অন্যান্য

ভাঙ্গুড়ায়ভাঙ্গুড়ায় শিক্ষার্থীদের সাড়ে ১৬ হাজর টাকা আত্মসাৎ স্কাউটস লিডার গোলাম রাব্বির

  প্রতিনিধি 14 February 2025 , 6:30:55 প্রিন্ট সংস্করণ

Oplus_131072

পাবনা পতিনিধি
স্কাউটস শিক্ষার্থীদের  সততা, নৈতিকতা, শৃঙ্খলাবোধ, বিনয়ী ও স্বেচ্ছা শ্রম শেখাতে একটি অনবদ্য প্রতিষ্ঠান। স্কাউটিং একজন শিক্ষার্থীকে শেখায়  কিভাবে সততা, নৈতিকতা, শৃঙ্খলা বোধ ও স্বেচ্ছা শ্রমে সমাজ ও দেশের কল্যাণী নিজেকে আত্মনিয়োগ করতে হয়। কিন্তু পাবনার ভাঙ্গুড়ায় ঘটেছে তার বিপরীত কাজ। স্কাউটিং শেখানো ও পোশাক দেয়ার কথা বলে ১১ জন শিক্ষার্থীর নিকট থেকে ১৫০০ টাকা করে মোট ১৬,৫০০ টাকা নিয়ে দেড় বছরেও তাদের পোশাক বা টাকা ফেরত না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্কাউটার গোলাম রাব্বির বিরুদ্ধে । তিনি পাবনা জেলা স্কাউট  এডহক কমিটির ইয়াং অ্যাডাল্ট লিডার।  সরকারি ভাঙ্গুড়া ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত মোট ১১ জন শিক্ষার্থী নিকট থেকে প্রায় দেড় বছর পূর্বে তিনি ওই টাকা নিয়েছেন।  গোলাম রাব্বি ভাঙ্গুড়া বাসস্ট্যান্ড এলাকার মাসুদের ছেলে। প্রায় দেড় বছরেও শিক্ষার্থীদের স্কাউটের পোশাক কিংবা টাকা ফেরত না দেওয়ায় ব্যাপারে ওই প্রতিষ্ঠানের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ তার সাবেক ওই শিক্ষার্থীর এমন আচরণে দুঃখ, মর্মাহত ও লজ্জিত হয়েছেন ।
জানা গেছে, প্রায় দেড় বছর পূর্বে স্কাউটার গোলাম রাব্বি, তার ভাই রাফি ও ওমর ফারুক নামের তিনজন সরকারি ভাঙ্গুড়া ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণীর  শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে  স্কাউটিং এ উদ্বুদ্ধ করেন। এ সময় স্কাউটিং এর সততা, নৈতিকতা, শৃঙ্খলা বোধ,  স্বেচ্ছাশ্রমে সমাজ ও রাষ্ট্রের কল্যাণকর কাজে নিজেকে নিয়োজিত হবার লক্ষ্যে প্রায় ২৫ জন শিক্ষার্থী স্কাউটিং করার জন্য নাম লেখায়। সে সময় ওই সকল শিক্ষার্থীদের স্কাউটের সর্বোচ্চ পদক রাষ্ট্রপতি অ্যাওয়ার্ড কিভাবে পেতে হয় সে বিষয়ে তাদেরকে স্বপ্ন দেখানো হয়। ঘটনার বিষয়ে ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও স্কাউট লিডার হেদায়েতুল হক ও ভারপ্রাপ্ত  অধ্যক্ষ রফিকুল ইসলাম রবি  শিক্ষার্থীদের ভালো শিক্ষা হবে বলে স্কাউটিং করার অনুমতি দেন। কয়েকদিন স্কাউটিং এর বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়ার পর শিক্ষার্থীদের পোশাক ও ব্যাচ প্রদানের কথা বলে গোপনে প্রত্যেকজন শিক্ষার্থীর নিকট থেকে ১৫০০ করে টাকা নেন গোলাম রাব্বি ও তার ভাই রাফি। এরপরে প্রায় দেড় বছর হয়ে গেল ওই শিক্ষার্থীদের স্কাউটস এর পোষাক, ব্যাচ কিছুই দেননি এবং তাদের  সঙ্গে আর দেখাও করেনি তারা। এরপর মেসেঞ্জারে বা হোয়াটসঅ্যাপে স্কাউটসের পোশাক ও ব্যাচের  বিষয়ে যোগাযোগ করলে তারা  কোন উত্তর দেন না।  শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন পরে তারা পোশাক ও ব্যাচ না দিয়ে শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে  গ্রহনকৃত টাকা ফেরত দিবে বলে জানায়। কয়েকজন শিক্ষার্থীর টাকা তারা কৌশলে মোবাইল ফোনের বিকাশের মাধ্যমে ফেরত দিলেও ওই ১১ জন শিক্ষার্থীর ১৬,৫০০ টাকা প্রায় দেড় বছর হয়ে গেল আর তাদের ফেরত দেননি ।
 শিক্ষার্থীরা আরও অভিযোগ করে বলেন, স্কাউটাস লিডার  রাব্বি,  রাফি  ও ওমরভারুক ভাইয়ারা সততা ও নৈতিকতার কথা মুখে বললেও বাস্তবে তাদের মধ্যে বিন্দুমাত্র ওই গুণাবলী প্রমাণ দিতে পারেন নি। এখন বিষয়টি আমাদের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. রফিকুল ইসলাম রবি ও আরো বেশ কয়েকজন শিক্ষককে জানিয়েও আমরা আমাদের প্রদানকৃত টাকা ফেরত পাচ্ছি না। তাদের দাবী এ ধরনের নীতিহীন লিডার, এই ডিপার্টমেন্ট থেকে বহিষ্কার দাবি জানাই।
শিক্ষার্থীদের এমন অভিযোগের ভিডিও ফুটেজ প্রতিবেদকের নিকট সংরক্ষিত রয়েছে।
ঘটনার বিষয়, সরকারি ভাঙ্গুড়া  ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষক ও উপজেলা স্কাউটস কমিটির কোষাধ্যক্ষ  শাহিন রহমান বলেন, প্রায় দেড় বছর যাবত কোমলমতি শিক্ষার্থীদের নিকট গ্রহণকৃত ১৬ হাজার ৫০০ টাকা কিংবা স্কাউটস এর পোশাক ও ব্যাস কোনটাই দেয়নি গোলাম রাব্বি অথবা তার ভাই রাফি। কোমলমতি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এমন প্রতারণা কিছুতেই মেনে নেওয়া যায় না। কিছু বলতে গেলে উল্টো তার বিরুদ্ধে নিউজ করা হবে বলে হুমকি দেন গোলাম রাব্বি।
ঘটনার বিষয়ে সরকারি ভাঙ্গুড়া ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. রফিকুল ইসলাম রবি বলেন, গোলাম রাব্বি তার বিদ্যালয় এর ডাইরেক্ট সাবেক শিক্ষার্থী। শিক্ষার্থীদের ওই টাকা ফেরতের বিষয়ে তিনি তার সঙ্গে একাধিকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করেছেন। কিন্তু শিক্ষার্থীদের টাকা ফেরতের শুধু আশ্বস্ত করেন গোলাম রাব্বি।
 তিনি আরো আক্ষেপ করে বলেন, দীর্ঘ শিক্ষকতা জীবনে গোলাম রাব্বির মত দু একজন শিক্ষার্থীকে হয়তো নীতি-নৈতিকতা, সততার যথাযথ শিক্ষা দিতে পারেনি এটা হয়তো বা  আমার বড় অপরাধ ও ব্যর্থতা।  আবার ওই কোমলমতি শিক্ষার্থীরা যখন আমার নিকট এসে তাদের দেয়া টাকা ফেরত পায়নি বলে অভিযোগ করে তখন আমিও খুবই কষ্ট পাই। তবু বলব, গোলাম রাব্বির শুভ বুদ্ধির উদয় হোক কোমলমতি  শিক্ষার্থীদের ১৬ হাজার ৫০০ টাকা ফেরত দিক।
এবিষয়ে ভাঙ্গুড়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মোছাঃ নাজমুন নাহার বলেন, অর্থ আত্মসাৎ এর বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Author

আরও খবর

                   

জনপ্রিয় সংবাদ