জি এম ফিরোজ উদ্দিন,
মণিরামপুর :
বুধবার ষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে শুরু হবে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। ১৩ অক্টোবর দশমীর মধ্য দিয়ে শেষ হবে এ বছরের দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা। যশোরের মণিরামপুর উপজেলায় এ বছর ৯০টি পূজা মন্ডপে এবার দূর্গা পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তবে নানাবিধ সমস্যা ও পানি বন্দির কারণে গত বারের চেয়ে এবার ১১টি মন্ডপে দূর্গাপূজা হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি তুলশী বসু।
জানা গেছে, উপজেলা পূর্ব এলাকায় ভয়াবহ জলাবদ্ধতার কারণে মন্ডপে পানি বন্দি থাকার পরও এবার মণিরামপুর উপজেলার ১৭টি ইউনিয়নে ও পৌর সভায় ৯০টি মন্ডপে দূর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তার মধ্যে রোহিতা ইউনিয়নে ৬টি, কাশিমনগরে ৫টি, ভোজগাতি ১টি, ঢাকুরিয়া ৯টি, হরিদাসকাটি ৫টি, মণিরামপুর সদরে ২টি, খেদাপাড়ায় ৫টি, হরিহরনগরে ৫টি, ঝাঁপায় ৭টি, মশি^মনগরে ৭টি, চালুয়াহাটি ৫টি, শ্যামকুড়ে ৬টি, খানপুর ৫টি, দুর্বাডাঙ্গায় ৬টি, কুলটিয়ায় ৩টি, নেহালপুর ৪টি, মনোহরপুরে ২টি ও পৌর সভায় ৯টি পূজা মন্ডপে দূর্গাপুজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
সরেজমিন, উপজেলার বেশ কয়েকটি মন্দির এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে প্রতিমা তৈরির কাজ। শেষ হয়েছে দেবী দুর্গার গায়ে রং-তুলির আঁচড়ের কাজ। পাশাপাশি মন্ডপের আলোকসজ্জার সর্বশেষ পরিস্থিাত নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন ডেকোরেটরের লোকজন।
উপজেলার কুলটিয়া মশিয়াহাটিসহ চিনাটোলা বাজার, শ্যামনগর, নেহালপুর এলাকার একাধিক মন্দিরে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রতিমা তৈরির রঙ-তুলি ও সাজসজ্জার প্রস্তুতি। শিল্পী ও কারিগরদের নিপুণ হাতের তৈরি প্রতিমায় চলছে রংসহ অলঙ্কার পরানোর কাজ।
প্রতিমা তৈরির কারিগর শ্রী ননী গোপাল জানান, দুর্গাপূজা এলে তাদের কাজ বেড়ে যায়, প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও তাদের কাজ বেড়েছে। রাত-দিন পরিশ্রম করে প্রতিমা তৈরি করে দর্শনার্থীদের সামনে সঠিক সময়ে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করার মাধ্যমে তাদের সার্থকতা। তবে প্রতিমা তৈরির উপকরণের দাম বেড়ে যাওয়ার আগের মতো তাদের লাভ হয় না বলে জানান তারা।
উপজেলার পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি তুলশী দাস ও সাধারন সম্পাদক তরুন কুমার শীল বলেন, উপজেলায় এবার ৯০টি মন্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে। গতবার ১০১টি মন্ডপে পূজা হলেও এবার ১১টি মন্ডপে দূর্গাপূজা হচ্ছে না। তবে তারা ক্ষোপ প্রকাশ করে আরও বলেন, শুনেছি প্রতি মন্ডপের জন্য সরকারিভাবে ৫’শ কেজি চাল বরাদ্ধ দেয়া হয়েছে। তাছাড়া মন্ডপ গুলোতে কি ধরনের প্রশাসনিক নিরাপত্তা দেয়া হবে, সে ব্যাপারে আমাদের কেউ অবগত করেনি। তবে উপজেলার বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল বিভিন্ন এলাকায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উপর সভা-সমাবেশের মাধ্যমে আমাদের দূর্গা পূজোর নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করে চলেছেন।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মেহেদী মাসুদ বলেন, পূজায় সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রতিটি মন্ডপে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের পাশাপাশি আনসার, কমিউনিটি পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবক নিয়োজিত থাকবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিশাত তামান্না বলেন, ইতিমধ্যে শারদীয় দূর্গাউৎসবকে নির্বিঘœ করতে প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের সাথে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। তাছাড়া সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে থাকবে সেনা, পুলিশ, র্যাবসহ সাদা পোশাকে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।