বাস বলেন, জলাবদ্ধ এলাকায় স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে ১০টি মেডিকেল টিম কাজ করছে

Author

আরও খবর

                   

জনপ্রিয় সংবাদ