প্রতিনিধি 9 September 2025 , 2:46:00 প্রিন্ট সংস্করণ
NEWS DESK
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ছাত্রদল–সমর্থিত প্যানেলের সহ সভাপতি ( ভিপি) প্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান। তিনি বলেছেন, যদি ভোটগণনাতে বিন্দুমাত্র কারচুপির চেষ্টা করা হয়, যদি শিক্ষার্থীদের মতপ্রকাশের অধিকার দমন করার অপচেষ্টা হয়, শিক্ষার্থীরা তা প্রতিরোধ করবে।
আজ সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে আবিদুল ইসলাম খান বলেন, ‘আমরা বারবার প্রমাণ পেয়েছি যে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে ব্যর্থ হয়েছে। আজকের নির্বাচনে একাধিক অনিয়ম আমরা প্রত্যক্ষ করেছি। রোকেয়া হল এবং অমর একুশে হলে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছেন যে তাদের দেওয়া ব্যালটে আগে থেকেই নির্দিষ্ট প্রার্থীর পক্ষে ভোটচিহ্ন দেওয়া ছিল। প্রধান রিটার্নিং অফিসারের অনুমতিতে তদন্তে গিয়ে আমরা নিজেরাই এ ধরনের ব্যালট দেখতে পেয়েছি। আমাদের এজেন্ট এবং প্রার্থীদের বারবার হয়রানি করা হয়েছে।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস আজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রবেশ করেছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের সভাপতি ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র সংসদ প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদপ্রার্থী আবু বাকের মজুমদার।
আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলের সামনে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ অভিযোগ করেন বাকের মজুমদার। তিনি বলেন, ‘মির্জা আব্বাস ডাকসু নির্বাচনের কোন কিছুর সাথে সংশ্লিষ্ট নন। কিন্তু তিনি (মির্জা আব্বাস) আজ এখানে প্রবেশ করা মানে একটা ভিন্ন বার্তা যাচ্ছে দেশবাসীর কাছে। মির্জা আব্বাসের আজ ক্যাম্পাসে প্রবেশ করার কোনো সুযোগ নেই, রাইট (অধিকার) নেই। প্রবেশ করেছেন কেন, এটা সবচেয়ে বড় প্রশ্ন।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশ মুখের আশপাশে বিএনপির অনেক নেতা–কর্মীরা জড়ো হয়েছে বলেও দাবি করেন আবু বাকের মজুমদার। এইসব নেতাকর্মীদের মির্জা আব্বাস এনেছেন কিনা সেই প্রশ্ন রাখেন বাগছাসের এই নেতা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনকে ঘিরে দুপুরের পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আটটি গেটে জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মীদের অবস্থান নিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে ছাত্রদল।
আজ মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিনের নেতৃত্বে একটি দল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েে এমন অভিযোগ করেন।
ছাত্রদলের পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে তিনটি অভিযোগ তোলা হয়। এরমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের আটটি প্রবেশ পথে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীদের ব্যপক উপস্থিতি, প্রশাসনের শীর্ষ ব্যক্তিরা জামায়াত সংশ্লিষ্ট এবং নির্বাচনে কারচুপি।
প্রশাসনের কাছে ছাত্রদলের মৌখিক অভিযোগ প্রদানের সময় উপস্থিত ছিলেন উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খানসহ সহ উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষসহ সংশ্লিষ্টরা।
ডাকসুতে আজ মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। শেষ হয় বিকেল ৪টায়। পরে রিটার্নিং কর্মকর্তারা প্রাথমিক হিসাব দিয়ে জানান, কার্জন হল কেন্দ্রে ৮০ শতাংশের বেশি, শারীরিক শিক্ষাকেন্দ্রে ৮৩, টিএসসি কেন্দ্রে ৬৯, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাব কেন্দ্রে ৬৭, উদয়ন স্কুল কেন্দ্রে ৮৪-৮৫, ভূতত্ত্ব বিভাগ কেন্দ্রে ৬৫ এবং ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি কেন্দ্রে ৬৫ দশমিক ২৫ শতাংশ ভোট পড়েছে।
ডাকসু নির্বাচনের টিএসসির ভোট কেন্দ্রে ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেলের ভিপি প্রার্থী আবু সাদিক কায়েম ও ছাত্রদল সমর্থিত ভিপি প্রার্থী আবিদুল ইসলামকে ঢুকতে দেওয়া হলেও উমামা ফাতেমার প্যানেলের ছাত্র পরিবহন সম্পাদক রাফিজ খানকে ঢুকতে না দেওয়ায় হট্টগোল করেছে তাঁর সমর্থকেরা। পরে ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের সমর্থকেরাও এতে যোগ দেয়।
বিকেল পৌনে চারটার দিকে টিএসসির জনতা ব্যাংকের বুথের সামনে এই ঘটনা ঘটে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাফিজ খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিকেলের পর থেকেই আমি টিএসসিতে ঢুকতে চেয়েছিলাম কিন্তু আমাকে দেওয়া হয়নি। অথচ ছাত্রদলের ভিপি প্রার্থী আবিদুল ইসলাম ও ছাত্রশিবিরের ভিপি প্রার্থী আবু সাদিক কায়েমকে ঢুকতে দেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয় সাদিকের সঙ্গে আরও দশজন ভেতরে প্রবেশ করেছে।’ তিনি বলেন, ‘বিষয়টি দায়িত্বরত শিক্ষককে জানানো হলে তিনি সাদিকের সঙ্গে অন্যদের ঢোকার বিষয়টি অস্বীকার করেন। তাই আমরা তাৎক্ষনিক ক্ষোভ জানিয়েছি।’পরে টিএসসির ভেতরের পায়রা চত্বরের নিচে আবু সাদিক কায়েম সাংবাদিকদের বলেন, ‘সকাল থেকে উৎসবমুখর পরিবেশে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু আমরা দেখতে পেয়েছি একটা গোষ্ঠী নির্বাচন বানচালের জন্য ষড়যন্ত্র করছে। আমরা দেখতে পেয়েছি বহিরাগত বিভিন্ন ভোট কেন্দ্রের পাশে ভিড় করছে। যারা ষড়যন্ত্র করছে তাদের আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। শিক্ষার্থীরা যে রায় দেবে অবশ্যই আমরা সেটা গ্রহণ করব।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে কিছু নেতিবাচক ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ করেছেন ছাত্রদলের প্যানেলের ভিপি (সহ-সভাপতি) প্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান।
তিনি বলেছেন, ‘নেগেটিভিটি ঘটেছে। দুপুরের পর থেকে আমরা কারচুপির অভিযোগ পেয়েছি। আমি নিজেও অমর একুশে হলের যে কেন্দ্র আছে, সেখানে গিয়েছি। প্রমাণ পেয়েছি। তাদের সঙ্গে খুব পোলাইটলি কথা বলেছি। তারাও বলেছে, হ্যাঁ, একটা ঘটনা ঘটে গেছে। রোকেয়া হলেও একই অবস্থা। তারা বলছে, ঘটনা ঘটে গেছে।’
আজ মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্রে এস এম হলের ভোট কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে আবিদুল ইসলাম খান সাংবাদিকদের এ কথাগুলো বলেন।
আবিদুল ইসলাম বলেন, সকাল থেকে পোলিং এজেন্টদের বাধা দেওয়া হয়েছে। ভোটকেন্দ্রের বাইরে প্যানেল শিট দিতে গিয়ে তাদের বাধাগ্রস্ত হতে হয়েছে। শুধুমাত্র প্যানেলের কোড নম্বর বিতরণ করার কারণে রোকেয়া হলের পাঠচক্র বিষয়ক সম্পাদক পদপ্রার্থীকে ছাত্রত্ব শেষ করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন একজন শিক্ষক। তার এমন হিংস্রতা দেখানোর কথা নয়। অথচ তিনি শিবিরেরটা বিলি করেছেন।
নির্বাচনে কারচুপির যে অভিযোগ, সেটির কারণে শঙ্কায় রয়েছেন জানিয়ে এই ভিপি প্রার্থী বলেন, এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের কাছে লিখিত অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। এই বিষয়ে তারা সর্বোচ্চ ধৈর্যের পরিচয় দিচ্ছেন বলে জানান আবিদুল ইসলাম খান।
তিনি বলেন, কারচুপির বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ব্যবস্থা নিতে হবে। ছেড়ে দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
কেন্দ্রের কাছাকাছি জায়গায় ছাত্রদলের প্রার্থীদের লিফলেট প্রচারের বিষয়ে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে আবিদুল ইসলাম বলেন, ৪১ জন প্রার্থীর নাম মনে রাখা ভোটারের পক্ষে সম্ভব হয় না। এটাকে আচরণবিধি লঙ্ঘন ও অতিরঞ্জন (এক্সট্রিমিস্ট) হিসেবে দেখা যাবে না।
তিনি ডাকসু নির্বাচন প্রতিবেদন সংগ্রহ করতে আসা এক সাংবাদিকের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেন।
ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে উদয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে আজ মঙ্গলবার বেলা আড়াইটা পর্যন্ত ৮০ শতাংশ ভোট পড়েছে। একই সময়ে নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবন কেন্দ্রে ৮২ শতাংশ ভোট পড়েছে।
উদয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রপ্রধান এস এম শামীম রেজা বেলা তিনটার দিকে বলেন, কবি জসিম উদদীন হলের ১ হাজার ৬৪ জন, মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের ১ হাজার ২১২ জন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের ১ হাজার ৩৫০ জন ও মাস্টারদা সূর্যসেন হলের ১ হাজার ২৭৪ জন শিক্ষার্থী ভোট দিয়েছেন। তিনি সাংবাদিকদের আরও বলেন, সবচেয়ে বেশি ভোট পড়েছে জসিমউদ্দীন হলে। অনাবাসিক শিক্ষার্থীরাও স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিয়েছেন। এই কেন্দ্রে ব্রেইল পদ্ধতিতেও ভোট দিয়েছেন অনেক শিক্ষার্থী।
অন্যদিকে নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবন কেন্দ্রে বেলা আড়াইটা পর্যন্ত ৪ হাজার ভোট পড়েছে। যা এই কেন্দ্রে মোট ভোটারের ৮২ শতাংশ বলে জানান কেন্দ্রটিতে দায়িত্বরত রিটার্নিং কর্মকর্তারা।
সিনেট ভবনে মোট তিনটি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ চলছে। এর মধ্যে রয়েছে ডাইনিং রুম, সেমিনার রুম এবং অ্যালামনাই ফ্লোর কেন্দ্র। তিনটি কেন্দ্রে মোট ভোটার সংখ্যা ৪ হাজার ৮৩৫টি।
ডাইনিং রুম কেন্দ্রে বিজয় একাত্তর হলের ২ হাজার ৪৩ শিক্ষার্থী ভোট দেওয়ার কথা। বেলা আড়াইটা পর্যন্ত এ কেন্দ্রে ১ হাজার ৮০০ ভোট পড়েছে বলে জানান রিটার্নিং কর্মকর্তা তৌহিদুল ইসলাম।
সেমিনার রুম হলে মুহসীন হলের ১ হাজার ৪০৯ জন শিক্ষার্থীর ভোট দেওয়ার কথা। বেলা আড়াইটা পর্যন্ত এ কেন্দ্রে ১ হাজার ১০০ ভোট পড়েছে বলে জানান রিটার্নিং কর্মকর্তা শামীম আহমেদ।
অ্যালামনাই ফ্লোর কেন্দ্রে স্যার এ এফ রহমান হলের ১ হাজার ৩৮৩ শিক্ষার্থী ভোট দেওয়ার কথা। এই কেন্দ্রে বেলা আড়াইটা পর্যন্ত ১ হাজার ১০০ ভোট পড়েছে বলে জানান রিটার্নিং কর্মকর্তা মিজানুর রহমান।
বেলা আড়াইটার দিকে সিনেট ভবনের তিনটি কেন্দ্র পরিদর্শনে আসেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহউপাচার্য (প্রশাসন) সায়মা হক বিদিশা। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা আনন্দঘন পরিবেশে ভোট দিতে পারছে। এখনো সময় আছে। ভোটারও আসছে। আশা করছি, উল্লেখযোগ্য ভোট পড়বে।’
ডাকসু নির্বাচনে স্বচ্ছতার ঘাটতি নেই বলে দাবি করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান।
বেলা তিনটার দিকে সিনেট ভবনের তিনটি কেন্দ্র পরিদর্শনে গিয়ে উপাচার্য সাংবাদিকদের বলেন, ইতিমধ্যে বিভিন্ন কেন্দ্রে
ডাকসু নির্বাচনে ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) ভোট কেন্দ্রে আজ মঙ্গলবার বেলা দেড়টা পর্যন্ত ৩ হাজার ৩০০ জন শিক্ষার্থী ভোট দিয়েছেন। যা মোট ভোটারের প্রায় ৫৮ শতাংশ। ওই কেন্দ্রের রিটার্নিং কর্মকর্তা নাসরিন সুলতানা প্রথম আলোকে এ তথ্য জানান।
নাসরিন সুলতানা বলেন, টিএসসির ক্যাফেটেরিয়ার কক্ষে ১২টি বুথে ২ হাজার ১০০ জন এবং ইনডোর গেমস রুমের সাতটি বুথে ১ হাজার ২০০ জন শিক্ষার্থী ভোট দিয়েছেন।
টিএসসি কেন্দ্রে রোকেয়া হলের শিক্ষার্থীরা ভোট দিচ্ছেন। এই কেন্দ্রের ভোটার সংখ্যা ৫ হাজার ৬৬৫।
এই কেন্দ্রের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে নাসরিন সুলতানা প্রথম আলোকে বলেন, ‘মেয়েরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিতে আসছে। এ কেন্দ্রে দেড়টা পর্যন্ত ৫৮ শতাংশ মেয়ে ভোট দিয়েছে। সবাই নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারছে।’
এদিকে শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্রের মোট ভোটার সংখ্যা ৪ হাজার ৮৬১। এর মধ্যে বেলা আড়াইটা পর্যন্ত ভোট পড়েছে প্রায় ৭৮ শতাংশ বা ৩ হাজার ৭৮৬টি।
এই কেন্দ্রে জগন্নাথ হল, জহুরুল হক হল এবং এস এম হলের শিক্ষার্থীরা ভোট দিচ্ছেন।
বেলা আড়াইটা পর্যন্ত এই কেন্দ্রে জগন্নাথ হলের ২ হাজার ২২৯ ভোটের মধ্যে ১ হাজার ৭২৬ (৭৭ শতাংশ), জহুরুল হক হলের ১ হাজার ৯৬৩ ভোটের মধ্যে ১ হাজার ৫৭৫ (৮০ শতাংশ) ও এস এম হলের ৬৬৯ ভোটের মধ্যে ৪৮৫ ভোট (৭২ শতাংশ) পড়েছে। সংশ্লিষ্ট হলগুলোর প্রাধ্যক্ষদের কাছ থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
জগন্নাথ হলের প্রাধ্যক্ষ দেবাশীষ পাল, এস এম হলের প্রাধ্যক্ষ আব্দুল্লাহ-আল-মামুন ও শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের প্রাধ্যক্ষ ফারুক শাহ আলাদা করে স্ব স্ব হলের ভোট পড়ার এ তথ্য জানান।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের ব্যালটে প্রগতিপক্ষের যে শক্তিগুলো আছে, সেই শক্তিগুলোর জয় হবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রতিরোধ পর্ষদ প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) প্রার্থী মেঘমল্লার বসু।
আজ মঙ্গলবার বেলা পৌনে ১২টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষাকেন্দ্রের ইনডোর গেমস রুমের বাইরে মেঘমল্লার বসু সাংবাদিকদের কাছে এ কথা বলেন। এর আগে তিনি ভোট দিতে বেলা ১১টার দিকে এই ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করেন।
মেঘমল্লার বসু বলেন, ‘আমরা আসলে রেজাল্টের ব্যাপারে ইতিবাচক। আমরা মনে করি, ব্যালটে প্রগতিপক্ষের যে শক্তিগুলো, সেই শক্তিগুলোর জয় হবে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচনে (ডাকসু) কার্জন হলের ভেতরে সংবাদ সংগ্রহ করার সময় তরিকুল ইসলাম শিবলী (৪০) নামে এক সাংবাদিকের মৃত্যু হয়েছে। জানা গেছে তিনি চ্যানেল এস টেলিভিশনের সিটি রিপোর্টার হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
আজ মঙ্গলবার বেলা দেড়টার দিকে অচেতন অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. ফারুক জানান,চিকিৎসক জানিয়েছেন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত এক পোলিং অফিসারকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
জনসংযোগ দপ্তরের উপপরিচালক ফররুখ মাহমুদের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন চলাকালে কার্জন হলের দ্বিতীয় তলায় অমর একুশে হলের ভোটকেন্দ্রে একজন শিক্ষার্থীকে অনিচ্ছাকৃতভাবে দুটি ব্যালট পেপার দেওয়ার ঘটনায় সংশ্লিষ্ট পোলিং অফিসার জিয়াউর রহমানকে তাৎক্ষণিকভাবে নির্বাচনী দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বিষয়টি যে অনিচ্ছাকৃত ভুল, তা অভিযোগকারী ভোটারও বুঝতে পারেন। তারপরও ঘটনা জানার সঙ্গে সঙ্গে প্রশাসন বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে নিষ্পত্তি করে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ রাখতে বদ্ধপরিকর বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
৭০ শতাংশের বেশি ভোট সংগ্রহ হয়েছে। চারটার পরও যেসব শিক্ষার্থী লাইনে থাকবেন, তাঁদের ভোট নেওয়া হবে।
উপাচার্য বলেন, ‘কার্জন হলে ভুলক্রমে একটি ছোট সমস্যা হয়েছে। তার জন্য আমরা সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিয়েছি। তবুও এই ঘটনার আমরা পুনরায় তদন্ত করে কেউ জড়িত থাকলে ব্যবস্থা নেব।’
উল্লেখ্য, কার্জন হলে এক ভোটারকে দুটি ব্যালট দেওয়া হয়েছিল। পরে পোলিং অফিসারকে প্রত্যাহার করা হয়।
টিএসসির কেন্দ্রে ‘ক্রস চিহ্ন’ দেওয়া একটি ব্যালট একজন ভোটারকে দেওয়ার অভিযোগ সম্পর্কে উপাচার্য বলেন, ‘এখানেও আমরা সঙ্গে সঙ্গে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছি।
ডাকসু নির্বাচন এখন দেশের দাবিতে পরিণত হয়েছে উল্লেখ করে উপাচার্য বলেন, ‘আমরা আশা করছি, যিনি জিতবেন এবং যিনি বিজেতা হবেন, সবাই ফলাফল মেনে নেবেন। তাঁরা স্বীকার করবেন যে, কোথাও কোনো স্বচ্ছতার ঘাটতি নেই।’
এর আগে বেলা আড়াইটার দিকে সিনেট ভবনের তিনটি কেন্দ্র পরিদর্শনে যান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহউপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সায়মা হক বিদিশা। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা আনন্দঘন পরিবেশে ভোট দিতে পারছে। এখনো সময় আছে। ভোটারও আসছে। আশা করছি উল্লেখযোগ্য ভোট পড়বে।’
ডাকসু নির্বাচনে স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য প্যানেলের সহ সভাপতি (ভিপি) প্রার্থী উমামা ফাতেমা বলেছেন, তিনি জয়ের ব্যাপারে যথেষ্ট আশাবাদী। সেই সঙ্গে উমামা বলেন, তাঁর চাওয়া, ‘ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার ইলেকশন’ হোক।
আজ মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগ কেন্দ্রে ভোট দেন উমামা। বেলা ১১টা ২০ মিনিটে ভোট কেন্দ্র থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বেশ সাড়া পাচ্ছেন জানিয়ে উমামা ফাতেমা বলেন, ‘আচরণবিধি লঙ্ঘনের যেসব অভিযোগ উঠেছে সেগুলো যেন নির্বাচন কমিশন আমলে নেয়। আমরা চাচ্ছি, ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার ইলেকশন হোক।’
ভোটার উপস্থিতি নিয়ে উমামা ফাতেমা বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি ভালো। আমরা আশা করছি, ৩০ হাজারের বেশি ভোট কাস্টিং হবে।’
পোলিং এজেন্টদের পরিবর্তন করা হয়েছে বলে অভিযোগ জানান উমামা ফাতেমা। তিনি বলেন, ‘যেসব এজেন্টদের আমরা মেয়েদের হলে দিয়েছি, তাঁদের ছেলেদের হলে দেওয়া হয়েছে। যাকে ছেলেদের হলে দিয়েছি তাঁকে মেয়েদের হলে দেওয়া হয়েছে। প্রশাসন সকালবেলা সমাধান করবে বললেও করেনি। আমরা সকালে এসে দেখি বিশৃঙ্খল অবস্থা। আমাদের সশরীরে এসে সমাধান করতে হয়েছে।’
এ বিষয়ে উমামা ফাতেমা আরও বলেন, যেসব পোলিং এজেন্টকে বাদ দেওয়া হয়েছে, তাঁরা কী কারণে বাদ পড়লেন, সেটা আমাদের অবশ্যই জানানো উচিত। কারণ পোলিং এজেন্টরা ভোট গণনার সময় উপস্থিত থাকবেন। ওই সময় কোনো পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ উঠলে আমরা সেটি জানাব।
ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা কম, শিক্ষার্থীদের দীর্ঘ সময় ধরে সারিতে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে জানিয়ে উমামা ফাতেমা বলেন, ভোট দিতে আসা শিক্ষার্থীরা মুঠোফোন ও ব্যাগ রাখার জায়গা পাচ্ছেন না। এ ছাড়া তাদের জন্য স্যালাইন আর পানি রাখার কথা ছিল। সেই ব্যবস্থা করেনি প্রশাসন।