আব্দুল লতিফ সরকার,লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ
লালমনিরহাটে ভুট্টা ক্ষেত থেকে হাসিনা বেগম (৪৫) নামে এক নারীর মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তার সতিন মেহেরুন বেগমকে (৪৮) হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ।
শুক্রবার (৭ মার্চ) সন্ধ্যায় দুর্গাপুর এলাকা থেকে স্থানীয়দের সহায়তায় পুলিশ তাকে নিজ হেফাজতে নেয়।
এর আগে বুধবার (৫ মার্চ) দুপুরে লালমনিরহাট সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের ফুলগাছ বামনটারী শ্মশান এলাকার একটি ভুট্টা ক্ষেত থেকে হাসিনার মাথা বিহীন মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
মৃত হাসিনা বেগম ভারতীয় সীমান্ত ঘেঁষা লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের কুটিবাড়ি গ্রামের ভ্যানচালক আশরাফুল ইসলামের দ্বিতীয় স্ত্রী। তিনি পাশের গ্রাম ভারতের দিনহাটা থানার হরিরহাট ইউনিয়নের জারিধল্লা গ্রামের কাশেম আলীর মেয়ে। পুলিশ হেফাজতে থাকা মেহেরুন বেগম তার বড় সতিন।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, গরুর ঘাস কাটতে গিয়ে স্থানীয় শ্রমিকরা ভুট্টা ক্ষেতের আইলে মাথা বিহীন এক নারীর মরদেহ দেখতে পান। খবর পেয়ে সদর থানা পুলিশ অজ্ঞাত হিসেবে মরদেহ উদ্ধার করে লালমনিরহাট সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। এ ঘটনায় ভুট্টা ক্ষেতের মালিক শফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ মরদেহ থেকে আঙুলের ছাপ নিয়ে বৃহস্পতিবার পরিচয় শনাক্ত করে। এরপর থেকে মৃত হাসিনার স্বামী ভ্যানচালক আশরাফুল ও তার বড় বউ মেহেরুনসহ পুরো পরিবার আত্মগোপন করে।
পুলিশ হাসিনার মাথা উদ্ধার করতে ও ঘটনার ক্লু উদ্ধারে অভিযান চালায়। অভিযানের অংশ হিসেবে শুক্রবার সন্ধ্যায় মৃত হাসিনার সতিন মেহেরুনের সন্ধান বের করে তাকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। তবে শুক্রবার রাতে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মাথা ও হত্যার ক্লু উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ।
দুর্গাপুর ইউনিয়নের সদস্য আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ভ্যানচালক আশরাফুলের দুই স্ত্রীর পৃথক দুইটি বাড়িতে থাকেন। তবে আশরাফুল ছোট স্ত্রী হাসিনার ঘরে থাকতেন। তাদের সতিনদের মাঝে বিরোধ চললেও আশরাফুল ছোট স্ত্রীকে সর্বদা সঙ্গে রাখতেন। এমন কি কোথাও গেলে হাসিনাকে ভ্যানে করে নিয়ে যেতেন। তাদের ভালোবাসা সম্রাট শাহজাহান-মমতাজকে হার মানায়। সেই ভালোবাসার সমাধি মাথা বিহীন হাসিনার মরদেহ মানতে পারছে না গ্রামবাসী। ঘটনার পর থেকে আশরাফুল আত্মগোপনে থাকা সন্দেহজনক।
লালমনিরহাট সদর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরনবী বলেন, মৃত হাসিনা বেগমের সতিন মেহেরুন বেগমকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তার সংশ্লিষ্টতা থাকলে গ্রেপ্তার দেখানো হবে। না থাকলে তাকে সসম্মানে বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হবে। মাথা উদ্ধার বা তার স্বামীর কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।